ছবি: প্রতীকী
কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: চাকরি খুঁজতে নামী ওয়েবসাইটে নিজের বায়োডাটা দিয়েছিলেন কলকাতার এক ব্যাক্তি। তাও আবার উচ্চপদের জন্য। সেই প্রোফাইলে দেখে তাঁকে সিঙ্গাপুরের এক সংস্থায় কর্ণধারের চাকরির টোপ দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার হলেন এক মহিলা। অপরাধের চক্র দেখে রীতিমতো তাজ্জব বিধাননগর সাইবার ক্রাইম (Cyber crime) বিভাগের তদন্তকারীরা। কসবায় বসে এই সাইবার প্রতারণা চক্র চালাচ্ছেন শুধু মহিলারাই!
ঘটনা মাস তিনেক আগেকার। কলকাতার জোত শিবরামপুরের বাসিন্দা পূর্ণাংশু বসু নামী ওয়েবসাইটে চাকরির জন্য আবেদন করেন গত অক্টোবরে। পরেরদিনই সেখান থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন মিস পায়েল নামে এক মহিলা। তিনি জানান যে সিঙ্গাপুরের এপসিলন টেলিকম নামে এক সংস্থায় জেনারেল ম্যানেজার পদের জন্য তাঁর বায়োডাটা উপযুক্ত। পূর্ণাংশুবাবু রাজি থাকলে ওই সংস্থায় ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে চাকরির পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। পূর্ণাংশুবাবু রাজি হন। পরেরদিনই ওই সংস্থা থেকে প্রযুক্তি বিভাগের প্রধান বলে পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি তাঁকে ইন্টারভিউয়ের জন্য বলেন। অনলাইনে ইন্টারভিউ হয়। তখনও বোঝা যায়নি, বিষয়টি পুরোটাই প্রতারণা।
এরপর ফের পায়েল নামের ওই মহিলা পূর্ণাংশুবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁর আগের চাকরির পে স্লিপ, অফার লেটার-সহ বেশ কয়েকটি তথ্য পাঠাতে বলেন। এর জন্য পায়েল নিজের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরও দেন পূর্ণাংশুবাবুকে। চাওয়া হয় পাসপোর্ট, ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্য। মহামারী পরিস্থিতিতে বিদেশে গিয়ে চাকরিতে যোগদানের জন্য প্রয়োজনীয় ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে কিছু টাকা ডিপোজিট রাখতে বলা হয় তাঁকে। ওই টাকা তিনি সংস্থায় যোগ দিলে ফেরত পাবেন বলেও জানায় পায়েল। প্রথম দফায় ১৪,৭৫০ টাকা দেওয়ার পরেরদিন আবার তাঁকে ৩০ হাজার টাকা দিতে বলা হয়। তখনই সন্দেহ হয় পূর্ণাংশুবাবুর। তিনি ওই টাকা অস্বীকার করেন। খোঁজখবর নিয়ে দেখেন, সিঙ্গাপুরের এপসিলন টেলিকম নামে যে অফিসে জেনারেল ম্যানেজার পদে তাঁকে নিয়োগের কথা বলা হচ্ছিল, তা আদৌ সিঙ্গাপুরেই নয়। সেই অফিসের ঠিকানা সল্টলেক সেক্টর ফাইভের আরডিবি বিল্ডিং।
এরপরই পূর্ণাংশুবাবু বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে তদন্তে নেমে প্রায় তিন মাস পর প্রতারণা চক্রের হদিশ পান তদন্তকারীরা। কসবার বিবেকনগর থেকে পূবালী মিত্র নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি আদতে উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহের বাসিন্দা। আপাতত থাকেন কসবায়। জানা গিয়েছে, এভাবে নামী ওয়েবসাইটে প্রতারণা চক্রের ফাঁদ পেতে গোটা চক্রটি পরিচালনা করছে মহিলারাই। চক্রের অন্যদের খোঁজ চলছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.