শুভঙ্কর বসু: আমফান (Amphan) দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের কাছে জবাব তলব করল কলকাতা হাই কোর্ট। এ নিয়ে বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং-সহ একাধিক ব্যক্তি হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। শুক্রবার একসঙ্গে মামলাগুলির শুনানি হয়। তারপর প্রধান বিচারপতি টিবি রাধাকৃষ্ণণের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কাছে দু’সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট তলব করে। বিপর্যয়ের পর কোন পদ্ধতিতে ত্রাণ বন্টন হয়েছে তা হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে।
এদিন মামলার শুনানিতে হামলাকারীদের তরফে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য দাবি করেন, বিপর্যয়ের পর ত্রাণ বন্টনের নামে বড়সড় দুর্নীতি হয়েছে। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণ পাননি। উলটে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত নয় এমন অনেক ব্যক্তির নাম ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় রয়েছে। শাসক দল ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ক্ষতিপূরণের অংকও পৌঁছেছে। বিকাশবাবুর এই অভিযোগের তীব্র বিরোধিতা করেন অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত। তিনি পালটা দাবি করেন, বিপর্যয় ঘটে যাওয়ার পরপরই রাজ্যের তরফে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়। দুর্নীতি ও স্বজনপোষণ যাতে না হয় তা নিশ্চিত করতে আবেদনের ভিত্তিতে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্তদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়েছে। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর কোন পদ্ধতিতে কত ক্ষতিগ্রস্তকে সাহায্য দেওয়া হয়েছে তা রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কাছে জানতে চেয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। দু’সপ্তাহ পর ফের মামলার শুনানি।
উল্লেখ্য, গত মে মাসে রাজ্যের উপর আছড়ে পড়ে প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফান। নবান্নে কন্ট্রোল রুম থেকে ঝড়ের পরিস্থিতির উপর নজর রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি রাজ্যের হয়েছে বলেও জানান তিনি। এরপর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে রাজ্যে এসে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই অনুযায়ী মোদিও রাজ্যে আসেন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন তিনি। তৎক্ষণাৎ ক্ষতিপূরণ দেন। তবে পরে কেন্দ্রীয় টিম ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখে আরও ক্ষতিপূরণ দেবে বলে আশ্বাস দেন মোদি। তবে রাজ্যের অভিযোগ, কেন্দ্র ক্ষতিপূরণ দেয়নি। ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে অভিযোগ ওঠে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ক্ষতিপূরণ দিতে গিয়ে স্বজনপোষণ করছেন তৃণমূল নেতারা। সেই অভিযোগকে হাতিয়ার করেই সরব বিরোধীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.