স্টাফ রিপোর্টার: ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে আইনি জটিলতায় নিয়োগ বা ভর্তি প্রক্রিয়া অযথা বন্ধ রাখার কোনও প্রয়োজন নেই। রাজ্য সরকার এ বিষযে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে পারবে। বৃহস্পতিবার কলকাতা পুরসভার নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় জানাল কলকাতা হাই কোর্ট। এর ফলে ওবিসি সংক্রান্ত নিয়োগ ও ভর্তির ক্ষেত্রে যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল, তা কাটল বলেই মনে করছে আইন বিশেষজ্ঞরা। তবে এদিন একটি শর্তের কথা শুনানি চলাকালীন ফের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ। হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের যে নির্দেশ রয়েছে, অর্থাৎ রাজ্য সরকারের নয়া বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নয়, নিয়োগ বা ভর্তি প্রক্রিয়া করতে হবে পুরনো ২০১০ সালের ওবিসি সংরক্ষণের তালিকা অনুযায়ী। সেক্ষেত্রে ৬৬টি শ্রেণি এবং তৎকালীন ৭ শতাংশ সংরক্ষণ নীতি মেনেই রাজ্য এগোতে পারবে।
মঙ্গলবারই ওবিসি মামলায় হাই কোর্ট রাজ্য সরকারের করা নয়া সংরক্ষণ তালিকার উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছিল। ফলে নিয়োগ বা ভর্তির ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। এরই মধ্যে কলকাতা পুরসভা ৭৮টি শূন্য পদে সাব অ্যাসিট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পদে নিয়োগের জন্য যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল, তা নিয়েও মামলা হয়। নয়া ওবিসি তালিকা ধরে কলকাতা পুরসভা কীভাবে বিজ্ঞপ্তি দিল, সেই প্রশ্ন ওঠে। মামলায় পুর কর্তৃপক্ষের জবাব চেয়ে কলকাতা পুরসভার কমিশনার ও মিউনিসিপ্যাল রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যানকে এদিন ভারচুয়াল শুনানিতে হাজির থাকার নির্দেশ দেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ। মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি চন্দ মামলার একটি অংশের ব্যাখ্যা দিয়ে জানান, নয়া তালিকার উপর স্থগিতাদেশ থাকলেও নিয়োগের ক্ষেত্রে তার কোনও সম্পর্ক নেই। পুরনো যে তালিকা রাজ্যের রয়েছে, সেই অনুযায়ী নিয়োগ করা যেতেই পারে। আইনি মহলের বক্তব্য, এর ফলে এখন নিয়োগ বা ভর্তিতে আর কোনও বাধা রইল না। তবে রাজ্যকে হাই কোর্টের নির্দিষ্ট করে দেওয়া শর্ত মানতেই হবে। যদিও এই সংক্রান্ত মূল মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে রয়েছে। সেদিকেও তাকিয়ে রয়েছে বিশেষজ্ঞরা।
এদিন পুরসভার আইনজীবীরা জানান, ওবিসি সংক্রান্ত ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ তাঁদের কাছে স্পষ্ট ছিল না। তাই এই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল কলকাতা পুরসভা। এরপরই বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়ে বিচারপতি কৌশিক চন্দের নির্দেশ, ৬৬ টি সম্প্রদায়কে নিয়েই শুরু করতে হবে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া। নিয়মমতো, কলকাতা পুরসভাকে এদিনই শূন্যপদে নিয়োগের অনুমতি চেয়ে রাজ্যের কাছে আবেদন জানাতে হবে। আদালতের আরও নির্দেশ, আবেদনের ৭ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় অনুমতি দেবে রাজ্য। তারপর বাকি নিয়ম মেনে নিয়োগ চলবে বলে জানান বিচারপতি। এদিন বিচারপতি চন্দের মন্তব্য, ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ না মানা নিয়ে একে অপরকে দোষারোপ করছে পুরসভা এবং মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশন। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চ আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছে ২০১০ সালের ওবিসি তালিকা অনুযায়ী নিয়োগ বা ভর্তিতে বাধা নেই। এর আগেও প্যারা মেডিক্যালে ভর্তি ও মেধাতালিকা প্রকাশ এবং নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় কাউন্সেলিংয়ে সুযোগে একই মত প্রকাশ করেছিল হাই কোর্টের দুই সিঙ্গল বেঞ্চ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.