Advertisement
Advertisement
Park Circus

লুটের মোবাইল থেকেই কল ‘বান্ধবী’কে, পার্ক সার্কাসের ডাকাতের কীর্তিতে তদন্ত শুরু পুলিশের

এটিএম কাউন্টারে নিয়ে গিয়ে অভিযোগকারীকে দিয়ে জোর করে টাকা তোলায় ডাকাত।

Park Circus robber call friend from robbed phone realise mistake

প্রতীকী ছবি

Published by: Anustup Roy Barman
  • Posted:October 13, 2025 8:54 am
  • Updated:October 13, 2025 9:00 am   

অর্ণব আইচ: মোবাইল লুট করে রীতিমতো উত্তেজিত ডাকাত। আর তাই লুটের মোবাইল থেকে প্রথমে ‘বান্ধবী’কেই হোয়াটসঅ্যাপ কল? যদিও তার পরই লুটেরাটি বুঝতে পারে যে, একটি ভুল করে ফেলেছে। এই হোয়াটসঅ্যাপ কলটিই তাকে ধরিয়ে দিতে পারে। তাই যাঁর কাছ থেকে এই রাহাজানি, তাঁকে ভয় দেখিয়ে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রেখে তড়িঘড়ি সব কল মুছে ফেলে ওই ডাকাত।

Advertisement

পার্ক সার্কাসের কাছে রাস্তায় উপরই ডাকাতি। হাওড়ার বাসিন্দা এক যুবককে মারধর করে লুটের মোবাইল থেকেই হোয়াটসঅ্যাপ কল করে ডাকাত। যদিও কলের তথ্য মুছে ফেললেও যে যুবকের কাছ থেকে ডাকাতি হয়েছে, তাঁর সঙ্গে কথা বলে পুলিশের ধারণা, এক ‘বান্ধবী’কেই ফোন করেছিল ডাকাতটি। যদিও ধরা পড়ার ভয়ে শেষ পর্যন্ত যুবককে মোবাইল ফেরত দিয়ে দেয় ডাকাত। যদিও টাকার ব্যাপারে রেয়াত করেনি তারা। ওই যুবককে একটি এটিএম কাউন্টারে নিয়ে গিয়ে তাঁর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ডাকাতি করে ওই দুই ডাকাত। শনিবার রাতে এই ব্যাপারে কড়েয়া থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশের সুত্র জানিয়েছে, ওই মোবাইলটির ফরেনসিক পরীক্ষা হচ্ছে। কারণ, সিসিটিভির ফুটেজ ছাড়াও ওই হোয়াটসঅ্যাপ কলটির তথ্য ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা বের করতে পারলেই দুই ডাকাতের সন্ধান পাওয়া অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে বলে অভিমত পুলিশের।

পুলিশ জানিয়েছে, হাওড়ার ডোমজুড় এলাকার বাঁকড়ার বাসিন্দা ওই যুবকের এক আত্মীয় থাকেন তপসিয়া এলাকায়। শনিবার যুবক হাওড়া থেকে বাসে উঠে পার্ক সার্কাসে এসে নামেন। ততক্ষণে বিকেল হয়ে এসেছে। বাস স্টপেজ থেকে হেঁটে চার নম্বর ব্রিজের কাছে আসেন তিনি। এখান থেকেই তপসিয়ার অটো ধরার পরিকল্পনা ছিল তাঁর।

ব্রিজের লাগোয়া রাস্তা ধরেই তিনি হাঁটছিলেন। হঠাৎই দুই যুবক তাঁকে ডাকে। তিনি তাদের কাছে যেতেই তারা তাঁকে পাশেই একটি গলিতে নিয়ে যায়। তিনি বিপদ বুঝে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন। তখনই তারা পথ আটকে তাঁকে গলির আরও ভিতরে একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে যায়। তাঁর কাছ থেকে আচমকা মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় একজন। অন্যজন তাঁকে পাহারা দেয়। প্রথম যুবক তাঁর মোবাইল থেকেই হোয়াটসঅ্যাপ কল করে। তাঁর কথা শুনে পুলিশের ধারণা, কোনও ‘বান্ধবী’কেই ফোন করে সে। তার পর সব হোয়াটসঅ্যাপ কলই মুছে ফেলে সে। হাওড়ার ওই যুবক পালানোর চেষ্টা করতেই তাঁর মুখে ঘুসি মারতে থাকে তারা। দু’জন তাঁকে ফেলে মারধর করে। বলে, যা কাছে আছে, তা তাদের না দিলে তাঁকে খুন করে ফেলা হবে। তারা তাঁর বৈদ্যুতিন ঘড়ি হাত থেকে লুট করে। এর পর তাঁর মানিব্যাগও লুঠ করে তারা। যদিও মানিব্যাগে বেশি টাকা ছিল না। তখন এটিএম কার্ডটি বের করে নেয় ডাকাতরা। মারধর করে তারা তাঁর কাছ থেকে পিন নম্বরটি জেনে নেয়। পিন নম্বর যদি ভুল হয়, ফের তাঁকে মারা হবে বলে হুমকি দেয় তারা।

তাকে ধরে ভয় দেখিয়ে প্রথমে কাছেই একটি এটিএম কাউন্টারে তারা নিয়ে যায়। সেখানে তাঁর অ্যাকাউন্টের ব্যালান্স দেখে নেয় তারা। এর পর পার্ক সার্কাসের কাছে একটি পার্কের পাশে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের একটি এটিএমে ঢোকে তারা। ওই এটিএম কাউন্টারে তাঁকে দিয়ে জোর করে ২০ হাজার টাকা তোলানো হয়। এর পর ডাকাতরা যুবকের মানিব্যাগ ও মোবাইলটি ফেরত দেয়। তাঁকে বাড়ি ফেরত যাওয়ার জন্য হুমকি দিয়ে ওই ২০ হাজার টাকা ডাকাতি করে পালিয়ে যায় দুই ডাকাত। শনিবার রাতেই যুবক পরিজনদের সাহায্য নিয়ে কড়েয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এটিএম কাউন্টার, রাস্তার সিসিটিভির ফুটেজ ও মোবাইলের কলের সূত্র ধরেই ওই দুই ডাকাতের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ