হঠাৎ বুক ধড়ফড়? যার আড়ালে হতে পারে ‘হার্টের শর্ট সার্কিট’। ঠিক কী হয় এমন হলে? কাদের ঝুঁকি বেশি? নারীকুলকে সাবধান করলেন কার্ডিওলজিস্ট ডা. উদয় শঙ্কর দাস।
বিষয়টা একটু বুঝিয়ে বলা যাক, এক্ষেত্রে বুকের মধ্যে ধড়ফড়ানি শুরু হয়। মনে হবে হৃদস্পন্দনের গতি বেড়ে গেছে খুব। এই অসুখের পোশাকি নাম সুপ্রাভেন্ট্রিকুলার ট্যাকিকার্ডিয়া বা সংক্ষেপে SVT। এটি এক ধরনের হার্টের রিদম ডিসঅর্ডার, যাকে সাধারণত সবাই ‘হার্টের শর্ট সার্কিট’ বলেই চেনেন। এই SVT-তে হৃদস্পন্দনের গতি হঠাৎ করেই অনেক বেড়ে যায়। নাড়ির গতি ১৫০-২৫০ বিট প্রতি মিনিট পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে। সাধারণত এটি কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে এবং হঠাৎ করেই শুরু ও শেষ হয়।
নারীদের ঝুঁকি বেশি
পুরুষ-নারী উভয়েই এই সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন, তবে নারীরা তুলনামূলকভাবে দ্বিগুণ বেশি আক্রান্ত হন। সাধারণত ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সি মহিলাদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। পুরুষদের ক্ষেত্রে যাটোর্ধ্ব বয়সেও সমস্যা ধরা পড়তে পারে।
কেন হয় এই অসুখ?
SVT সাধারণত জন্মগত হলেও এর লক্ষণ পরবর্তী জীবনে দেখা দিতে পারে। কিছু ট্রিগার এই সমস্যাকে উসকে দিতে পারে, যেমন জ্বর, কাশি কমানোর সিরাপ, অ্যালকোহল বা ধূমপান। এসবের প্রভাবে হৃদযন্ত্রের বৈদ্যুতিক সিস্টেমে সমস্যা তৈরি হয় এবং তৈরি হয় এক ধরনের শর্ট সার্কিট, যা অস্বাভাবিকভাবে হৃদস্পন্দনের গতি বাড়িয়ে দেয়।
চিকিৎসা ও পরীক্ষা
যদি উপসর্গ চলাকালীন ECG(ইলেকট্রোকার্ডিওগ্রাম) করা যায়, তাহলে তৎক্ষণাৎ ধরা পড়ে যায়। অনেক সময় উপসর্গ খুব অল্প সময়ের জন্য হয় বলে তখন সাধারণ ECG-তে ধরা পড়ে না। সেক্ষেত্রে Holter বা ELR (External Loop Recorder) ব্যাহার করে রোগ নির্ণয় করা হয়।
তাৎক্ষণিক করণীয় কী?
হাসপাতালে ইনজেকশন অ্যাডেনোসিন দিয়ে চিকিৎসা সম্ভব হলেও বাড়িতে থাকলে কিছু সহজ কৌশল প্রয়োগ করে রিদম ঠিক করা যায়। যেমন, গলার দুপাশে হালকা চাপ দেওয়া (carotid massage), চোখের পাতায় চাপ দেওয়া, আইস প্যাক প্রয়োগ, কিংবা জোর করে বমি আনার চেষ্টা। Valsalva manoeuvre নামক একটি বিশেষ শ্বাসপ্রশ্বাসের পদ্ধতিও কাজে আসে।
স্থায়ী চিকিৎসা কী?
EP Study বা ইলেকট্রোফিজিওলজিক্যাল স্টাডির মাধ্যমে হার্টের কোথা থেকে অস্বাভাবিক সিগন্যাল আসছে তা চিহ্নিত করা হয়। এরপর RFA (Radiofrequency Ablation) করে সেই জায়গাটিকে নিঃশেষ করা হয়। এর সাফল্যের হার প্রায় ১০০%, এবং জটিলতার সম্ভাবনা এক শতাংশেরও কম।
জীবনহানির ঝুঁকি কতটা?
সাধারণভাবে এই রোগে মৃত্যুর আশঙ্কা খুবই কম। তবে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, বুকে ব্যথা বা শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তবে কারও যদি আগে থেকেই অন্য কোনও হৃদরোগ থেকে থাকে, তাহলে কিছুটা জটিলতা তৈরি হতে পারে।
পরামর্শ: 9477436171
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.