Advertisement
Advertisement
Kolkata police

শহরে কোটি টাকা ডাকাতির মাস্টারমাইন্ড, গয়া থেকে গ্রেপ্তার গ্যাংস্টার লাল্লু খান

এই সুপারি কিলারের বিরুদ্ধে ঝাড়খণ্ড ও বিহারে একাধিক খুন-সহ ৩৫টি অভিযোগ রয়েছে।

Kolkata police arrest robbery accused Lalu Khan from Bihar

প্রতীকী ছবি

Published by: Amit Kumar Das
  • Posted:July 14, 2025 11:41 am
  • Updated:July 14, 2025 11:41 am  

অর্ণব আইচ: কলকাতায় কোটি টাকা ডাকাতির মাস্টারমাইন্ড বিহার-ঝাড়খণ্ডের গ‌্যাংস্টার। লাল্লু খান নামে এই সুপারি কিলারের বিরুদ্ধে ঝাড়খণ্ড ও বিহারে একাধিক খুন-সহ ৩৫টি অভিযোগ রয়েছে। লক্ষ লক্ষ টাকা সুপারি নিয়ে খুন করতে সিদ্ধহস্ত এই লাল্লু। পূর্ব কলকাতার নারকেলডাঙায় এক ব‌্যবসায়ীর কাছ থেকে কোটি টাকার ডাকাতির অভিযোগে বিহারের গয়া থেকে গ্রেপ্তার করে লাল্লুকে কলকাতায় নিয়ে এলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। গোয়েন্দাদের দাবি, ডাকাতির ছক কষা থেকে শুরু করে নিজে কলকাতায় থেকে পুরো অপরাধের মনিটরিং করে সে। এবার তাকে জেরা করে এই ডাকাতির পিছনে আরও কেউ রয়েছে কি না, সেই তথ‌্য জানার চেষ্টা করছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা।

Advertisement

গত জানুয়ারি মাসে নারকেলডাঙার ক‌্যানাল ইস্ট রোডের ব‌্যবসায়ী ইফতিকার আহমেদ খান রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় একটি বাইকে করে আসে ডাকাতরা। তাঁকে অস্ত্র দেখিয়ে ও চোখে তরল স্প্রে করে তাঁর ব‌্যাকপ‌্যাক লুঠ করে। ব‌্যবসায়ীর অভিযোগ, তাঁর কাছ থেকে এক কোটি টাকা ডাকাতি হয়। এই ঘটনায় লালবাজারের গোয়েন্দারা তদন্ত করে বিহারের ছাপরার দরিয়াপুরের বাসিন্দা নাসরুল খান, ইরফান খান ও তিলজলার কুষ্টিয়া রোডের বাসিন্দা দুই ভাই মহম্মদ জসিম ও মহম্মদ নাদিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের জেরা করে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ওই ব‌্যবসায়ী ছাগল কেনাবেচার টাকা নিয়ে ওই রাস্তা দিয়ে যে যাতায়াত করতেন, তা জানত জসিম ও নাদিম। তাদের গ্রেপ্তারের পর ধৃতদের জেরা করে বিহারের নাসরুল ও ইরফানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। বিহারের দুই বাসিন্দাকে জেরা করে গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, এই ডাকাতির মাস্টারমাইন্ড ঝাড়খণ্ডের গ‌্যাংস্টার লাল্লু খান। গত বছরের জুলাইয়ে বিহারের গয়ার শেরঘাটি আদালতে গুলি চালিয়ে হেফাজতে থাকা এক ব‌্যক্তিকে খুন করে লাল্লু খান ও তার গ‌্যাংয়ের সদস‌্যরা। এর পর থেকে সে পলাতক ছিল। গয়া পুলিশ তার মাথার দাম ৫০ হাজার টাকা ঘোষণা করে।

ওই ঘটনার পর সে ঝাড়খণ্ড ও বিহারের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে কলকাতায় আসে। এখানে এক পরিচিতর ডেরায় গা ঢাকা দেয়। তখনই তার সঙ্গে জসিম ও নাদিমের যোগাযোগ হয়। তারা ওই ব‌্যবসায়ীর টাকার ‘টিপস’ দেয় লাল্লুকে। এর পর লাল্লু তার গ‌্যাংয়ের দু’জনকে কলকাতায় ডেকে নিয়ে আসে। গ‌্যাংস্টার লাল্লু নিজেই ডাকাতির ছক কষে। তাদের হাতে চোখে জ্বালা করে, এমন স্প্রে ও অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়। ডাকাতির কোটি টাকা ভাগাভাগি হয়। ডাকাতির সিংহভাগ টাকা লাল্লু নিয়ে উধাও হয়ে যায়। বিভিন্ন সময়ে ঝাড়খণ্ড, বিহারে থাকতে শুরু করে। এর মধ্যে কলকাতা পুলিশ ও বিহার পুলিশ তার সন্ধান চালায়। ঘনঘন সিমকার্ড ও মোবাইল পাল্টে বিভিন্ন ডেরায় ঘুরে বেড়াতে থাকে সে। কয়েকদিন আগে লাল্লুর দুই সঙ্গীকে ঝাড়খণ্ডের পুলিশ চাতরা থেকে গ্রেপ্তার করে। তাদের জেরা করেই গয়া পুলিশ জানতে পারে যে, বিহারের ঔরঙ্গাবাদের দিকে গা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করছে লাল্লু। এই খবর আসে লালবাজারের গোয়েন্দাদের কাছেও।

গোয়েন্দাদের একটি টিম বিহারে যায়। গয়ায় তল্লাশি চালায়। এর মধ্যে বিহার পুলিশও ঔরঙ্গাবাদের জঙ্গলের রাস্তায় শুরু করে নজরদারি। এক সঙ্গীকে নিয়ে বাইকে করে পালানোর সময়ই পুলিশ লাল্লু খানকে গ্রেপ্তার করে। তার কাছ থেকে দু’টি পিস্তল, ১৩টি গুলি উদ্ধার হয়। গয়ার জেল থেকে লাল্লু খানকে গ্রেপ্তার করেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। তাকে লালবাজারের জেরা করে ডাকাতির বাকি টাকা উদ্ধারের চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement