সুদীপ রায়চৌধুরী: দেশগঠনে বাংলা ও বাঙালির অবদান সর্বজনবিদিত। সেই স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে আধুনিক সমাজ গড়া – বাঙালিই সর্বাগ্রে। সম্প্রতি ভিনরাজ্যে বাঙালি নির্যাতনের ভুরি ভুরি অভিযোগের মাঝে একথা বারবার মনে করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডাক দিয়েছেন অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার। শাসকদল হিসেবে তৃণমূলও সেই সুরে শান দিয়েছে বাঙালি অস্মিতায়। সমগ্র বাঙালি জাতিকে একজোট করার অঙ্গীকার শোনা গিয়েছে তাঁদের গলায়। ছাব্বিশের নির্বাচনের আগে এবার তারই পালটায় ফের ময়দানে নামছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ। এবার হিন্দুত্বে শান দিয়ে ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ’ আসরের আয়োজন করছে সনাতন সংস্কৃতি সংসদ। তবে এবারের লক্ষ্যমাত্রা আরও বেশি। আগামী ৭ ডিসেম্বর ব্রিগেডে পাঁচ লক্ষ জমায়েত চান উদ্যোক্তারা।
গত ২০২৩ সাল থেকে কলকাতার ব্রিগেড ময়দানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ’। সনাতন সংস্কৃতি সংসদের উদ্যোগে এই অনুষ্ঠান হলেও পরিকল্পনায় আরএসএস। পরের বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার তোড়জোড় শুরু করেছে সকলেই। সূত্রের খবর, এবার বঙ্গের ভোটে নিজেদের শক্তি প্রকাশে আরএসএসের সাহায্য চায় বিজেপি। এক্ষেত্রে অস্ত্র একমাত্র হিন্দুদের সমর্থন একত্র করে ভোটবাক্সে নিয়ে আসা। শাসকদলের শক্তি যেমন বাঙালি অস্মিতা, তেমনই সংঘের হাতিয়ার হিন্দু অস্মিতা। এখানে ভাষা অগ্রাধিকার নয়, বরং বিভিন্ন ভাষাভাষীর হিন্দুদের সমর্থন পাওয়াই গেরুয়া শিবিরের লক্ষ্য।
জানা গিয়েছে, রবিবার কলকাতায় ‘গীতা মনীষী’ স্বামী জ্ঞানানন্দের উপস্থিতিতে এনিয়ে প্রস্তুতি বৈঠক হয়েছে। গত বছর দ্বারকার শংকরাচার্য দয়ানন্দ স্বামী এসেছিলেন ব্রিগেডের গীতা পাঠ অনুষ্ঠানে। এবছর আসতে পারেন কুরুক্ষেত্রের স্বামী জ্ঞানানন্দ, যিনি গীতা নিয়ে সারা বিশ্বে কাজ করছেন। তবে শীতের শহরে ৫ লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠের বিপুল আয়োজনে যেভাবে হিন্দু ভোট নিজেদের ঝুলিতে ভরতে চাইছে গেরুয়া শিবির, তা কতটা সফল হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.