স্টাফ রিপোর্টার: ফোনের অপরপ্রান্তে হাউহাউ করে কাঁদছিল ছাত্রীটি। বলল, স্যর, আমায় প্রচণ্ড মেরেছে। সর্বস্ব লুঠ করেছে। আমি একটি মৃতদেহের মতো পড়ে ছিলাম। ওরা আমার উপর যা ইচ্ছা করেছে। কসবার আইন কলেজে গণধর্ষণের ঘটনার পর ঘরে ফিরে নির্যাতিতা ছাত্রী প্রথমেই ফোন করে একথা জানিয়েছিলেন তাঁর কলেজের অধ্যাপক-আইনজীবী অরিন্দম কাঞ্জিলালকে। শনিবার একথা জানিয়ে অধ্যাপক বলেন, “ওর উপর নির্মম নির্যাতনের বিবরণ শুনে আমি টলে গিয়েছিলাম। আমার ছাত্রী ধর্ষণের শিকার মানে আমি বা আমার মতো শিক্ষকও ধর্ষণের শিকার। আইনি লড়াই কঠিন নয়, আবার যথেষ্ট কঠিন। আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব।”
তবে ঘটনার তদন্তে পুলিশ ও রাজ্য সরকারের প্রতি আস্থা রেখে অরিন্দম বলেন, “পুলিশ ও সরকারের ব্যবস্থাপনায় নির্যাতিতা সম্পূর্ণ নিরাপদে আছেন। পুলিশ তাকে যথেষ্ট সুরক্ষিত জায়গায় রেখেছে। অবশ্য আমি একথা ফাঁস করায় নিজে কতটা নিরাপদ তা জানা নেই।” নির্যাতিতার হয়ে সওয়াল করে অরিন্দমের দাবি, “মনোজিৎ অত্যন্ত প্রভাবশালী। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যর সঙ্গে সরাসরি অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল তাঁর। এ ছাড়াও দক্ষিণ কলকাতার একাধিক মন্ত্রী ও বিধায়কের কাছেও নিয়মিত যাতায়াত ছিল।”
এরপরই প্রশ্নের সুরে অরিন্দম বলেন, “একটা মানুষ ছাত্র না হয়েও দীর্ঘদিন ধরে এই কলেজে রাজ করছে কীভাবে? মনে করছে, দলীয় নেতাদের মদত থাকলে যা খুশি করা যায়। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তো এসব শেখাননি, এমন ঘৃণ্য কাজ করতে বলেননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক কষ্ট করে এই দলটা দাঁড় করিয়েছেন, তিনি এমন খারাপ ঘটনার বিরুদ্ধে সব সময় ছিলেন, আজও আছেন। আমি নিজে তৃণমূল কংগ্রেস করি। আমাকে বা অন্যদেরও এমন কোনও কুকীর্তি করতে হয়নি।” এরপরই তিনি বলেন, “আমার ছাত্রীকে গণধর্ষিতা হতে হয়েছে। তাই যতদিন সে বিচার না পাচ্ছে, ততদিন আমি তার হয়ে লড়ব। শেষ দেখে ছাড়ব। ফোনে আমায় বলা হচ্ছে, তুমি মামলা লড়ছ কেন? আমি বলেছি, ছাড়ব না। অপরাধীদের পক্ষ নিয়েও ফোন এসেছে। আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতি নয়। আমার ছাত্রী অত্যাচারিত হয়েছে, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.