রিংকি দাস ভট্টাচার্য: শুকনো বাতাস নয়। ভোরে গায়ে চাদর উঠেছে স্যাঁতসেঁতে ভিজে হাওয়ায়। হেমন্তের শহর যখন শীতের আঁচ পোহাতে গুছিয়ে বসছে, তখনই ঘূর্ণাবর্তের ধাক্কা। ঝলমলে নীল আকাশের বদলে মঙ্গলবার সকাল থেকেই কালো আকাশে মুখ ঢাকে কলকাতা ও আশপাশের এলাকা। সোমবার রাতে শুরু হয়েছে ইলিশেগুড়ি বৃষ্টি। মঙ্গলবার বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হয়েছে কলকাতা-সহ শহরতলিতে। আলিপুর জানিয়ে দিয়েছে, আজ বুধবারও বৃষ্টি চলবে কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গে।
বৃহস্পতিবার আকাশ পরিষ্কার হওয়ার সম্ভাবনার আশা। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের উপ মহানির্দেশক সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ঘূর্ণাবর্তটির শক্তি বাড়িয়ে নিম্নচাপের পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা আর নেই। সেটি সরছে মায়ানমারের দিকে। ফলে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টির পরিমাণ কমবে, যদিও আকাশ মেঘলা থাকবে। বৃহস্পতিবারের পর পরিস্থিতির ক্রমে উন্নতি হবে। নতুন করে নিম্নচাপ বা ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি না হলে কালীপুজোর সময় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই জানিয়েছে হাওয়া অফিস। গত দু’দিন কালো মেঘে আকাশ ঢেকে থাকায় চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন আম বাঙালি। আশঙ্কা জেগেছিল, কালীপুজোর সময় বৃষ্টি হবে না তো? রাতের আকাশ যদি কালো মেঘে ঢেকে থাকে, তা হলে আতশবাজির রোশনাই কী করে ফুটে উঠবে? আপাতত এমন আশঙ্কার কোনও ভিত্তি নেই বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদদের একাংশ।
[পরীক্ষায় ফেল, দিওয়ালিতে দেখা মিলবে না এই চার বাজির]
তাঁদের অনুমান, কালীপুজোর আগেই ঝলমলে হয়ে যাবে আকাশ। তবে সোমবারের মতো মঙ্গলবারও আকাশ মেঘলা থাকায় ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব মালুম হয়েছে দিনভর। এদিন আলিপুরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিকের পাঁচ ডিগ্রি কম! আবহাওয়াবিদদের কথায়, এই ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে রাতের তাপমাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা পুরোদস্তুর। ফলে কয়েকদিন ধরে সকালের দিকে যে শিরশিরানি অনুভূত হচ্ছিল, তাতে ছেদ পড়বে। তাঁদের ব্যাখ্যা, ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে বাতাসের উঁচু স্তরে মেঘ ঢুকছে, যা আকাশে মেঘ ঢোকাবে। পরে নিচুস্তরেও মেঘ ঢুকবে। যার জেরে দিনের তাপ রাতে বেরোতে পারবে না। বাড়বে রাতের তাপমাত্রা। যার প্রমাণ অবশ্য এদিন সকালেই মিলেছে।
[দমদম বিমানবন্দরে মাদক-সহ গ্রেপ্তার নাইজেরীয় তরুণী ]
মঙ্গলবার শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ২২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। যা কিনা স্বাভাবিক এক ডিগ্রি বেশি। উল্লেখ্য, চারদিন আগে শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তিন ডিগ্রি নেমে দাঁড়িয়েছিল ২০.৩ ডিগ্রিতে। বস্তুত, সপ্তাহের মাঝে ঘূর্ণাবর্তটি বিস্তর ভুগিয়ে গিয়েছে শহর ও আশপাশে থাকা বাসিন্দাদের। তবে ঘূর্ণাবর্তের আড়ালে শীতের আগমনির বার্তার কথা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের কথায়, শীত আসার পটভূমি অবশ্য তৈরি করেছে উত্তর-ভারতে থাকা পশ্চিমি ঝঞ্ঝা। আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, পশ্চিম ঝঞ্ঝার প্রভাবে কাশ্মীরে তুষারপাত শুরু হয়েছে। সেই পশ্চিমি ঝঞ্ঝা ওখান থেকে বরফছোঁয়া হিমশীতল হাওয়া বয়ে নিয়ে এসে তাপমাত্রা কমাবে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের। আপাতত সেই ঝঞ্ঝার দিকে তাকিয়ে বঙ্গবাসী।
ছবি: পিন্টু প্রধান৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.