রকমারি হ্যান্ডমেড গয়না। ছবি: জয়ন্ত দাস।
ধীমান রায়, কাটোয়া: কদর বাড়ছে হ্যান্ডমেড জুয়েলারির। পাট, সুতো, কড়ি দিয়ে নানা নকশার আকর্ষণীয় সব গয়না তৈরি হচ্ছে। হার, কানের দুল থেকে শুরু করে হাতের বালা, পায়ের নুপূর – কী না বানাচ্ছেন কাটোয়ার অগ্রদ্বীপের মহিলারা! তার জেরে বাড়তি বরাতও পাচ্ছেন তাঁরা। বড়কুলগাছি, ছোটকুলগাছি গ্রামের দুই শতাধিক মহিলা পাট, সুতো ইত্যাদি দিয়ে গয়না তৈরি করেন। সেই সব গয়না এখন বিক্রি হচ্ছে অনলাইনেও। সংসার সামলে এসব গয়না বানিয়েই লক্ষ্মীলাভ হচ্ছে ঘরের ‘লক্ষ্মী’দের।
ভাগীরথী তীরবর্তী দুই গ্রাম – বড়কুলগাছি, ছোটকুলগাছি। এই সব গ্রামের মহিলারা স্বনির্ভর দল গড়েছেন। দলগতভাবেই তৈরি করেন হ্যান্ডমেড জুয়েলারি। হাতে তৈরি সেসব গয়না এখন পাড়ি দিচ্ছে লখনউ, মুম্বই, রাজস্থান, কেরল, দিল্লি-সহ বিভিন্ন রাজ্যে। সংসার সামলে মহিলারা গয়না তৈরি করেন। তাতে তাঁদের নিয়মিত লক্ষ্মীলাভও ঘটছে। সোনার দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। সোনা এখন প্রায় ১ লক্ষ ২০ টাকা ভরি। মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মহিলাদের কাছে সোনার গয়না মহার্ঘ্য। তাই বিকল্প হিসাবে হ্যান্ডমেড ও অক্সিডাইস জুয়েলারির দিকে অনেকেই ঝুঁকছেন।
পাট, সুতো, কড়ি, গামছা, পোড়ামাটির মতো সামগ্রী ব্যবহার করে তৈরি হচ্ছে দারুণ সব গয়না। তাতে জুড়ছে থিমও। দুর্গামূর্তি, ত্রিশূল, গণেশ, সরস্বতী, লক্ষ্মী – এরকম দেবদেবীর মুখাবয়বও গয়নার উপর ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। বড়কুলগাছির বৈশাখী মাঝি, টুকি মাঝি, সান্ত্বনা মাঝিরা জানান, তাঁদের গৃহকর্তারা কেউ মাঠে কাজ করেন। আবার কেউ ইটভাটার শ্রমিক। তাঁরা নিজেরা বাড়ির কাজ সামলে অবসর সময়ে গয়না তৈরি করছেন। প্রশিক্ষণও নিয়েছেন।
বৈশাখী মাঝি বলেন, ”এখন মাসে পাঁচ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় হচ্ছে। সংসারে স্বচ্ছলতা এসেছে।” উন্নতি মাঝি, সন্তোষী মাঝিরা বলেন, “অনলাইনে অর্ডার মিলছে। এছাড়া বিশেষ বিশেষ মরশুমে মেলায় বিক্রি হয়। এমনকি অন্যান্য রাজ্যে মেলায় আমরা অনেকে নিজেরাই নিজেদের পসরা সাজিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.