Advertisement
Advertisement
Kolkata Taxi

হাওড়া-শিয়ালদহ রুটে মেট্রো চালু হতেই উধাও ট্যাক্সির যাত্রী! মাথায় হাত চালকদের

অস্তিত্ব আরও সঙ্কটে।

Taxi passengers disappear as soon as the metro starts on the Howrah-Sealdah route
Published by: Suhrid Das
  • Posted:August 27, 2025 9:20 am
  • Updated:August 27, 2025 9:29 am   

নব্যেন্দু হাজরা: অ‌্যাপ ক‌্যাব আসার পরই কিছুটা ধাক্কা খেয়েছিল। আর মেট্রোপথে হাওড়া-শিয়ালদহ-বিমানবন্দর জুড়ে যাওয়ায় তার কফিনে শেষ পেরেকটাও সম্ভবত পুঁতে গেল। হলুদ ট‌্যাক্সি। কলকাতার নস্ট‌ালজিয়া। কলকাতার আইকনও বটে। সোমবার থেকে তার অস্তিত্ব আরও সঙ্কটে। হাওড়া, শিয়ালদহ স্টেশন এবং বিমাবন্দরের যাত্রীদের ভরসায় তবু তার চাকা গড়াচ্ছিল। কিন্তু দিন দুই হল, সেখানকার ট‌্যাক্সিস্ট‌্যান্ডে ভাটা। ভরসা বলতে অধিক রাতের ট্রেনে ফেরা দূরপাল্লার যাত্রীরা। কিন্তু তা দিয়ে গোটা দিনের খরচ ওঠানো মুশকিল। স্বাভাবিকভাবেই কপালে চিন্তার ভাঁজ তাঁদের। তবে কি চিরতরেই বসে যাবে কলকাতার নস্ট‌ালজিয়া হলুদ ট‌্যাক্সি!

Advertisement

বছর দশেক আগে থেকেই অ‌্যাপ ক‌্যাবের বাড়বাড়ন্ত শহরে। আর তাদের আসার সময় থেকেই হলুদ ট‌্যাক্সির ধুঁকতে থাকা শুরু। ভাড়ার নামে চালকদের জুলুমবাজি, মিটারে না যাওয়া, ভাঙা জানালা, এসিহীন ছেঁড়া-সিটের লজঝড়ে ট‌্যাক্সির প্রতি কার্যত বিরক্ত হয়ে উঠছিলেন সাধারণ মানুষও। তাও বিমানবন্দর এবং হাওড়া, শিয়ালদহ স্টেশনের প্রিপেড বুথ বা সেখানকার স্ট‌্যান্ড থেকে যাত্রীরা এই ট‌্যাক্সিতে চড়েই গন্তব্যে যেতেন। কিন্তু ধর্মতলা, শিয়ালদহ মেট্রোপথে জুড়ে যাওয়ার পর যাত্রীরা দূরপাল্লার ট্রেন থেকে নেমেও মেট্রোতেই চড়ছেন। খরচ কম, সেই সঙ্গে আরামে এসির হাওয়া খেয়ে গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়া। স্বাভাবিক নিয়মেই তাই মাছি তাড়াচ্ছে হলুদ ট‌্যাক্সির চালকরা।

এই ট‌্যাক্সিকে ঘিরে শহরের অনেক নস্ট‌ালজিয়া, আবেগ, অনুভূতি। কিন্তু সেই নস্ট‌ালজিয়াই এবার বিলুপ্তির পথে। শহরের লাইফলাইনের বিস্তারে অস্তিত্ব সঙ্কটে কলকাতার ঐতিহ‌্য। চালকরা জানাচ্ছেন, অ‌্যাপ ক‌্যাব আসার পর থেকেই যাত্রী কমতে শুরু করে। যাত্রীরা এসি গাড়ি ছেড়ে ট‌্যাক্সিতে উঠতে চান না। অ‌্যাপে তাঁরা ক‌্যাব বুক করেন, যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে। রোজগার কমে যাওয়ায় অনেকেই ট‌্যাক্সি চালানো ছেড়ে দেন। তারপর ১৫ বছরের গেরোতে বহু ট‌্যাক্সি বসে গিয়েছে। এখন মেরেকেটে হাজার চারেক রাস্তায় বেরোয়। চালকদের কথায়, আগে তাও মালিককে ভাড়া দিয়ে, তেল ভরে দিনে পাঁচ-ছ’শো টাকা থাকত। কিন্তু মেট্রোর বিস্তারে এখন সেটাও থাকছে না।

ট‌্যাক্সি সংগঠন জানাচ্ছে, কমতে কমতে এখন শহরে হলুদ ট‌্যাক্সির সংখ‌্যা সাড়ে তিন থেকে চার হাজারে এসে ঠেকেছে। ডিসেম্বরে আরও হাজার দেড়েক বসে যাবে ১৫ বছর হয়ে যাওয়ার কারণে। তারপর যে ক’টা থাকবে, তা চালিয়ে চালকদের খাওয়ার খরচও উঠবে না। আর তাই বিকল্প পথ খুঁজে পেতে মরিয়া চালকরা। যাত্রীদের কথায়, এখন মেট্রো ঘিরেছে শহর-শহরতলি। অনেক কম খরচে যাতে চড়ে যাত্রীরা নিশ্চিন্তে যানজট এড়িয়ে এসির হাওয়া খেতে খেতে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছে যেতে পারছেন। এআইটিইউসি অনুমোদিত ওয়েস্ট বেঙ্গল ট‌্যাক্সি অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটির আহ্বায়ক নওয়াল কিশোর শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘সব দিকে মেট্রো চালু হওয়ায় ট‌্যাক্সির যাত্রী অনেক কমে গিয়েছে। ফলে আমরা সরকারের কাছে ট‌্যাক্সিচালক এবং তাঁদের সংসারকে বাঁচাতে বিকল্প রুজিরোজগারের ব‌্যবস্থা করে দেওয়ার আবেদন জানাব।’’

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ