কংগ্রেস নেতৃত্বের উপস্থিতিতে প্রসেনজিতের দলবদল। নিজস্ব চিত্র
ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: বিহার নিছক বাহানা। এসআইআর, অনুপ্রবেশের মতো ইস্যুকে সামনে রেখে বাংলাকে বদনাম করে বিজেপিই আসলে এ রাজ্যে ‘অনুপ্রবেশ’ করতে চাইছে। ওরা চাইছে দেশ বেচতে, কংগ্রেস চাইছে দেশ বাঁচাতে। দুর্নীতির বদলে ‘সততা’-কে ইস্যু করে তাই লড়াই হবে। রাহুল গান্ধী যে লড়াইয়ের নেতা। সোমবার কলকাতায় এসে এই সুর তুলেই ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে চাঙ্গা করে গেলেন দলের জাতীয় যুব নেতা কানহাইয়া কুমার।
মানিকতলার রামমোহন হলে এদিন সেই মঞ্চেই যোগদান করলেন অর্থনীতির গবেষক ও প্রাক্তন বাম নেতা প্রসেনজিৎ বসু। রাজ্যসভার কংগ্রেস সাংসদ সৈয়দ নাসের হুসেন, এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক ও বাংলার পর্যবেক্ষক গুলাম আহমেদ মীরের উপস্থিতিতে প্রসেনজিতের হাতে দলের সদস্যপদের ফর্ম তুলে দেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। প্রসেনজিতের আগে প্রাক্তন বাম রাজনীতি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন কানহাইয়া, তারপর এ রাজ্যে আলি ইমরান রামজ (ভিক্টর)। তার পর এদিন প্রসেনজিৎ। দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে বাম ছাত্র রাজনীতি করার সময়েই কানহাইয়ার সঙ্গে প্রসেনজিতের আলাপ। পরে এনআরসি আন্দোলন যখন কংগ্রেস শুরু করেছিল, সে সময় কানহাইয়া, ভিক্টর, প্রসেনজিৎ একসঙ্গে কাজ করেছেন। সেই সূত্রে এদিন একটি বৃত্ত সম্পূর্ণ হল বলে মনে করছে প্রদেশ কংগ্রেস।
বিজেপিকে তোপ দাগার পাশাপাশি এদিন গোলাম মীর, প্রসেনজিৎরা নিশানা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। তীব্র আক্রমণ করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। রাহুল গান্ধী যে বাংলায় বিশেষ নজর দিয়েছেন, বিজেপিকে রুখতে ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস এ রাজ্যে সমাজের বুদ্ধিজীবীমহলকে আহ্বান জানিয়ে বাড়তি গুরুত্ব দিতে চাইছে সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন মীর। সেই সুবাদেই কানহাইয়া, প্রসেনজিৎদের মতো একটি অংশকে বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে, তারও ইঙ্গিত মিলেছে। এমনকী, দুর্নীতিমুক্ত সরকার গঠনের দাবি করে মীর এদিনের সভায় শুভঙ্কর সরকারকে কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী মুখ করার পক্ষেও সওয়াল করেছেন। সেই সূত্রেই প্রসেনজিৎকে অর্থমন্ত্রী করা যেতে পারে এমন দাবি করে একপ্রকার ‘দুর্নীতিমুক্ত ক্যাবিনেট’ গঠনের কথাও বলেছেন। ছিলেন আরেক সিনিয়র প্রদেশ নেতা অমিতাভ চক্রবর্তী, প্রাক্তন বিধায়ক অসিত মিত্ররা। মধ্য কলকাতা জেলা কংগ্রেস সভাপতি মানস সরকারের উদ্যোগে রামমোহন হলের বাইরেই এদিন বিজেপির বিরুদ্ধে ‘ভোট চোর গদি ছোড়’ স্লোগানকে সামনে রেখে গণস্বাক্ষর অভিযান শুরু হয়েছে। ছিলেন পার্থ ভৌমিক, রাসু দত্ত, সুমন রায়চৌধুরী, অশোক ভট্টাচার্য-সহ অসংখ্য দলীয় কর্মী। প্রসেনজিতের সঙ্গে এদিন তাঁর সহযোগী হিসাবে অনেকেই কংগ্রেসে যোগ দেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.