সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একটা দুটো কথা ভুলতে শুরু করেছেন? এরপর ধীরে ধীরে কাছের মানুষজনকেও! অবশেষে নিজের নামটুকুও আর মনে রাখতে পারছেন না? এমনই অবস্থা দেখা দেয় অ্যালঝাইমার্স থেকে শুরু করে পারকিনসন্স কিংবা ডিমেনশিয়ার মতো দুরারোগ্য ব্যাধির ক্ষেত্রে। এই অসুখ কাবুতে রাখার কোনও চিকিৎসাপদ্ধতি এখনও সে ভাবে আসেনি। আপাতত স্মৃতিশক্তি সম্পূর্ণ নষ্ট করে ফেলার এই রোগগুলিকে নিয়ন্ত্রণে রাখার নানা পদ্ধতি নিয়েই গবেষণা চালাচ্ছেন বিজ্ঞনীরা। তবে, এর মধ্যেই নয়া এক গবেষণায় মিলেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
গবেষণা বলছে, কিছু সাধারণ ভাইরাস সংক্রমণ আমাদের মস্তিষ্কের জন্য দীর্ঘমেয়াদী বিপদ ডেকে আনতে পারে। সাধারণ ভাইরাস সংক্রমণ থেকেই পরবর্তীকালে ঘটতে পারে অ্যালজাইমার্স, ডিমেনশিয়া, পারকিনসন্সের মতো মারাত্মক নিউরোডিজেনারেটিভ রোগ। অর্থাৎ ছোটখাটো সংক্রমণও ভবিষ্যতে বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
এনকেফালাইটিসের মতো সাধারণ ভাইরাল সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়া ব্যক্তিদের পরে অ্যালজাইমার্স রোগ হওয়ার ঝুঁকি ৩১ গুণ বেশি থাকে। গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, প্রতি ৪০৬ জন এনকেফালাইটিস রোগীর মধ্যে প্রায় ২৪ জন পরবর্তীতে অ্যালজাইমার্সে আক্রান্ত হয়েছেন। এনকেফালাইটিস ছাড়াও অন্যান্য সাধারণ সংক্রমণ, যেমন— ফ্লু-এর পরে হওয়া নিউমোনিয়া, অন্ত্রের সংক্রমণ, মেনিনজাইটিস এবং শিঙ্গলস, এ সবই নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এই রোগগুলির জন্য চিহ্নিত ৮০ শতাংশ ভাইরাসই হল নিউরোট্রপিক। অর্থাৎ, এরা রক্তের মাধ্যমে মস্তিষ্কের প্রতিরক্ষামূলক স্তর ভেদ করে সরাসরি স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করতে পারে।
প্রতিরোধ করবেন কীভাবে?
এই ভাইরাসগুলি মস্তিষ্কের উপর যে প্রভাব ফেলে, তা স্বল্পকালীন নয়। গবেষণায় দেখা গেছে, সংক্রমণের এই দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ১৫ বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। বিজ্ঞানীদের মতে, সংক্রমণ মস্তিষ্কে প্রদাহ তৈরি করে, যা ধীরে ধীরে মস্তিষ্কের কোষের ক্ষতি করে এবং নিউরোডিজেনারেটিভ রোগগুলির জন্ম দেয়। যেহেতু এই রোগগুলির খুব কম কার্যকর চিকিৎসা আছে, তাই প্রতিরোধই সবচেয়ে ভালো উপায়। চিকিৎসকদের মতে, ইনফ্লুয়েঞ্জা, শিঙ্গলস এবং নিউমোনিয়ার জন্য দায়ী ভাইরাসের জন্য টিকা নেওয়া প্রয়োজন। যে রোগগুলির টিকা পাওয়া যায়, সেগুলি আগেভাগে নিয়ে নেওয়াই বাঞ্ছনীয়।
শুধুমাত্র এই রোগগুলি থেকে বাঁচতেই নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদে মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতে হলে সময়মতো টিকা নেওয়া এবং কোনও ভাইরাল সংক্রমণ হলেই দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা অত্যন্ত জরুরি। প্রাথমিক সতর্কতা ভবিষ্যতে বড় ধরনের ঝুঁকি এড়াতে সাহায্য করবে বলে মনে করছেন গবেষকদল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.