সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘গণতন্ত্রের জন্য কালো দিন।’ লোকসভায় কেন্দ্রীয় সরকারের আনা বিলের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাফ বললেন, ১৩০ তম সংবিধান সংশোধনী বিলের নামে গণতন্ত্রের মৃত্যুঘণ্টা বাজাচ্ছে নরেন্দ্র মোদি সরকার।
বুধবারই লোকসভায় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পেশ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসন (সংশোধনী) বিল ২০২৫, সংবিধান (১৩০ তম সংশোধনী) বিল ২০২৫ এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্বিন্যাস (সংশোধনী) বিল ২০২৫। ওই বিলগুলি মূলত সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে আনা। গুরুতর অপরাধের সঙ্গে জড়িত কোনও মন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রী নিজের পদের জন্য সাংবিধানিক রক্ষাকবচ না পান, সেটাই নিশ্চিত করা হবে ওই বিলে। প্রস্তাবিত ওই বিলে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বা কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং মন্ত্রীপদে আসীন অবস্থায় কেউ যদি গুরুতর অপরাধে ৩০ দিনের বেশি জেলে থাকেন তাহলে তাঁকে পদ থেকে অপসারণ করা হবে।
এই বিল নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে উত্তেজনা বাড়ছিল। সংসদের ভিতরে ও বাইরে এদিন বিরোধীরা ক্ষোভপ্রকাশ করতে থাকেন। এদিন লোকসভার কক্ষে বিলের কপি ছিঁড়ে বিক্ষোভ দেখান বিরোধীরা। এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিলের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠেন। এক্স হ্যান্ডেলে একটি দীর্ঘ প্রতিবাদ বার্তা দিয়েছেন তিনি। বিজেপি সরকার এই বিলের মাধ্যমে ভারতের গণতন্ত্রকে শেষ করতে চাইছে। জরুরি অবস্থার থেকেও এটি ভয়াবহ বলে এর তীব্র নিন্দা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এসআইআরের নামে দেশের নাগরিকদের ভোটাধিকার দমন করার চেষ্টা করছে মোদি সরকার। এটি কেন্দ্রের আরেকটি অতি কঠোর পদক্ষেপ বলে দাবি করছেন মুখ্যমন্ত্রী।
I condemn the 130th Constitutional Amendment Bill, proposed to be tabled, by the Government of India today. I condemn it as a step towards something that is more than a super- Emergency, a step to end the democratic era of India for ever. This draconian step comes as a death…
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial)
এদিন মমতা লিখেছেন, “এই বিল এখন আমাদের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা শেষ করতে চায়। আমরা যা দেখছি তা নজিরবিহীন। বিলটি ভারতীয় গণতন্ত্রের উপর হিটলারি আক্রমণের চেয়ে কম কিছু নয়। বিলটি বিচার বিভাগের সাংবিধানিক ভূমিকা কেড়ে নিতে চায়। ন্যায়বিচার এবং ফেডারেল ভারসাম্যের মূল বিষয়গুলির বিচার করার জন্য আদালতের ক্ষমতা কেড়ে নিতে চায়। বিলটি গণতন্ত্রকে বিকৃত করে।”
এটি কোনও সংশোধনী বিল নয়, বলে দাবি করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এটি বাস্তবায়িত হলে আইন আর আদালতের হাতে থাকবে না, বরং স্বার্থান্বেষীদের হাতে চলে যাবে বলেও মনে করছেন তিনি। সাংবিধানিক সুরক্ষা ও জনগণের অধিকার পদদেলিত করছে মোদি সরকার। সেই কটাক্ষও করেছেন মমতা। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থার সঙ্গেও তুলনা করা হয়েছে। তিনি টুইটে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “আদালতগুলিকে দুর্বল করা মানে জনগণকে দুর্বল করা। তাদের ন্যায়বিচার চাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা মানে গণতন্ত্রকে বঞ্চিত করা। বিলটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামো, যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো, বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা-নীতিগুলিকে আঘাত করে। যদি এটি পাশ হয়, তাহলে দেশের সাংবিধানিক শাসনের জন্য মৃত্যুদণ্ডের পরোয়ানা হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.