Advertisement
Advertisement

Breaking News

Child Marriage

বাল্যবিবাহ রুখতে ছেলেদেরও সচেতন করবে রাজ্য, ইউনিসেফের অনুষ্ঠানে বার্তা শশীর

রাজ্য থেকে বাল্যবিবাহ নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর পশ্চিমবঙ্গ সরকার।

WB govt. will sensitize boys to prevent child marriage Shashi Panja says on UNICEF program
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:May 27, 2025 5:17 pm
  • Updated:May 27, 2025 5:19 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যে বাল্যবিবাহ আরও কমাতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার মেয়েদের পাশাপাশি এবার ছেলেদেরও এই সামাজিক কুপ্রথা সম্পর্কে সচেতন করবে। কিশোর-কিশোরীদের ক্ষমতায়ন সম্পর্কিত ইউনিসেফ আয়োজিত আলোচনা সভায় এই বার্তা দিলেন রাজ্যের নারী ও শিশুবিকাশ এবং সমাজকল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী ডা. শশী পাঁজা।

Advertisement

আলোচনা সভায় এদিন শশী বলেন, “এখন শুধু মেয়েদের নয়, ছেলেদেরও বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। ছেলেরা যাতে তাদের বিবাহের বৈধ বয়সের আগে বিয়ে না করে সেই বিষয়ে তাদের উৎসাহিত করতে হবে।” ইউনিসেফ আয়োজিত এই আলোচনা সভায় বিভিন্ন দপ্তরের সেই আধিকারিকরা ছিলেন, যাঁরা বাল্যবিবাহ রোধে জেলায়-জেলায় কাজ করছেন। শশী তাঁদেরকে এই কাজের সাফল্য এবং প্রতিবন্ধকতা নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানান। এরপর মন্ত্রী শশী পাঁজা, দপ্তরের সচিব সংঘমিত্রা ঘোষ, পশ্চিমবঙ্গে ইউনিসেফের প্রধান ডা. মনজুর হোসেন এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা শোনেন।  

বিগত তিন বছর ধরে ইউনিসেফ ও রাজ্য সরকার যৌথ ভাবে জেলায় জেলায় বাল্যবিবাহ রোধে কাজ করছে। জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষা-৫ (NFHS-5)-এর তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যে প্রায় ৪১ শতাংশ মেয়ের অপ্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় বিয়ে হয়ে যায়। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাল্যবিবাহ হয় পূর্ব মেদিনীপুর (৫৭%), এরপর পূর্ব বর্ধমান (৫০%)। সবচেয়ে কম বাল্যবিবাহ হয় জলপাইগুড়িতে (১৮%)।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিরিক্ত জেলাশাসক এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজ্যে অনেক ছেলে ২১ বছরের কম বয়সে বিয়ে করে। এই বিষয়ে শশীর পরামর্শ, “এই ঘটনা বন্ধ করতে সমাজে সচেতনতা তৈরি করাই একমাত্র উপায়। মেয়ে ও মহিলাদের সঙ্গে বাল্যবিবাহ সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনা সভাগুলিতে পুরুষ এবং ছেলেদের আরও বেশি করে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।”  তিনি এদিনের সভায় ‘পশ্চিমবঙ্গ বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধকরণ আইন ২০০৬ বাস্তবায়নের নির্দেশিকা’ প্রকাশ করেন।

রাজ্য সরকার, ইউনিসেফের সহযোগিতায় বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের জন্য ২০২২ সালে একটি জেলা কর্মপরিকল্পনা তৈরি করে এবং ২০২৩ সালে অনলাইন-ভিত্তিক ‘বাল্যবিবাহ রিপোর্টিং এবং ট্র্যাকিং প্রক্রিয়া’ চালু করে। সেই প্রকল্পের অগ্রগতিও এদিনের আলোচনায় উঠে আসে।মাননীয়া মন্ত্রী আরও বলেন, আজকের কিশোর-কিশোরীরা মোবাইল, সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাবে নানা রকম প্রলোভনে পড়ছে। ওদের সঙ্গে আরও সহানুভূতির সঙ্গে কাজ করতে হবে। তাঁর মতে কন্যাশ্রী প্রকল্প আজ মেয়েদের শুধু স্কুলে পাঠিয়ে তাদের অসময়ে বিয়ে প্রতিরোধই করছে না, তাদেরকে অনলাইন নিরাপত্তা শেখাতেও সাহায্য করছে।

দপ্তরের সচিব সংঘমিত্রা ঘোষ অনলাইন-ভিত্তিক ‘বাল্যবিবাহ রিপোর্টিং এবং ট্র্যাকিং প্রক্রিয়া’-কে নিয়মিত ব্যবহার করার জন্য সকলকে আহ্বান জানান। পশ্চিমবঙ্গে ইউনিসেফের প্রধান ডা. মঞ্জুর হোসেন বলেন, কিশোর-কিশোরীদের সামগ্রিক বিকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তিদের সমন্বিত এবং বহু-ক্ষেত্রীয় পদক্ষেপ প্রয়োজন। তিনি বলেন, “বাল্যবিবাহের মতো কুপ্রথাগুলোকে রোধ করার জন্য এবং কিশোর-কিশোরীদের ক্ষমতায়নকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তি, পঞ্চায়েত সদস্য, স্বনির্ভর গোষ্ঠী সমূহ, ধর্মীয় নেতা, শিক্ষক, ছাত্র, যুবক এবং কিশোর-কিশোরীদের আরও বেশি করে এই কাজে যুক্ত হতে হবে।”

এদিন উপস্থিত আধিকারিকরা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে তাদের সাফল্য ও চ্যালেঞ্জগুলি তুলে ধরেন। যেমন, স্কুল ও সম্প্রদায়ভিত্তিক সচেতনতা অভিযান, তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ, সফল ব্যক্তিত্বদের উদাহরণ, অ্যাপভিত্তিক রিপোর্টিং, হেল্পলাইন ব্যবহার এবং প্রেম করে পালিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাগুলির প্রতিরোধে বিশেষ কৌশল প্রণয়ন।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement