অর্ণব আইচ: খাস কলকাতায় ভুয়ো নম্বর প্লেট তৈরির বড়সড় চক্রের পর্দাফাঁস করল কলকাতা পুলিশ। ঘটনায় কলকাতা পুলিশের জালে আট। ধৃতদের কাছ থেকে বাংলা, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা-সহ একাধিক রাজ্যের ভুয়ো নম্বর প্লেট উদ্ধার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের অনুমান, ঘটনার পিছনে আন্তঃরাজ্য চক্রের যোগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, ঘটনার পিছনে বড় কোনও বড় মাথা আছে বলেও অনুমান লালবাজারের গোয়েন্দাদের। ইতিমধ্যে তাঁর খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ। শুধু তাই নয়, দফায় দফায় ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে দাবি করা হয়েছে। কিন্তু কীভাবে এত বড় কেলেঙ্কারির পর্দাফাঁস করল পুলিশ?
পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার ডিপিএস জুনিয়র, রুবি পার্কের কাছে ডিউটি করছিলেন কসবা ট্র্যাফিক গার্ডের সার্জেন্ট সৌভিক বিশ্বাস। কর্তব্যরত অবস্থায় WB 05C 1317 নম্বর প্লেটের একটি স্কুটি আটক করেন তিনি। আর সেই নম্বর যাচাই করতেই প্রকাশ্যে আসে এই কেলেঙ্কারি! দেখা যায়, ওই স্কুটিতে লাগানো নম্বর প্লেটটি আসলে ভুয়ো। শুধু তাই নয়, অন্য একজনের নামে ওই WB 05C 1317 নম্বরটি ইস্যু করা হয়েছে বলে দেখা যায়। এখানেই শেষ নয়, ঘটনার আরও গভীরে যেতেই দেখা যায়, ওই নম্বরের আসল মালিক রঞ্জন দত্ত আগেই একটি কলকাতা পুলিশে ইমেল মারফৎ একটি অভিযোগ জানান।
ওই ব্যক্তি জানান, WB 05C 1317 এর নম্বরে বারবার প্রসিকিউশনের নোটিশ আসছে। সেখানে তিনি কখনও যাননি। তদন্তে নামে পুলিশ। প্রথমেই মঙ্গল নস্কর নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, জহুরা বাজার লেনের রমেন্দ্র প্রসাদ কেশরী নামে এক ব্যক্তি মঙ্গল নস্করকে জাল নম্বর প্লেটযুক্ত স্কুটি সরবরাহ করেছিল। এরপর দফায় দফায় রমেন্দ্রকে জেরা করে পুলিশ। প্রথমে মুখ খুলতে না চাইলেও পরে জাল নম্বর প্লেটের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের পরিচয় প্রকাশ করে। তা জানার পরেই তিলজলা এলাকার পিকনিক গার্ডেনে বিক্রম শো নামে এক ব্যক্তির দোকানে হানা দেয় পুলিশ।
সেখানে ঢুকেই কার্যত চমকে ওঠেন পুলিশ আধিকারিকরা। জানা যায়, তল্লাশিতে বিক্রমের দোকান থেকে বাংলা, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা-সহ একাধিক রাজ্যের নম্বর প্লেট উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধার হয় নম্বর প্লেট তৈরির মেশিনও। এক্ষেত্রে কোনও বৈধ নথি অভিযুক্ত বিক্রম দেখাতে পারেনি বলেই দাবি পুলিশের। এরপরেই বিক্রমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শুধু তাই নয়, তাঁকে জেরা করে মল্লিকবাজার এলাকার একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালায় পুলিশ। তল্লাশিতে একাধিক ভুয়ো নম্বর প্লেট উদ্ধার করে পুলিশ। সব মিলিয়ে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের অনুমান, এর পিছনে বড়সড় চক্র কাজ করছে। তাঁদের খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.