সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মেয়ো রোডে তৃণমূলের ভাষা আন্দোলনের মঞ্চ খুলেছে সেনাবাহিনী। সোমবার দুপুরে সেই খবর পেয়েই সেখানে ছুটে গেলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে দেখেই অবশ্য সেনাবাহিনীর জওয়ানরা চলে যান। দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে এনিয়ে বিজেপির উদ্দেশে ক্ষোভ উগরে দেন মমতা। বলেন, ”সেনাবাহিনীর দোষ নেই। তারা আমাদের বন্ধু। বিজেপির কথায় তাঁরা এই কাজ করেছে। বিজেপি সেনাকে রাজনৈতিক উদ্দেশে ব্যবহার করছে।” কেন তৃণমূলকে না জানিয়ে সেনার এই কাজ? সেই প্রশ্ন তুলে মমতার বক্তব্য, ”আপত্তিজনক কিছু থাকলে আমরা নিজেরাই মঞ্চ খুলে দিতাম।” এই ঘটনার পর ভাষা আন্দোলনের ধরনাস্থল পৃথক করে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। জানালেন, এবার থেকে মেয়ো রোডে আর নয়, রানি রাসমনি অ্যাভিনিউতে ভাষা ‘সন্ত্রাসে’র বিরোধিতা চলবে। আজ সেনার জবরদস্তিতে মঞ্চ ভেঙে দেওয়ার প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাজ্যের প্রতি ব্লকে, পঞ্চয়েতে প্রতিবাদ মিছিল হবে বলে ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার দুপুর ৩ টে নাগাদ ধর্মতলা লাগোয়া মেয়ো রোডে তৃণমূলের ভাষা আন্দোলনের মঞ্চে আচমকাই পৌঁছে যায় সেনাবাহিনী। মঞ্চটি খুলে দেওয়া হয়। সেখানে উপস্থিত তৃণমূল নেতা-কর্মীরা রুখে দাঁড়ালেও সেনা মঞ্চ সরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়েই সেখানে ছুটে যান তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমাররা।
ভাঙা মঞ্চে দাঁড়িয়েই মমতা বলেন, ”আমাদের মাইকের কানেকশন কেটে দিয়েছে, প্যান্ডেল খুলে দিয়েছে, স্টেজ ভেঙে দিয়েছে। সেনার বিরুদ্ধে কিছু বলার নেই আমার, ওরা আমাদের গর্ব। কিন্তু ওদের যখন বিজেপির কথায় চলতে হয়, তখন সেটা দুর্ভাগ্যের।” তৃণমূল নেত্রীর স্পষ্ট অভিযোগ, ”বিজেপির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথায় করেছে। এটা বিজেপি করেছে। মঙ্গলবার আমাদের কর্মসূচি ছিল। আজ এই মঞ্চটা খুলে দেওয়া হল। আমরা জানি, এটা সেনার এলাকা, রেলের এলাকা কিছুটা। আমরা তাদের বিরক্ত করতে চাই না। কিন্তু এটার পিছনে দায়ী বিজেপি সরকার।বিজেপি প্রমাণ করে দিল যে, সেনাকে ওরা এইভাবে কাজে লাগায়। মনে রাখুন, যতটা করবেন, তার পালটা জবাবও পাবেন।”
যদিও মঞ্চ খোলা নিয়ে সেনার তরফে সিপিআরও গ্রুপ ক্যাপ্টেন হিমাংশু তিওয়ারির দাবি, “এখানে ৩ দিনের বেশি কর্মসূচি করতে হলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অনুমতি নিতে হয়। দু’দিনের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। ওই মঞ্চ এক মাস ধরে রেখে দেওয়া হয়। আয়োজকদের কাছে মঞ্চ খোলার আবেদন জানানো হলেও খোলা হয়নি। কলকাতা পুলিশকে জানিয়েই সেনার তরফে মঞ্চ খোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
সেনার এই দাবি উড়িয়ে মমতা পালটা বলেন, ”সেনাকে বলব আপনারা মানুষের গর্ব। বিজেপির হাতের পুতুল হয়ে নোংরা খেলায় নামবেন না।” এই মঞ্চ ভেঙে ফেলায় তৃণমূল নেত্রী জানান, এবার মোদির অনুমতি নিতে হয়, এমন কোনও জায়গায় আমরা আর কর্মসূচি করব না। আমি মানুষের পারমিশন নিয়ে চলি। ভাষা আন্দোলন চলবে, এবার রানি রাসমনি রোডে হবে প্রতিবাদ। তবে মানুষের যাতায়াতের সুবিধায় ডোরিনা ক্রসিং ছেড়ে আন্দোলন চালাতে হবে বলে ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.