Advertisement
Advertisement
Patna Hospital Shooting

পরিচয়পত্র ছাড়াই ঘরভাড়া গ্যাংস্টার তৌসিফদের! আনন্দপুরের সেই গেস্ট হাউসের বিরুদ্ধে মামলা পুলিশের

গেস্ট হাউসের দু’টি ঘর ভাড়া নেওয়া হয়েছিল।

Patna Hospital Shooting Kolkata Police file case against Anandapur guest house
Published by: Suhrid Das
  • Posted:July 22, 2025 3:25 pm
  • Updated:July 22, 2025 3:25 pm  

অর্ণব আইচ: কোনও পরিচয়পত্র জমা না দিয়েই সঙ্গীদের নিয়ে কলকাতার গেস্ট হাউসে ছিল গ‌্যাংস্টার। এবার পূর্ব কলকাতার আনন্দপুরের ওই গেস্ট হাউসের বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের করল পুলিশ। আনন্দপুর থানার পুলিশের পক্ষে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে এক সাব-ইন্সপেক্টর এই মামলা রুজু করেন।

Advertisement

পাটনার পারস হাসপাতালে কুখ‌্যাত দুষ্কৃতী চন্দন মিশ্রকে গুলি করে খুনের অভিযোগে শার্প শুটার তথা ঘটনার মূল চক্রী তৌসিফ রাজা ওরফে বাদশা ও তার তিন সঙ্গীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আনন্দপুরের মাদুরদহের হোসেনপুর রোডের ওই গেস্ট হাউস থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করে বিহার পুলিশের হাতে তুলে দেয় কলকাতা পুলিশের এসটিএফ। সোমবার তাদের বিহারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে খবর। গুলি চালানোর ঘটনার পর ভাই নিশু খানের চিকিৎসার নাম করেই কলকাতায় এসে গা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করে তৌসিফ। তৌসিফ রাজা ও তার ভাই নিশুর এক বান্ধবীর মাধ‌্যমেই আনন্দপুরের ওই গেস্ট হাউসের দু’টি ঘর ভাড়া নেওয়া হয়। ওই যুবতী উত্তর ২৪ পরগনার বিরাটির বাসিন্দা। তাঁর নামেই ঘর ভাড়া নেওয়া হয়।

রেজিস্টার খাতায় ওই যুবতী নিজের নাম ছাড়াও তৌসিফ, নিশু, হরিশ সিং ও শচীন সিংয়ের নাম লেখে। যদিও ওই খাতা ঘেঁটে পুলিশ জানতে পারে যে, শচীনের অন‌্য নাম ভীম ও হরিশের অন‌্য নাম হর্ষ। এই দু’জনই তৌসিফের গ‌্যাংকে বিভিন্নভাবে সাহায‌্য করত। পুলিশের এক কর্তা জানান, লালবাজারের নির্দেশ অনুযায়ী, গেস্ট হাউসে আসা প্রত্যেক অতিথির আধার কার্ড বা অন‌্য কোনও ভারতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি জমা দিতে হবে হোটেল কর্তৃপক্ষকে। কোনও প্রয়োজনে বা হোটেল কর্তৃপক্ষর সন্দেহ হলে সেই ফটোকপি পুলিশকে দেওয়া হয়। অথচ তদন্তে গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, গত ১৮ জুলাই ঘরভাড়া দিলেও কারও পরিচয়পত্রের কপি আনন্দপুরের গেস্ট হাউস কর্তৃপক্ষ চায়নি।

এমনকী, ২৪ ঘণ্টা পরও সেগুলি চাওয়া হয়নি ওই গ‌্যাংস্টারদের কাছ থেকে। সরকারি নিয়ম না মানার অভিযোগ তুলে পুলিশ জানিয়েছে, এই ব‌্যাপারে গত ২৮ মার্চের একটি অর্ডার ৩০ মে কলকাতা পুলিশের গেজেটে প্রকাশিতও হয়। অথচ গেস্ট হাউসটিকে লাইসেন্স দেওয়ার সময় এই নিয়ম পালন করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সেই নিয়ম লঙ্ঘণ করার অভিযোগে ওই গেস্ট হাউস কর্তৃপক্ষর বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা দায়ের করেছে। গেস্ট হাউসের ম‌্যানেজার ও কর্মীদের জেরা করে পুলিশ জানার চেষ্টা করছে, অন‌্য বোর্ডারদের ক্ষেত্রেও তাঁরা এই ধরনের গাফিলতি করেন কিনা। কলকাতার অন‌্য হোটেল বা গেস্ট হাউসগুলি এই নিয়ম মানছে কিনা, সেই ব‌্যাপারেও পুলিশ নজরদারি করছে।

এদিকে, সূত্রের খবর, পুলিশের কাছে তৌসিফের ভাই নিশু খান দাবি করেছে, কলকাতায় কিছুদিন গা ঢাকা দেওয়ার পর তারা দিল্লি পালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। উল্লেখ‌্য, বছর দুয়েক আগে একটি সংঘর্ষের সময় নিশুর কোমরে গুলি লাগে। এরপর থেকেই সে হাঁটাচলা করতে পারে না। তাই চিকিৎসার জন‌্যই দিল্লিতে পালানোর ছক কষে তারা। যদিও তৌসিফ ও তার সঙ্গীরা আদৌ অল্প কিছুদিনের জন‌্য কলকাতায় থাকত, নাকি কলকাতায় একটি স্থায়ী ডেরা খুঁজে নতুন করে গ‌্যাং তৈরির ছক কষে, তা নিয়ে এখনও ধন্দে কলকাতার গোয়েন্দারা। তাঁদের মতে, নিশুর চিকিৎসা ও তৌসিফদের গা ঢাকা দেওয়ার জন‌্যও অনেক টাকার প্রয়োজন। সেই কারণে কলকাতা বা তার আশপাশের অঞ্চলে ডেরা তৈরি করে তৌসিফ সোনার দোকান, ব‌্যাঙ্ক বা স্বর্ণঋণ সংস্থায় ডাকাতির মতো অপরাধের ছক কষছিল, এমন সম্ভাবনাও পুলিশ উড়িয়ে দিচ্ছে না। কারণ, তৌসিফের ‘গুরু’ শেরু সিং ডাকাতিতে সিদ্ধহস্ত। পুরুলিয়া ও রানাঘাটের সোনার দোকানেও ডাকাতি করেছে সে। এই ব‌্যাপারে আরও তথ‌্য জানতে তৌসিফকে বিহারে গিয়ে জেরা করতে পারেন কলকাতার গোয়েন্দারা। তাদের বান্ধবীকেও ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement