Advertisement
Advertisement
Durga Puja

বাড়ছে আরএসভি ভাইরাসের দাপট! শিশুকে নিয়ে দমবন্ধ ভিড়ে নয়, সতর্ক করলেন বিশেষজ্ঞরা

এই মুহূর্তে শহরের সরকারি হাসপাতালে কোথাও চল্লিশজন, কোথাও ত্রিশজন শিশু ভর্তি জ্বর-শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে।

Children should not be taken to crowd to avoid RSV virus during Durga Puja
Published by: Subhankar Patra
  • Posted:September 24, 2025 7:40 pm
  • Updated:September 24, 2025 7:40 pm  

অভিরূপ দাস: ধুম জ্বর। গলায় মারাত্মক ব্যথা, সঙ্গে শ্বাসকষ্ট। এমন উপসর্গ নিয়ে সরকারি হাসপাতালে উপচে পড়ছে শিশুদের ভিড়। শ্বাসকষ্ট প্রবল হলে শিশুকে দিতে হচ্ছে পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট বা পিকুতে। এদিকে সে বেডের সংখ্যা সীমিত। এই মুহূর্তে শহরের সরকারি হাসপাতালে কোথাও চল্লিশজন, কোথাও ত্রিশজন শিশু ভর্তি জ্বর-শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, এসএসকেএম, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ সর্বত্র একই ছবি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন পুজোর মুখে ফুসফুসের বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে রেসপিরেটরি সিনশিটিয়াল ভাইরাস বা আরএসভি।

Advertisement

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের শিশুরোগ বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডা. দিব্যেন্দু রায়চৌধুরি জানিয়েছেন, খটখটে রোদ। তারপরই হঠাৎ আকাশ কালো করে বৃষ্টি। তাপমাত্রার এই তারতম্যে মাথাচাড়া দিচ্ছে আরএসভি ভাইরাস। শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অপেক্ষাকৃত কম, ফলে সহজেই তাদের ফুসফুসে আক্রমণ করছে ভাইরাস।

সাধারণ জ্বর-সর্দির মতো উপসর্গ দিয়ে অসুখের শুরু। চিকিৎসায় দেরি হলে ব্রঙ্কিওলাইটিস-নিউমোনিয়া পর্যন্ত হচ্ছে এর থেকে। চারদিন বাকি দেবীর বোধনের এমতাবস্থায় সতর্ক থাকতে বলছেন চিকিৎসকরা। পুজোতেও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। প্রখ্যাত শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অপূর্ব ঘোষ জানিয়েছেন, হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায় এই ভাইরাস।

অভিভাবকদের কাছে অনুরোধ শুধুমাত্র নিজের আনন্দের জন্য বাড়ির খুদে সদস্যকে জোর করে ঠাকুর দেখতে নিয়ে যাবেন না। শহর কলকাতার নামজাদা পুজোগুলোয় ষষ্ঠী থেকে দশমী দমবন্ধ করা ভিড়। ঠাসাঠাসি ভিড়ে শিশুদের না নিয়ে যেতে অনুরোধ করছেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ। ডা. অপূর্ব ঘোষের বক্তব্য, ওই প্রচণ্ড ভিড়ে একটা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি হয়। মা-বাবারা নিজেদের ঠাকুর দেখার ইচ্ছা মেটাতে গিয়ে ছোটদের আরও কষ্ট দেন। শিশুকে কোলে নিয়ে দমবন্ধ ভিড়ে যাবেন না। ওই ভিড়ে ভাইরাস সংক্রমিত কেউ থাকলে শিশুর মধ্যে সংক্রমণ ছড়াবে দ্রুত। এই সেপ্টেম্বরে কলকাতা মেডিক্যালে শুধুমাত্র শিশুরোগ বিভাগের একটা ইউনিটে ১৪ জন ভর্তি হয়েছে আরএসভি ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে।

ডা. দিব্যেন্দু রায়চৌধুরির কথায়, অনেক শিশুকে আরএসভি ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস একসঙ্গে আক্রমণ করছে। চিন্তার বিষয় প্রবল শ্বাসকষ্ট দেখা যাচ্ছে শিশুর। অনেক সময় দিতে হচ্ছে হাই ফ্লো অক্সিজেনও। রাখতে হচ্ছে নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে। মেডিক্যাল কলেজের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাচ্চার তিনদিনের বেশি জ্বর থাকলে কিংবা ঝিমিয়ে পড়লে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের শিশুরোগ বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডা. দিব্যেন্দু রায়চৌধুরি জানিয়েছেন, শ্বাসকষ্টের সমস্যায় শরীরে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যায়। তাই ঝিমিয়ে পড়ে শিশু। চিকিৎসকদের নিদান, একান্তই যদি শিশুকে নিয়ে ঠাকুর দেখতে বেরোন কোনওরকম শীতল পানীয় বা আইসক্রিম দেবেন না। পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খাওয়াবেন শিশুকে। ঠাকুর দেখতে গিয়ে বৃষ্টি থেকে সাবধান! সঙ্গে অবশ্যই রাখুন ছাতা। চিকিৎসকদের উপদেশ, বাইরের স্ট্রিট ফুড থেকে দূরে রাখুন শিশুদের।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ