স্টাফ রিপোর্টার: গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বন্ধ না হলে দলের স্বার্থে নিজেদের মধ্যে অশান্তি করা দু’পক্ষের বিরুদ্ধেই একসঙ্গে কড়া ব্যবস্থা নেবে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রয়োজনে দলীয় সংগঠন মজবুত করতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জড়িত দু’জনকেই সরিয়ে দেবে দল। শুক্রবার পশ্চিম বর্ধমান ও কৃষ্ণনগর, তৃণমূলের দুই সাংগঠনিক জেলার নেতাদের নিয়ে বৈঠকে এমনই কড়া সতর্কবার্তা শুনিয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, গত কয়েকবছর ধরে কৃষ্ণনগর ও পশ্চিম বর্ধমান (আসানসোল কেন্দ্রিক), দুই সাংগঠনিক জেলাতেই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শুধু প্রকাশ্যেই আসছে না, সংবাদমাধ্যমেও হেডলাইন হচ্ছে। বিশেষ করে কৃষ্ণনগরের জেলা সভাপতি সাংসদ মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে জেলার বিধায়করা সবাই একসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও অভিযোগ করেছিলেন। আসানসোল ও দুর্গাপুরের ক্ষেত্রেও শ্রমিক সংগঠন ও খনি এলাকার দখল নিয়েও তৃণমূল নেতারা একে অপরের বিরুদ্ধে তোপ দাগছেন। গোটা বিষয়টিতে যে দলের শীর্ষনেতৃত্ব প্রচণ্ড বিরক্ত তা এদিন স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন অভিষেক। দুই বৈঠকেই ছিলেন রাজ্য তৃণমূল সভাপতি সুব্রত বক্সি।
কৃষ্ণনগর ও পশ্চিম বর্ধমানকে এদিন কলকাতার ক্যামাক স্ট্রিটের বৈঠকে দলের প্রধান সেনাপতির বার্তা, “দলীয় বিবাদ ভুলে, ব্যক্তিস্বার্থে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ছেড়ে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিজেপির কুৎসা ও অপ্রচারের বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের বার্তা নিয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচারে নেমে পড়ুন। দল শক্তিশালী হলে, সংগঠন মজবুত হলে আমরা সবাই নিশ্চিন্তে মানুষের কাজ করতে পারব। কিন্তু গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বন্ধ না হলে, দলীয় সংগঠনের শুধু ক্ষয় হবে না, মানুষ তিতিবিরক্ত হলে স্থানীয় স্তরে তৃণমূলের ক্ষতি হবে। হবে দেরি না করে, বিবাদ ভুলে কাল থেকেই সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামুন।”
যদিও বৈঠক শেষে বাইরে এসে পশ্চিম বর্ধমানের তৃণমূল সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী দাবি করেন, “জেলায় কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই, তবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সবাইকে একসঙ্গে মাঠে নামতে বলেছেন। টার্গেট বেঁধে দিয়ে বলেছেন, জেলার নয়টি আসনেই আগামী ভোটে জোড়াফুলকে জিততেই হবে।”
উল্লেখ, ২০২১ সালের ভোটে দুর্গাপুর পশ্চিম, আসানসোল দক্ষিণ ও কুলটি- তিন আসনে বিজেপি জয়ী হয়েছিল। কিন্তু এবার তিনটি আসনই উদ্ধার করার টার্গেট বেঁধে দিয়েছেন অভিষেক। প্রথম বৈঠকে ছিলেন মন্ত্রী মলয় ঘটক, প্রদীপ মজুমদার, তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধান উপাধ্যায় প্রমুখ।
কৃষ্ণনগরের সাংসদ তথা জেলা সভাপতি মহুয়ার বিরুদ্ধে বিধায়কদের নানা ক্ষোভ থাকলেও অভিষেকের সামনে দ্বিতীয় বৈঠকে তা নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। তবে একইভাবে জেলায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বন্ধে সকলকে সতর্ক করে শীর্ষনেতৃত্ব। ছাত্র-যুবদের আরও বেশি করে রাস্তায় নেমে গণ-আন্দোলন করার পরামর্শও দেন তিনি। এসআইআর নিয়ে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় নদিয়ার জনপ্রতিনিধিদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনেরও জন্য গাইডলাইন দিয়েছেন অভিষেক। বৈঠকে ছিলেন মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, বিধায়ক কল্লোল খাঁ, আলিশা খাতুন, রুকবানুর রহমান, যুব সভাপতি অয়ন দত্ত প্রমুখ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.