দিশা আলম, বিধাননগর: দেনার দায়ে জেরবার। আর্থিক অনটনে জীবন শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত। সম্ভবত ঘুমের ওষুধ থেকে একই পরিবারের তিনজন আত্মহত্যার পরিকল্পনা করেন। দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজারহাটের নারায়ণপুরে ব্যাপক চাঞ্চল্য। নারায়ণপুর থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
রাজারহাটের নারায়ণপুর দেবী পার্ক এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয় দে। স্ত্রী ও শাশুড়ির সঙ্গে থাকতেন তিনি। স্থানীয় সূত্রে খবর, ভালোই আয় ছিল তাঁর। তবে সম্প্রতি আর্থিক সংকটে ভুগছিলেন। তার ফলে বাজারে নাকি প্রচুর পরিমাণ ধার দেনা হয়ে গিয়েছিল। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে যায় যে নিজের গাড়ি, বাড়িও বিক্রি করে দিয়েছিলেন। বর্তমানে স্ত্রী ও শাশুড়িকে নিয়ে ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তাঁদের কারও দেখা পাওয়া যায়নি। পরে সন্ধেবেলা বাড়ির দরজায় ডাকাডাকি শুরু করেন প্রতিবেশীরা। তাঁদের সাড়াশব্দ না পেয়ে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। ভিতর থেকে বন্ধ থাকায় দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে পুলিশ। ঘরে ঢুকে পুলিশ দেখে জামাই সঞ্জয় দে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। স্ত্রী ও শাশুড়ির মৃত্যু হয়েছে। সঞ্জয়বাবুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাকি দু’জনের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। দু’জনের মৃত্যু হলেও, সঞ্জয়বাবু প্রাণে বেঁচে যান। এই ঘটনায় একাধিক প্রশ্নের জট। কী কারণে বাজারে এত টাকা ধার হয়ে গেল তাঁর, কাদের থেকেই বা টাকা ধার নিয়েছিলেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। আপাতত প্রতিবেশী এবং পরিবারের অন্যান্যদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সম্পর্কে তথ্য জোগাড়ের চেষ্টায় তদন্তকারীরা। বলে রাখা ভালো, এই ঘটনা যেন আরও একবার ট্যাংরা কাণ্ডের স্মৃতি উসকে দিয়েছে। সেখানে দুই ভাই তাঁদের স্ত্রী ও সন্তানকে খুন করে আত্মহত্যার পরিকল্পনা করে। পরিবারের এক কন্যাসন্তান-সহ দুই মহিলার মৃত্যু হয়। পরিবারের একমাত্র পুত্রসন্তান-সহ দুই ভাই অবশ্য প্রাণে বেঁচে যান। এই ঘটনায় এখনও চলছে তদন্ত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.