অর্ণব দাস: সিবিআইয়ের কাজে মারাত্মক অখুশি ও ক্ষোভ থাকলেও কেন কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির সঙ্গে একই মঞ্চে যাচ্ছেন? কেনই বা বিজেপি ডাকলে তাদের কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছেন? পদ্ম-সঙ্গ ও সখ্য নিয়ে এমন প্রশ্নে কোনও উত্তরই দিতে পারলেন না আর জি করের নির্যাতিতার বাবা-মা। বলা ভালো, কার্যত নিশ্চুপ তাঁরা। তবে মঙ্গলবার অভয়ার মা-বাবা এটাও ঘোষণা করেন যে পরবর্তীতে সিবিআই অফিস অর্থাৎ সিজিও কমপ্লেক্স অভিযান করবেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, বুধবার দিল্লি সফরে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে অভয়ার বাবা-মায়ের।
লোয়ার কোর্ট, হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে বারবার তাঁদের আর্জি ও যুক্তি মেনে নেয়নি সিবিআই। বস্তুত আইনজীবীরাও মানতে পারেননি নির্যাতিতার মা-বাবার বহু ‘যুক্তি’। তার পরও অবশ্য রাজনীতির ছায়ায় জড়িয়ে পড়েছেন। সিবিআইকে কেন্দ্রের শাসকদলের ‘তোতাপাখি’ আখ্যা পেতে হয়েছে জেনেও বিজেপির গা ঘেঁষাঘেষি থেকে বের হতে পারেননি তাঁরা। অথচ সিবিআইয়ের বিরোধিতাও করেছেন। এই সব প্রশ্নের জবাবেই এদিন নির্যাতিতার বাবা জানালেন, ‘‘শুধু বিজেপি কেন, সিপিএম, কংগ্রেস, আরএসপি, সিপিআই, ফরোয়ার্ড ব্লক, সবাই আমাদের পাশে আছে জানিয়েছে। যোগাযোগ রাখছে। বুধবার আমরা সিবিআই ডিরেক্টরের কাছে যাচ্ছি। আশার আলো না দেখলে সিবিআই অফিস অভিযান করব। সবাইকে ডেকে এক কোটি লোক নিয়ে যাব। সিবিআইয়ের উপর উৎপাত হবেই। পরবর্তী অভিযান সিজিও কমপ্লেক্স।’’
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কর্তা-সহ সিবিআইয়ের সঙ্গে আইনজীবীদের আঁতাঁতেরও বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন তিনি। ফোনে তিনি মারাত্মক অভিযোগ তুলে বলেছেন, ‘‘নামজাদা আইনজীবী হলেও বিক্রি হয়ে গিয়েছিল বৃন্দা গ্রোভার অ্যান্ড কোম্পানি। কোনও কাজই করেনি, লোয়ার কোর্টে এসে ওরা শুধু ঘুমাত। সিবিআই এই আইনজীবীদের সেটিং করে নিয়েছিল, হাতে হাত মিলিয়ে কাজ চালিয়েছিল, যাতে বিরোধিতা না করতে পারে। সীমা পাহুজার নেতৃত্বে সিবিআই কোনও তদন্ত করেনি, বাড়িতে এসেও উনি বলেছেন সঞ্জয় একমাত্র অপরাধী। এই সীমা পাহুজা হাতরাসের তদন্ত করে গোটা পরিবারকে নষ্ট করে দিয়েছে।’’ দুঁদে আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ কেন আনছেন? তাঁদের দক্ষতা অনেক জেনেই তো দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তা হলে কি পছন্দমত ‘রায়’ না পেলেই উল্টোসুর গাইতে হবে? উত্তর স্পষ্ট নেই অভয়ার মা-বাবার কাছে। আর যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁদের বক্তব্যও জানানো দরকার। সরাসরি কেন তাঁদের জানানো হয়নি? বরং আক্ষেপের সুরে নির্যাতিতার বাবা শুধু মনে করিয়ে দেন, ‘‘বিষয়টি জানাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আমরা বহুবার মেলও করেছি, কিন্তু উনিও সাক্ষাৎ করেননি।’’ সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘সব জায়গায় টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে সিবিআই।’’ তিনি জানালেন, বিচার না পাওয়ার জন্য রাজ্য সরকার যে চেষ্টা চালাচ্ছে, এর বিরুদ্ধেও আন্দোলন চালাতে হবে। নবান্ন অভিযানে এসইউসিআই থাকবে না বলেও এদিন জানান তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.