Advertisement
Advertisement
Kolkata Police

পার্ক স্ট্রিট, নিউ মার্কেটে বানজারা ‘নাবালক গ্যাং’য়ের নজরে বিদেশি পর্যটকরা, অতিরিক্ত নজরদারি কলকাতা পুলিশের

নতুন স্ট্র‌্যাটেজি তৈরি করছে পুলিশও।

Foreign tourists under the watch of Banjara minor gang, Kolkata Police on extra vigil
Published by: Suhrid Das
  • Posted:July 19, 2025 2:13 pm
  • Updated:July 19, 2025 2:14 pm  

অর্ণব আইচ: ভিক্ষা চাওয়ার নামে প্রথমে একসঙ্গে ঘিরে ধরা। তারপর পায়ে পড়ে যাওয়া। কখনও বা ধাক্কা লেগে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার ভান করা। সব কিছুই আসলে কৌশল। এই পদ্ধতিতে কোনওমতে ‘শিকার’কে বিভ্রান্ত করে দেওয়া। তারপর সুযোগ বুঝে পথচারীর পকেট থেকে টাকা, মোবাইল, কখনও বা মানিব‌্যাগ হাতিয়ে নেওয়া। এভাবে রাস্তার উপর ‘শিকার’ খুঁজে লুটপাট হয়েছে আগেও। কিন্তু এবার তাদের ‘শিকার’ খোঁজার ধরন দেখে নতুন স্ট্র‌্যাটেজি তৈরি করছে পুলিশও। কারণ, এবার পড়েছে বিদেশি পর্যটকদের নজর পড়েছে রাজ্যের বানজারা গ‌্যাংয়ের। শহরের আশপাশের জেলার বিভিন্ন জায়গায় ডেরা বেঁধে থাকা বানজারাদের ‘নাবালক গ‌্যাং’কে দিয়েই বড়রা এই অপরাধ করাচ্ছে বলে অভিযোগ পুলিশের। বড়দের চোখের ইশারায় এই কিশোর-কিশোরীরা বিদেশিদের ‘টার্গেট’ করার চেষ্টা করছে বলে খবর এসেছে পুলিশের কাছে। বিদেশিদের কাছ থেকে বিদেশি মুদ্রা ও মূল‌্যবান মোবাইল হাতিয়ে নেওয়ার ছক কষছে তারা।

Advertisement

সম্প্রতি পার্ক স্ট্রিটে এক বিদেশি পর্যটকের কাছ থেকে এই ‘মোডাস অপারেন্ডি’তে ইউরো, পাসপোর্ট হাতিয়ে নেয় বানজারাদের ‘নাবালক গ‌্যাং।’ এবার রাজ্যের অন‌্য জেলা বা শহরগুলিতেও এভাবে তারা দৌরাত্ম‌্য শুরু করেছে কিনা, সেদিকেও নজর রয়েছে পুলিশের। পার্ক স্ট্রিট থানার পুলিশ আধিকারিকরা মধ‌্য কলকাতার জাকারিয়া স্ট্রিটে তল্লাশি চালিয়ে এক ব‌্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেন। ফরাসি পর্যটকের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া আড়াই হাজার ইউরো ও পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়। এবার এলাকার সিসিটিভির ফুটেজ দেখে ওই বানজারাদের সন্ধান চলছে। পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, এই গ‌্যাংগুলির একটি অংশ হুগলি জেলার বিভিন্ন জায়গায় ডেরা বাঁধে। এছাড়াও দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও উত্তর ২৪ পরগনার কয়েকটি জায়গায়ও রয়েছে তাদের আস্তানা। সাধারণত খুব সকাল বা বেশি রাতের ট্রেনেই যাতায়াত করে তারা।

সাধারণভাবে পার্ক স্ট্রিট, শেক্সপিয়র সরণি এলাকার পথচারীদেরই টার্গেট করে তারা। তাদের দলে থাকে সাত থেকে ১৫ বছর বয়সের কিশোর ও কিশোরী। তাদের হাতে থাকে থালা। সঙ্গে থাকে দুই থেকে তিনজন যুবক বা যুবতী। এই যুবক বা যুবতীরাই চোখের ইশারায় জানিয়ে দেয়, কোন পথচারীকে টার্গেট করতে হবে। আগেই ওই কিশোর-কিশোরীদের ডেরায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী তারা ঘিরে ফেলে সেই পথচারীকে। ভিক্ষা চাওয়ার নাম করে তারা হাত, ব‌্যাগ বা কাপড় ধরে টানতে থাকে। পথচারী এড়িয়ে চলার চেষ্টা করলে এক বা দু’জন তাঁর পায়ের উপর পড়ে যায়। তিনি তাদের সরাতে ব‌্যস্ত হয়ে পড়লে বাকিরা পথচারীর পকেট বা ব‌্যাগ থেকে টাকা, মোবাইল হাতানোর চেষ্টা করে। পথচারী চেঁচামেচি শুরু করলে তাদেরই দলের এক কিশোরী ইচ্ছা করে পথচারীকে ধাক্কা দিয়ে নিজেই ফুটপাথের উপর পড়ে যায়। এরপর সে এমন ভান করে যে, তার মাথায় লেগেছে। অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে সে। এতে পথচারী হতবাক হয়ে গেলে সেই ফাঁকেও দলের অন‌্যরা তাঁর জিনিস হাতানোর চেষ্টা করে। আবার অনেক সময় ওই বানজারা যুবক-যুবতীরা এসেও পথচারীর সঙ্গে গোলমাল করে ওই ‘অজ্ঞান’ হয়ে যাওয়া কিশোরীর জন‌্য টাকা চায়। পুলিশের মতে, এবার তারা বিদেশিদের টার্গেট করার চেষ্টা করছে। এই অপরাধ বন্ধ করতে পার্ক স্ট্রিট, শেক্সপিয়র সরণি, নিউ মার্কেটের রাস্তাগুলিতে অতিরিক্ত নজরদারি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement