বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: রাজ্যপাল ইস্যুতে এবার বিরোধী দলনেতার সঙ্গে অবস্থানগত বিরোধ প্রকাশ্যে এল বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতির। আনন্দ বোসকে নিয়ে কার্যত দুই মেরুতে শুভেন্দু অধিকারী ও শমীক ভট্টাচার্য। যেখানে কথায় কথায় রাজভবনে ছোটেন বিরোধী দলনেতা, সেখানে সোমবার শমীক ভট্টাচার্য রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন। তাঁর মন্তব্য, ”রাজ্যে একটি রাজভবন আছে। সেখানে একজন রাজ্যপাল আছেন। তাঁর দায়িত্ব সংবিধান রক্ষা। অথচ আমাদের রাজ্যে কোনও রাজ্যপাল আছেন তা বোঝার উপায় নেই।” রাজভবনের বদান্যতায় রাজ্য সরকার চলছে বলে মনে করছে সাধারণ মানুষ। আর মানুষের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে বিজেপিকে নাস্তানাবুদ হতে হচ্ছে, এমনই অভিযোগ শমীকের।
বঙ্গ বিজেপির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পরেই হিন্দু-মুসলিম ইস্যুতে বিরোধী অবস্থান নেন গেরুয়া শিবিরের দুই শীর্ষ নেতা। বিরোধী দলনেতা বারবার হিন্দু ভোটারদের একত্রিত করার আহ্বান জানাচ্ছিলেন। ঠিক তখনই দলের রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে মুসলিমদের উদ্দেশে ইতিবাচক বার্তা দেন শমীক। জানান, বিজেপি মুসলিমদের দূরে ঠেলে দিতে চায় না। বরং তাঁদের হাতে লাঠি, বোমার বদলে বই ও পেন তুলে দিতে চায়। শমীকের বক্তব্যের পরেই বিতর্ক শুরু হয় দলের অভ্যন্তরে। তাঁর নেতৃত্বে বঙ্গ বিজেপি রাজনৈতিক লাইন পরিবর্তন করছে বলে মনে করছিল রাজনৈতিক মহল।
এবার রাজ্যপাল ইস্যুতেও শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করতে দেখা গেল রাজ্য বিজেপির নয়া সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যকে। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যে সমস্ত সাংবিধানিক সংস্থাগুলি আক্রান্ত, আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। অথচ রাজ্যপাল কোনও সদর্থক ভূমিকা পালন করছেন না। দলের কর্মী ও সাধারণ মানুষ রাজ্যপালকে নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলছেন বলেও জানান শমীক।
আশ্চর্যজনকভাবে, বিজেপির রাজ্য সভাপতি হওয়ার পর রাজ্যপালের সঙ্গে একবারের জন্যও সাক্ষাৎ করেননি শমীক ভট্টাচার্য। কিন্তু হরিয়ানায় নবনিযুক্ত রাজ্যপাল প্রাক্তন রাজ্য বিজেপির সভাপতি অসীম ঘোষের সঙ্গে দু-দু’বার দেখা করেছেন। রাজনৈতিক মহলের মতে, শমীকের এই আচরণ দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে একটি বার্তা। বঙ্গ বিজেপির একাংশ যে আর আনন্দ বোসকে রাজ্যপাল হিসাবে চাইছেন না, সেটাই স্পষ্ট করে দিতে চাইছেন নবনিযুক্ত রাজ্য সভাপতি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.