Advertisement
Advertisement
kasba case

‘আজই হেস্তনেস্ত করে ছাড়ব’, বলে মনোজিত! জেরায় ‘ম্যাঙ্গোদা’র উপরই দায় চাপাচ্ছে বাকি অভিযুক্তরা

গার্ডের ঘর থেকে উদ্ধার প্রত্যেকটি চাদরই ফরেনসিকে পাঠানো হয়েছে।

Other accused of kasba case blaming Manajit during police interrogation
Published by: Subhankar Patra
  • Posted:July 1, 2025 3:33 pm
  • Updated:July 1, 2025 4:12 pm  

অর্ণব আইচ: কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডে মনোজিতের উপরেই দোষ চাপাল কুকীর্তির সঙ্গী জায়েব আহমেদ ও প্রমিত মুখোপাধ‌্যায়। ধৃত কলেজের নিরাপত্তারক্ষী পিনাকী বন্দ্যোপাধ‌্যায়েরও দাবি, মনোজিতের চাপেই গার্ড রুম ছেড়ে সে বেরতে বাধ‌্য হত। ভিতরে নিজের ইচ্ছামতো কুকীর্তি করত মনোজিৎ। তার কথা না শুনলেই হুমকি দিত সে।

পুলিশ জানিয়েছে, মনোজিতের নির্দেশে জায়েব ও প্রমিতের তোলা দু’টি ভিডিওই ফাঁসিয়েছে তাকে। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় মনোজিৎ প্রথমে ধর্ষণের বিষয়টি অস্বীকার করলেও ওই ভিডিও দেখানোর পর সে প্রথম বর্ষের ছাত্রীটিকে ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করে।

পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ওই ভিডিও দেখিয়ে ব্ল‌্যাকমেল করে কয়েকদিনের মধ্যে ফের নির্যাতিতাকে ধর্ষণের ছক কষেছিল মনোজিৎ। ব‌্যাপারটি সে সঙ্গীদেরও জানিয়েছিল। তার ছক ছিল, একই পদ্ধতিতে সবাইকে বের করে দিয়ে গার্ড রুম অথবা কাছাকাছি কোনও জায়গায় ফের তাঁকে ধর্ষণ করার।

মনোজিৎ ও তার সঙ্গীদের জেরা করে ‘সিট’-এর সদস‌্যরা নিশ্চিত যে, আগাম পরিকল্পনা করেই ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে সে। গত কয়েক মাস ধরেই বিভিন্নভাবে গার্ড রুম ও বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে ওই ছাত্রীকে যৌন নিগ্রহের চেষ্টা করে সে। কুপ্রস্তাবেরও ইঙ্গিত দেয়। যদিও ছাত্রী বিষয়টিকে আমল দেননি। তাই রীতিমতো ছক কষে অত‌্যন্ত কাছের দুই সঙ্গী জায়েব ও প্রমিতকে গত বুধবার সে থেকে যেতে বলে। মনোজিৎ সেদিন ওই দুই সঙ্গীকে বলে, ‘‘আজই হেস্তনেস্ত করে ছাড়ব।’’

সেদিন দুপুরে ইউনিয়ন রুমে ১৭ জন ছাত্র-ছাত্রী ছিলেন। বিকেলের পর ছিলেন আটজন। অন‌্যদিন সন্ধ‌্যার পর অনেক ছাত্র-ছাত্রীই কলেজে থাকতেন। সেদিন ছক কষে কলেজ থেকে অন‌্যদের বেরিয়ে যেতে বলে মনোজিৎ। শুধু থেকে যায় জায়েব ও প্রমিত। তারা জানিয়েছে, মনোজিৎ যখন নির্যাতিতাকে ইউনিয়ন রুম লাগোয়া ওয়াশরুমে নিয়ে যায়, তখন তারই ইশারায় তারা বাইরে পাহারা দিচ্ছিল। নির্যাতিতা পালানোর চেষ্টা করলে মনোজিতের ইশারায় তারা গেটে তালা লাগায়। আবার জায়েব নির্যাতিতার জন‌্য ইনহেলার নিয়ে আসে। যদিও তারা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায়নি।

এরপর মনোজিতের ইশারায় তারা নির্যাতিতাকে জোর করে টেনে গার্ডের ঘরে নিয়ে যায়। তারই নির্দেশে নিরাপত্তারক্ষী পিনাকী বাইরে বসে থাকে। জায়েব ও প্রমিত স্বীকার করে যে, তাদের সামনেই জোর করে নির্যাতিতাকে বিবস্ত্র করা হয়। যদিও পুলিশের মতে, ওই কাজে মনোজিতকে সাহায‌্য করেছিল তার দুই সঙ্গীও। এরপর নির্যাতিতাকে গার্ডের বিছানায় জোর করে ঠেলে ফেলে সঙ্গীদের সামনেই তাঁকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ।

পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, মনোজিৎ গার্ডকে বলেছিল ঘর পরিষ্কার করে ফেলতে। যদিও রাতে ওই বিছানায় কোনওমতে ঘুমিয়ে পড়ে রক্ষী। প্রায় ১২ ঘণ্টা ওই ঘটনাস্থল অরক্ষিত থাকলেও কোনও প্রমাণ নষ্ট হয়নি বলে পুলিশের দাবি। তবে কোনও প্রমাণ নষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছিল কি না, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে। ওই ঘর থেকে একাধিক বিছানার চাদর পাওয়া গিয়েছে। প্রত্যেকটি চাদরই ফরেনসিকে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement