ফরাসি শিল্পী থমাস হেনরিয়ট সাজাচ্ছেন ‘অথঃ ঘাট কথা।’
স্টাফ রিপোর্টার: জলরঙের ক্যানভাস হোক বা ফুটবল মাঠ। ফরাসিদের শিল্পের জাদুর সাক্ষী থেকেছে গোটা বিশ্ব। দুর্গাপুজোতেও এবার এই শহরেই চাক্ষুষ করা যাবে ফরাসি হাতের কাজ! ৪৯০০ মাইল দূরের ফরাসি শিল্পীর সৃজনশীলতা উত্তর কলকাতার হাতিবাগানে।
হাতিবাগান সর্বজনীনের কর্মকর্তা শাশ্বত বসুর কথায়, ”দেশের উৎসবে সৃজনশীলতা বলতেই সবার আগে নাম আসে কলকাতার। শিল্পসংস্কৃতির সর্বোচ্চ ছোঁয়া দেখা যায় শহর কলকাতার দুর্গাপুজোয়। প্যারিস আর্ট ফেস্টিভ্যালে যে শিল্পীর ছবি প্রদর্শিত হয় তিনিই এবার হাতিবাগান সর্বজনীনে।”
এবার পুজোয় বাংলায় একমাত্র ফরাসি শিল্পী থমাস হেনরিয়ট সাজাচ্ছেন ‘অথঃ ঘাট কথা’। ৯১তম বছরে উত্তরের এই পুজোর থিম এটাই। যেখানে থমাসের হাতে আঁকা একটি ছোট্ট ক্যানভাসের ছবি বদলে যাচ্ছে ২২ ফুট বাই ৪ ফুটের পেল্লায় এক ফ্রেমে। থমাস জানিয়েছেন, হাতে আঁকা সেই ছবি কাপড়ের কাজে রূপান্তরিত করা হচ্ছে। সেজন্য ব্যবহৃত হচ্ছে বিশ হাজার সোনালি সুতো। সুতোর কাজেই সেখানে ফুটে উঠবে ঘাটের অনুষঙ্গ।
উত্থিত হবে শহর কলকাতার ঘাটের আখ্যান। ‘সোপানে ঘটনা যদি অঙ্কিত হইত তবে কতদিনকার কত কথা আমার সোপানে সোপানে পাঠ করিতে পারিতে।’ ‘ঘাটের কথা’য় লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সেই কথাই শোনাবে হাতিবাগান সর্বজনীনের মণ্ডপ।
হাতিবাগানে থমাসের সহ থিম মেকার বঙ্গসন্তান তাপস দত্তর কথায়, ‘‘নদীর ঘাট তো নিছক কোনও স্থাপত্য নয়, তার মধ্যে লুকিয়ে কয়েকশো বছরের পুরনো গল্প। হাতিবাগানের এবারের পুজোয় এলে অনুভূতি হবে তেমনটাই।’’
তাপসের কথায়, ‘‘এই থিম সাজাতে বহুদিন ধরে গঙ্গার ঘাটগুলো ঘুরে দেখেছি। সাহায্য নিয়েছি একটি বইয়ের। কলকাতা পুরসভা প্রকাশিত সে বইয়ের নাম ‘ঘাটস অফ গ্রেটার কলকাতা’।’’ প্রিন্সেপ ঘাট, বাবুঘাট, কাশী মিত্র ঘাট, রানি রাসমণির ঘাট… কলকাতা শহর গড়ে উঠেছিল গঙ্গানদীকে কেন্দ্র করে। বাণিজ্যের প্রয়োজনে নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল একাধিক ঘাটও। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ঘাটগুলি আজও টিকে রয়েছে। প্রতিটি ঘাটের রয়েছে নিজস্ব ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি। এক মুহূর্তে তা উড়িয়ে নিয়ে যায় তিনশো বছর আগে। তেমনই আবহ তৈরি করছে হাতিবাগান সর্বজনীন।
মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে হাজির ছিলেন পুজোর চেয়ারম্যান তথা কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ এবং প্রিয়দর্শিনী ঘোষ। অতীন ঘোষ জানিয়েছেন, ‘‘কলকাতা পুরসভা ঘাটের উন্নয়ন করতে বদ্ধপরিকর। বন্দর কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা করছে না। কাশী মিত্র ঘাটে দুটো ইলেকট্রিক চুল্লি করার জন্য সামান্য জমি চাওয়া হচ্ছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ সে জায়গা দিচ্ছে না। গঙ্গার ঘাটের পাড় ধরে যাতে প্রাতঃভ্রমণ করা যায় তার জন্য রাস্তা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। সেটাও বন্দর কর্তৃপক্ষর অসহযোগিতার কারণে পুরোটা ব্যবহার করা যাচ্ছে না।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.