স্টাফ রিপোর্টার: প্রাথমিকে নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় এবার সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে টেনে বেনজির আক্রমণ করলেন আরেক সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কল্যাণ তৃণমূল সাংসদ হলেও বর্ষীয়ান আইনজীবী। তাঁর আক্রমণের আসল লক্ষ্য বিচারপতি থাকাকালীন অভিজিৎ। সেই প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎকে তোপ দেগে আইনজীবী কল্যাণ বলেন, “মধ্য-মেধার কোনও বিচারপতি আইনের খুঁটিনাটি বুঝতে পারেন না। তাঁরা বিচারপতির চেয়ারের যোগ্যও নন।”
এক বছর আগে প্রাথমিকে ৩২ হাজার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দায়ের হওয়া মামলার এখন শুনানি চলছে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে। ৩২ হাজার চাকরিহারা শিক্ষকের একাংশের হয়ে সওয়াল করছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার সেই মামলারই শুনানিতেই অভিজিৎকে আক্রমণ শানাতে শোনা যায় কল্যাণকে। তাঁর দাবি, আইনের কাছে অজানা প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছেন তৎকালীন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তৎকালীন মামলার শুনানিপর্বে তিনি কিছু ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন। তাহলে আমরা পাল্টা জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারব না কেন! তাঁর যুক্তি, “তৎকালীন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বার বার বলেছেন, যে আইনের খুঁটিনাটির মধ্যে তিনি ঢুকবেন না। এ দেশের মহান বিচারপতিরা সবসময় আইনের খুঁটিনাটির উপর জোর দিয়ে এসেছেন এবং তাঁরা এটা ভালো বোঝেন। মধ্য-মেধার কোনও বিচারপতির পক্ষে আইনের খুঁটিনাটি বোঝা সম্ভব না। এবং এই ধরনের ব্যক্তিরা বিচারপতির চেয়ারের যোগ্যও নন।”
প্রশ্ন তুলে তাঁর দাবি, “আমরা মামলার প্রস্তুতি নিয়ে থাকি, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় কেন পড়াশোনা করেননি, তিনি তো আইপ্যাড পান।” তবে এদিন চাকরি বাতিলের নির্দেশের জন্য পর্ষদের ঘাড়েই দোষ চাপিয়েছেন ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের একাংশ। ওই শিক্ষকদের আইনজীবী কল্যাণ বলেন, “সিঙ্গল বেঞ্চে দায়ের হওয়া নিয়োগের মামলা গ্রহণযোগ্যই নয়। কেন এ কথা সিঙ্গল বেঞ্চের সামনে বলেনি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। রায়ের ফলে যারা প্রভাবিত হবে তাদের ছাড়া মামলা হয় না, কেন একথা সিঙ্গল বেঞ্চের সামনে বলেনি পর্ষদ।” তাঁর বক্তব্য, “আমাদের কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ আছে যে প্রভাবিত ব্যক্তিদের যুক্ত না করে মামলা হয় না। আমরা তো সওয়াল-জবাবের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করেছি, কিন্তু তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কেন করেননি। ২০১৬ সালের পর থেকে তো একাধিক বিচারপতি শিক্ষা সংক্রান্ত মামলার বিচার করতেন। মামলাকারীরা যেখানে সুবিধা হবে সেখানে যাবেন বলে বলে সওয়াল করেন তিনি। কিন্তু বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী বলেন, “এ সব কথা বলবেন না। কোনও বিচারপতি যদি খুঁটিনাটি বুঝতে না পারেন তা হলে আপনি তাঁকে দোষ দিতে পারেন না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.