Advertisement
Advertisement
সীতাভোগ

১১৫ বছর পর স্বাদবদল, চিনির পরিবর্তে এবার বাজারে এল নলেন গুড়ের সীতাভোগ-মিহিদানা

বর্ধমানের বাজার কাঁপাচ্ছে নতুন স্বাদের মিষ্টি।

Some sweet shop owners change the taste of Burdwan's Sitabhog
Published by: Sayani Sen
  • Posted:January 10, 2020 8:06 pm
  • Updated:January 10, 2020 8:06 pm   

সৌরভ মাজি, বর্ধমান: সেই রাজার আমল থেকে একই স্বাদ বজায় রেখে তৈরি হত। ঐতিহ্যবাহী স্বাদের পরিবর্তন করার কথাও কেউ কোনওদিন ভাবেননি। মিষ্টিপ্রেমীরা হয়তো ভাবতে পারতেন না। ২০২০ সালে এসে প্রথমবার বর্ধমানের বিখ্যাত সীতাভোগ-মিহিদানার স্বাদের বদল ঘটল। চিনির মিষ্টতা আর মিলল না বর্ধমানের সীতাভোগ-মিহিদানায়। তবে আফশোস করার কিছু নেই। জন্মের শতাধিক বছর পরে এদিন থেকে সীতাভোগ-মিহিদানার সঙ্গে যুক্ত হল নলেন গুড়ের নামও। রসগোল্লার মতোই এবার বর্ধমানে মিলছে নলেন গুড়ের সীতাভোগ-মিহিদানা। নলেন গুড়ের মিষ্টতার সঙ্গে সুগন্ধও মিলছে সীতাভোগ-মিহিদানায়।

Advertisement

১৯৭৬ সালের ১৫ নভেম্বর আকাশবাণীর কলকাতা ‘ক’-তে প্রচারিত হয়েছিল বর্ধমানে মিষ্টান্ন শিল্পী নগেন্দ্রনাথ নাগের ভাষণপত্র। সেখানে নগেন্দ্রনাথবাবু লিখেছেন, বড়লাট লর্ড কার্জন বর্ধমানের রাজার আমন্ত্রণে শহরে এসেছিলেন ১৯০৪ সালের ১৯ আগস্ট। তাঁর আপ্যায়নে গোলাপবাগে ভোজসভা বসেছিল। সেখানে নগেন্দ্রনাথবাবুর বাবা ভৈরবচন্দ্র নাগের উপর দায়িত্ব পড়েছিল মিষ্টান্ন প্রস্তুতের ভৈরববাবু মিহি আকারে তৈরি দুই মিষ্টান্ন পরিবেশন করেছিলেন বড়লাটকে। যা খেয়ে লর্ড কার্জন ভূয়ষী প্রশংসা করেছিলেন। ভৈরববাবুকে শংসাপত্রও দিয়ে যান বড়লাট। তারপরে জহরলাল নেহরু, লালবাহাদুর শাস্ত্রীও খেয়েছিলেন সেই মিষ্টি। সীতাভোগ ও মিহিদানার স্বাদ সেই কার্জনের আমল থেকে একইরকম ছিল।

[আরও পড়ুন: একটি ইলিশ কিনলেই ১ কিলো পিঁয়াজ ফ্রি! অফারটি পেতে শিগগিরি যান শহরের এই বাজারে]

খাতায়-কলমে ১১৫ বছর পর বদল ঘটল সীতা-ভোগ মিহিদানার স্বাদের। বর্ধমান শহরে ভৈরবচন্দ্র নাগের হাতে জন্ম হলেও গণেশ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার খ্যাতি অর্জন করে এই মিষ্টি তৈরি ও বিপণনে। জগৎজোড়া নাম হয়েছে তাদের। তারাই এবার স্বাদের বদল ঘটালো সীতাভোগ-মিহিদানার। শুক্রবার থেকে তিনদিন নলেনগুড়ের বাহার মিলবে তাদের তৈরি সীতাভোগ মিহিদানায়। ওই সংস্থার কর্ণধার প্রসেনজিৎ দত্ত জানান, সেই রাজার আমল থেকেই একই স্বাদ ছিল সীতাভোগ-মিহিদানার। তাই নতুনত্বের ভাবনা। এই সময় নলেন গুড় পাওয়া যায়। তাই তাঁরা নলেন বাহার চালু করেছেন। দামটাও একটু বেশি করতে হয়েছে। চিনির ঘিয়ের সীতাভোগ প্রতি কেজি ২২০ টাকা। আর মিহিদানা ২০০ টাকা। নলেন গুড়ের সীতাভোগের দাম করা হয়েছে ২৬০ টাকা প্রতি কেজি। মিহিদানার দাম করা হয়েছে ২০ টাকা প্রতি কাপ নলেন গুড়টা যেহেতু গড়িয়ে যায় সেই কারণে কাপেই বিক্রি করছেন।

প্রসেনজিৎ বাবু বলেন, “নদিয়া জেলা থেকে আনা হয়েছে নলেন গুড়। বিশুদ্ধতা দেখে নেওয়া হয়েছে। বর্ধমানের সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে এটা করতেই হয়েছে। আশা করি শহরবাসী ও বাইরে থেকে যাঁরা এখানে কিনতে আসেন তাঁদের পছন্দ হবে স্বাদ।” নলেন গুড়ের প্রতি ভোজনরসিক আলাদা একটা টান রয়েছেই। এবার তার সঙ্গে সীতাভোগ-মিহিদানার নাম জড়িয়ে অনেকেরই যে নালে-ঝোলে অবস্থা তা এদিন দোকানে ভিড় দেখেই বোঝা গিয়েছে।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ