ফাইল ছবি
স্টাফ রিপোর্টার: “লালা বাংলা ছেড়ে পালা”,-২০০৩ সালে কলকাতায় কাজের দিনে সিপিএময়ের মিছিল বন্ধ করার প্রস্তাব দিয়ে এমনই স্লোগান শুনতে হয়েছিল তৎকালীন কলকাতা হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি অমিতাভ লালাকে। পরে অবশ্য আদালতের কাছে ক্ষমাও চাইতে হয়েছিল বাম নেতা বিমান বসুকে। সোমবার এসএলএসটি কর্মশিক্ষা-শারিরশিক্ষায় অতিরিক্ত শূন্যপদে নিয়োগ সংক্রান্ত আদালত অবমাননা মামলায় সেই প্রসঙ্গ তুলে জোর সওয়াল করেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের তরফে সাংসদ তথা বর্ষীয়ান আইনজীবী কল্যাণ বন্দোপাধ্যায়।
আদালতে তাঁর দাবি, সেসময়েও আদালত অবমানার মামলা হয়েছিল, কিন্তু যে পদ্ধতিতে বিশেষ বেঞ্চ গঠন করে আদালত আবমাননার রুল ইস্যু করা হয়েছিল, এক্ষেত্রে তা করা হয়নি। এখানে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের অনুমতি নিতে হত কিন্তু তা করা হয়নি। এ প্রসঙ্গেই বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য জানতে চান, একজন ব্যক্তি, যিনি রাজ্যের শাসক দলের মুখপাত্রের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনছেন, যিনি রাজ্যের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন এডভোকেট জেনারেল কি তার অনুমতি দিতেন! বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানতে চান, তার মানে আপনি বলতে চাইছেন রাজ্যের এডভোকেট জেনারেলের অনুমতি ছাড়া এটা স্বতঃপ্রণোদিত মামলা হতে পারে না! উত্তরে, বাম আমলে ঘটা হাই কোর্টের বিচারপতি লালার সঙ্গে ঘটা ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন কল্যাণ। সতঃপ্রণোদিত
আদালতে ঘটনার দিনের ভিডিও দেখিয়ে তিনি বলেন, “আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা আইনজীবীদের বিক্ষোভে তাঁদের মুখের ভাষা শুনুন। বর্ষীয়ান আইনজীবীদের তর্ক করতে দেখা গিয়েছে।” আদালতে কল্যাণের দাবি, এক্ষেত্রে আইনজীবী কাম রাজনৈতিক নেতার জন্য স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের হতে পারে না। নিয়ম হল, আদালত অবমাননার মামলা করতে গেলে এজি-র কাছে অনুমতি নিতে হয়। কল্যাণের অভিযোগ, এ ক্ষেত্রে আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করেছে ফলে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি।
এই প্রসঙ্গেই এদিন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য বলেন, “এজি রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করেন। তাহলে এজি রাজ্যের শাসকদলের মুখপাত্রের হয়ে অনুমতি কি দিতে পারেন? তাহলে বিষয়টা ভুল পথে চালিত হয়ে যায় না?” কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, রাজ্যের বিচারপতিরাও কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করেন। তাহলে তারাও কি স্বচ্ছভাবে বিচার করবেন? এজি-র ক্ষেত্রে এমন অভিযোগ গ্রহণযোগ্য নয় বলে দাবি করেন কল্যাণ। তিনি বলেন, “এজি কি আইন লঙ্ঘন করেছেন!” শুনানি শেষে এদিন বিচারপতি অরিজিত বন্দ্যোপাধ্যায় জানতে চান, অবমাননার মামলায় নূন্যতম কত টাকা জরিমানা হয়? কল্যাণ জানিয়েছেন, দুহাজার টাকা। আগামী ১৭ জুলাই ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.