নব্যেন্দু হাজরা: সময়সারণি যাই থাক, একটি মেট্রো মিস করলে অন্তত দাঁড়িয়ে থাকতে হবে আধঘণ্টা। কারণ ‘ওয়ান লাইন ওয়ান মেট্রো’ সার্ভিসে একটি ট্রেনই যাতায়াত করবে দিনভর। ফলে একবার তা মিস করলে আর রক্ষে নেই। তাই নিউ গড়িয়া-রুবি বা জোকা-তারাতলা চলতি বছরে পরিষেবা চালু হলেও মেট্রোয় (Kolkata Metro) যাত্রী কতটা হবে তা নিয়ে সংশয়ে কর্তৃপক্ষই।
আপাতত দুই লাইনেই চলছে ট্রায়াল রান। কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি এসে ছাড়পত্র মিললে তবেই যাত্রী নিয়ে ছুটবে ট্রেন। কর্তারা জানাচ্ছেন, দুই রুটেই সিগন্যালিং সিস্টেম এখনও বসানো হয়নি। তাই একটি লাইন দিয়ে একটি মেট্রোই ছুটবে। সেটি গন্তব্যে পৌঁছবে। তারপর ফের তা ফিরবে ওই লাইন দিয়েই। আবার যাবে ফিরতি রুটে। আর এই একটি ট্রেন আপ-ডাউন করাতেই তা পেতে যাত্রীদের বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে।
জোকা, ঠাকুরপুকুর, শখেরবাজার, বেহালা চৌরাস্তা, বেহালা বাজার এবং তারাতলা। জোকা-তারাতলা সাড়ে ছ’কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে এই ছটি স্টেশন। আপাতত ঠিক আছে, ‘ওয়ান ট্রেন সার্ভিস’শুরু হবে এই লাইনে। স্বাভাবিক গতিতে মেট্রো ছুটলে এই দূরত্ব যেতে ১৮-১৯ মিনিট মতো লাগার কথা। অর্থাৎ ধরা যাক, একজন যাত্রী বেহালা বাজার যাবেন বলে ঠাকুরপুকুর থেকে মেট্রো ধরতে প্ল্যাটফর্মে এলেন, কিন্তু দেখলেন সবেমাত্র মেট্রোটা বেরিয়ে গেল। তারপর শুধুই অপেক্ষা। কারণ ওই ট্রেনটি তারাতলা পৌঁছবে, ফের সেখান থেকে জোকা ফিরবে। তারপর আবার যখন তা তারাতলার উদ্দেশে রওনা হবে, তখন ওই ব্যক্তি ঠাকুরপুকুর থেকে উঠতে পারবেন। অর্থাৎ একটি ট্রেন মিস করলে অন্তত ৩০ মিনিটের বেশি অপেক্ষা করতে হবে।
একইরকম অবস্থা নিউ গড়িয়া-রুবি রুটেও। মেট্রো কর্তারা জানাচ্ছেন, খুব দ্রুত কাজ হচ্ছে। জিএম বলেছিলেন, কালীপুজোর সময় পরিষেবা চালু করার কথা। সেইমতোই কাজ এগোচ্ছে। তবে সিআরএস এসে দেখে তারপর ছাড়পত্র দিলে তবেই যাত্রী নিয়ে ছোটা শুরু করতে পারবে মেট্রো। কবি সুভাষ থেকে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় মানে রুবি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার যাত্রাপথে থাকছে পাঁচটি স্টেশন। কবি সুভাষ, সত্যজিৎ রায়, জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী, কবি সুকান্ত এবং হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। আপাতত এই রুটে ছোটা শুরু করবে মেট্রো। একটি ট্রেনই যাতায়াত করবে। ফলে এক্ষেত্রেও একবার মিস করলেই ফের ট্রেন পেতে আধ ঘণ্টার প্রতীক্ষা। আর এখানেই প্রশ্ন!
যেখানে রুবি থেকে বাসে করে কবি সুভাষ আধ ঘণ্টার কম সময়ে পৌঁছে যাওয়া যায়, সেখানে যাত্রীরা কেন ঝুঁকি নিয়ে মেট্রো ধরতে যাবেন! যেখানে ট্রেন ফস্কালেই হা-হুতাশ করে বসে থাকা ছাড়া উপায় থাকবে না। আর এখানেই চিন্তা বাড়ছে কর্তৃপক্ষের। তাহলে এই দুই মেট্রোর ভবিষ্যৎও কী ইস্ট-ওয়েস্টের প্রথম দিককার মতো হবে! দিনে একশো জন যাত্রী। আধিকারিকদের কথায়, আগে আসলে যাত্রীদের কাছে চাহিদা বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। যদি যাত্রী বেশি হয়, তবে নিশ্চয় পরিষেবা বাড়ানো হবে। মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেন, “আমরা আমাদের জেনারেল ম্যানেজার অরুণ অরোরার পথ নির্দেশে আরও মেট্রোরুট দ্রুত খুলছি। আপাতত ওয়ান লাইন সার্ভিস চালু করা হচ্ছে। তবে যাত্রী বাড়লে ভবিষ্যতে মেট্রোর সংখ্যা বাড়ানো হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.