নব্যেন্দু হাজরা: একদিকে লাগাতার বৃষ্টি অন্যদিকে ভুটান পাহাড় থেকে নেমে আসা বৃষ্টির জলে বন্যার পরিস্থিতি। আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত। পরিসংখ্যান বলছে, গত ১২ ঘণ্টায় ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বেড়াতে গিয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন পর্যটকরা। পাহাড়ি পথে বিভিন্ন জায়গায় ধস নেমে বন্ধ হয়ে গিয়েছে বিভিন্ন রাস্তা। শুধু তাই নয়, দার্জিলিংয়ের বিভিন্ন পর্যটনস্থলগুলিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় দ্রুত পাহাড় ছাড়ছেন পর্যটকরা। অনেকেই কলকাতায় ফিরতে চাইছেন। বিপর্যস্ত উত্তরের রেল পরিষেবাও।
পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে বিশেষ বাস সার্ভিস চালু করতে চলেছে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থা (এনবিএসটিসি)। আজ রবিবার শিলিগুড়ি থেকে কলকাতা রুটে তিনটি স্পেশাল বাস চালানো হবে। যার মধ্যে তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাস একটি বাস ছাড়বে সাড়ে পাঁচটা নাগাদ। এছাড়াও বিকেলে ছটা এবং সন্ধ্যা ৭টায় আরও একটি করে বাস চালানো হবে বলে জানানো হয়।
সর্বশেষ জানা যায়, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় আটকে থাকা পর্যটকদের যাতে শিলিগুড়ি থেকে কলকাতা পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া যায় তার জন্য রবিবার ৫টি স্পেশাল বাসের ব্যবস্থা নিগমের পক্ষ থেকে করা হয়েছিল। শিলিগুড়ির তেনজিং নোরগে বাসস্ট্যান্ড থেকে বিকেলের পর এই বাস গুলি কলকাতার উদ্দেশ্যে ছাড়া হয়।
উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিগমের চেয়ারম্যান পার্থ প্রতিম রায় জানান, ”শিলিগুড়ি থেকে কলকাতার রুটে তিনটি বাস নিয়মিতভাবে চালানো হয়। তবে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে আটকে থাকা পর্যটকরা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন তাদের কথা মাথায় রেখে পাঁচটি অতিরিক্ত বাস দেওয়া হয়েছে।” তবে সেই বাস যদি পর্যাপ্ত না হয় তাহলে প্রয়োজনে আরও বাসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন পার্থ প্রতিম রায়। একই সঙ্গে তিনি আরও জানিয়েছেন, দু’জন আধিকারিক ওই বাসস্ট্যান্ডে বিশেষভাবে নিয়োগ করা হয়েছে। যারা এই পরিস্থিতির উপর নজর রাখবেন।
উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে পাহাড়ের প্রায় সমস্ত রুট, দার্জিলিং , মিরিক, কালিংপং ও গ্যাংটকের মতো রুটের বাস পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। সেখানে নিয়মিত যে পরিষেবা দেওয়া হয় সেটা দেওয়া সম্ভব হয়নি। তাছাড়া ডুয়ার্সের টোটোপাড়া এলাকায় যে রুট রয়েছে সেটা আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের অন্যান্য জেলাতেও যদি পর্যটকরা কলকাতা ফিরে যেতে চান তার জন্য রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত বাস।
অন্যদিকে যে সব পর্যটকরা আটকে রয়েছেন তাঁদের যাতে বাড়তি দিন থাকার জন্য কোনও বাড়তি টাকা দিতে না হয়, তার জন্য সরকারের তরফে বিভিন্ন পর্যটন ও হোটেল সংগঠনকে জানাোন হয়েছে। পর্যটকরা আটকে রয়েছেন মূলত মিরিক, কালিম্পং ও ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকায়।
অন্যদিকে প্রবল বৃষ্টির জেরে একাধিক লাইনে এখনও পর্যন্ত জল জমে রয়েছে। ফলে একাধিক দূরপাল্লার ট্রেনকে ঘুরপথে চালানো হচ্ছে। অন্যদিকে বেশকিছু ট্রেনের যাত্রাপথ একদিকে যেমন সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে, অন্যদিকে সময় পরিবর্তনও করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে রেলের তরফ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। এক নজরে দেখে নিন কোন কোন ট্রেনে প্রভাব পড়তে চলেছে –
সময় পরিবর্তন-
১৩১৪২ নিউ আলিপুরদুয়ার-শিয়ালদহ তিস্তা তোর্সা এক্সপ্রেস নিউ আলিপুরদুয়ার থেকে ১৮:৩০ মিনিটে ছাড়বে।
যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত-
১৫৭০৪ বঙ্গাইগাঁও– নিউ জলপাইগুড়ি নিউ কোচবিহারে (এনসিবি) নিউ কোচবিহার পর্যন্ত চালানো হবে। নিউ কোচ বিহার-নিউ জলপাইগুড়ি এর মধ্যে ট্রেন পরিষেবা বন্ধ থাকবে।
ঘুরপথে চালানো হবে যে ট্রেনগুলি-
২০৫০৩ ডিব্রুগড়-নিউ দিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস নিউ কোচবিহার ভায়া মাথাভাঙা দিয়ে ঘুরিয়ে চালানো হবে। এছাড়াও ঘুরপথে চলবে ১২৪২৩ ডিব্রুগড়-নিউ দিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস। নিউ কোচবিহার ভায়া মাথাভাঙা হয়েই এই ট্রেনটি চালানো হবে। পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি ট্রেনকেও ঘুরপথে চালানো হবে বলে রেলের তরফে দেওয়া বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.