অর্ণব আইচ: দোকান থেকে নতুন মোবাইল কিনে স্ত্রীকে উপহার দিয়েছিলেন যুবক। কিন্তু বুঝতে পারেননি যে, তাতেও লুকিয়ে রয়েছে বিপদ। সেই ‘বিপদ’ নেমে এল গুজরাত পুলিশের হাত ধরে। গুজরাত পুলিশের আধিকারিকরা কলকাতায় এসে ওই যুবক ও তাঁর স্ত্রীকে জানালেন যে, তাঁদের কেনা মোবাইল থেকে হয়েছে সাইবার অপরাধ। গুজরাত পুলিশের দাবিতে রীতিমতো হতবাক ওই দম্পতি। তাঁদের অভিযোগ, মধ্য কলকাতার ওই দোকান ইচ্ছাকৃতভাবে প্রতারণা করেছে তাঁদের সঙ্গে। নতুন বলে আসলে অপরাধের সঙ্গে যুক্ত পুরনো মোবাইল তাঁদের গছিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই দম্পতির বাড়ি মধ্য কলকাতার মুচিপাড়া এলাকার শাঁখারিটোলা স্ট্রিটে। গত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে ওই যুবক ডালহৌসি অঞ্চলের মিশন রো এক্সটেনশনের একটি মোবাইলের দোকানে যান। তিনি একটি নতুন মোবাইল পছন্দ করেন। ওই যুবকের অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি ৪৯ হাজার টাকা দিয়ে ওই মোবাইলটি কেনেন। দোকানের পক্ষ থেকে তাঁকে একটি নতুন বাক্সে ভরেই মোবাইলটি দেওয়া হয়। যুবক মোবাইলটি বাড়িতে নিয়ে এসে তাঁর স্ত্রীকে উপহার দেন। স্ত্রী তাঁর পুরনো সিমকার্ড ওই মোবাইলে ভরে সেটি ব্যবহার করতে শুরু করেন। কিন্তু মাস চারেক ব্যবহার করার পরই শুরু হয় বিপত্তি। গুজরাতের রাজকোট শহরের সাইবার ক্রাইম থানার এক আধিকারিক এক সাইবার অপরাধের তদন্তে কলকাতায় আসেন। তিনি ওই মোবাইলে ফোন করে যুবতীর স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। দম্পতিকে সাইবার ক্রাইম থানার ওই আধিকারিক জানান যে, তাঁদের থানায় একটি সাইবার অপরাধের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। তারই তদন্ত শুরু করে তাঁরা জানতে পারেন যে, কলকাতা থেকে সাইবার অপরাধী ফোন করেছিল। যে মোবাইল থেকে তারা ফোন করেছিল, তার আইইএমআই নম্বরের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে ওই মোবাইলের আইইএমআই নম্বর।
সেই সূত্র ধরেই গুজরাত পুলিশ সাইবার অপরাধীকে ধরার জন্য এসেছে কলকাতায়। ওই দম্পতিকে নোটিস পাঠায় রাজকোটের সাইবার ক্রাইম থানা। গুজরাত পুলিশকে ওই দম্পতি পাল্টা জানান যে, তাঁরা নতুন মোবাইল কিনেছিলেন। যে সময়ে সাইবার অপরাধ ঘটেছে, তখন মোবাইলটি তাঁদের হাতেও ছিল না। কোনও মোবাইল নতুন হলে সেটি অপরাধীদের হাতে পড়াও সম্ভব নয়। সেই ক্ষেত্রে দোকানের মালিক ও কর্মীরা তাঁদের নতুন বলে পুরনো মোবাইল বিক্রি করেছেন।
এই ব্যাপারে দম্পতি হেয়ার স্ট্রিট থানায় ওই মোবাইল বিক্রেতা সংস্থার তিন অধিকর্তা ও অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ তাঁদের মোবাইল ও নথি বাজেয়াপ্ত করে। এই নথি হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশ আদালতে জমা দেয়। আদালতের পক্ষ থেকে এই তদন্তভার বউবাজার থানাকে দেওয়া হয়। সূত্রের খবর, এবার বউবাজার থানার পুলিশ ওই মোবাইল বিক্রেতা সংস্থার মালিকদের তলব করে জেরা শুরু করেছে। ওই মোবাইলটিও ফরেনসিকে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। ওই মোবাইলটি আদৌ নতুন কি না, বা পুরনো হলে তা বিক্রেতারা জানতেন কি না, তা পুলিশ জানার চেষ্টা করছে। পুরনো মোবাইল কীভাবে নতুন বলে বিক্রি করা হল, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.