Advertisement
Advertisement

Breaking News

Durga puja 2025

এসবি পার্কে মোগলমারি! এবার পুজোয় বেহালার মাটি ফুঁড়ে উঠে আসবে বৌদ্ধ সভ্যতার ইতিহাস

কোথায় ছিল সেদিনের তাম্রলিপ্ত?

The history of Buddhist civilization is emerging from the soil of Vehala in SB Park

প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক। ছবি: শুভ্ররূপ বন্দ্যোপাধ্যায়

Published by: Suhrid Das
  • Posted:September 2, 2025 6:20 pm
  • Updated:September 2, 2025 6:46 pm   

অভিরূপ দাস: পরিব্রাজক হিউয়েন সাং তাঁর গ্রন্থে বাংলার চার প্রদেশের কথা বলেছিলেন। পুণ্ড্রবর্ধন, সমতটী, কর্ণসুবর্ণ আর তাম্রলিপ্ত। সেই ‘সি-ইউ-কি’ গ্রন্থ থেকে জানা যায়, তাম্রলিপ্ত রাজ্যে ১০টি বৌদ্ধবিহার ও এক হাজার বৌদ্ধ সন্ন‌্যাসী ছিলেন। কোথায় ছিল সেদিনের সেই তাম্রলিপ্ত? ঐতিহাসিকরা মনে করছেন বর্তমান বাংলার পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনের মোগলমারিই হল কয়েক হাজার বছর আগের তাম্রলিপ্ত।

Advertisement

তাম্রলিপ্ত বলতে মানচিত্রে যে অংশটা বোঝায়, তার মধ্যে একমাত্র এই অঞ্চলেই মাটির তলা থেকে উঠে এসেছে আস্ত বৌদ্ধবিহার! মোগলমারি! বাংলার বিস্ময়! পৃথিবীর আশ্চর্য। এমনটাই বলছেন কলকাতা বিশ্ববিদ‌্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ‌্যাপক দুর্গা বসু, রাজ‌্য সংগ্রহশালার প্রাক্তন কিউরেটর সুমিতা গুহসরকার। ঠাকুরপুকুর স্টেট ব‌্যাঙ্ক পার্ক সর্বজনীন দুর্গোৎসবে ৫৫ তম বছরে উঠে আসছে সেই মোগলমারি। যে অঞ্চলের মাটির তলায় কথা বলে ইতিহাস। খননে উঠে এসেছে একের পর এক বৌদ্ধমূর্তি। কোনওটা ধ্যানমুদ্রা, কোনওটা অভয়মুদ্রা।

The history of Buddhist civilization is emerging from the soil of Vehala in SB Park
প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠকে নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী, গৌতম ঘোষ-সহ অন্যান্যরা। ছবি: শুভ্ররূপ বন্দ্যোপাধ্যায়

সোমবার প্রেস ক্লাবে থিম প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুরাণবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী, পরিচালক গৌতম ঘোষ। ঠাকুরপুকুর এসবি পার্কে এবার যাঁর ছোঁয়ায় উঠে আসছে মোগলমারি, তিনি রাজু সরকার। শিল্পী জানিয়েছেন, ‘‘দুই স্থানের মধ্যে দূরত্ব ১৩৭ কিলোমিটার। বেহালা এস বি পার্কে এলে মনে হবে মিটে গিয়েছে সেই দূরত্ব। আস্ত বৌদ্ধবিহার যেন মাটি ফুঁড়ে উঠে এসেছে এখান থেকেই।’’ প্রত্নকথা থিমের সঙ্গে মানানসই দুর্গামূর্তি। সে মূর্তিতেও বৌদ্ধধর্মের ছাপ স্পষ্ট। জানা গিয়েছে, বৌদ্ধধর্মের তারামূর্তি দেখা যাবে এই পুজোর অঙ্গনে। পুরাণবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী জানিয়েছেন, বৌদ্ধধর্মে তারা হলেন একজন ত্রাণকর্তা দেবী, মহাযান ও বজ্রযান সম্প্রদায়ে পূজিত হন তিনি। তিনি অবলোকিতেশ্বরের অশ্রু থেকে জাত এবং তাঁকে মা হিসাবে বর্ণনা করা হয়। মোগলমারি নিয়ে তথ‌্যচিত্র তৈরি করেছিলেন পরিচালক গৌতম ঘোষ। দীর্ঘদিন কাটিয়েছেন সে এলাকায়। তাঁর তৈরি করা মৌলিক সে তথ‌্যচিত্রের একটি অংশ দেখা যাবে এবারের এস বি পার্ক দুর্গাপুজো প্রাঙ্গণে।

এত থিম থাকতে মোগলমারি কেন? এস বি পার্ক দুর্গাপুজোর কর্মকর্তা সঞ্জয় মজুমদার জানিয়েছেন, যাঁরা বলেন বাংলার ইতিহাস নেই, সেই অভিযোগের দৃপ্ত প্রতিবাদ, ইতিহাস-মিথ-জনশ্রুতি বুকে নিয়ে হাজার হাজার বছর পথ পেরিয়ে আসা এই মোগলমারি। যেখানে এখনও মাটির তলায় লুকিয়ে গুপ্তোত্তর যুগের মুদ্রা, নকশা, ইট, দেবদেবীর মূর্তি। মনে করা হয় ১৫৭৫ সালে মেদিনীপুর আর জলেশ্বরের(ওড়িশা) মাঝামাঝি তুকারুই নামে এক স্থানে মোগল ও পাঠানের যুদ্ধ হয়। সেই যুদ্ধে মোগলদের বহু ক্ষয়ক্ষতি হয়। মারা যায় অসংখ‌্য মুঘল। সেই থেকেই হয়তো মোগলমারি নামের উৎপত্তি। এবার এ পুজোর ব্র‌্যান্ড অ‌্যাম্বাসাডর অভিনেত্রী সম্পূর্ণা লাহিড়ী। তথ‌্য সংগ্রহ করে পুজোয় সহায়তা করেছেন অতনু প্রধান। যাঁর লেখা বই থেকে সাহায‌্য নিচ্ছেন থিম নির্মাতা।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ