নিঃশব্দে বাড়ে, ধরা পড়ে শেষ পর্যায়ে! এই কারণেই ওভারিয়ান ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতি বছর বাড়ছে। তবে এখন আধুনিক সার্জারিতে শেষ পর্যায়েও সাড়া মিলছে, অভয় দিলেন সার্জিক্যাল অঙ্কোলজিস্ট ডা. শুভদীপ চক্রবর্তী।
ওভারিয়ান বা ডিম্বাণু ক্যানসার আসলে নিঃশব্দ ঘাতক। এই ক্যানসারের প্রাথমিক অবস্থায় তেমন লক্ষণ থাকে না। কিন্তু এদেশে মহিলাদের ক্যানসারের মধ্যে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এই ক্যানসার। পাশ্চাত্য দেশে ষাটোর্ধ্বদের এই ক্যানসারের ঝুঁকি দেখা যায়। কিন্তু এদেশে চল্লিশোর্ধ্বদের মধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। প্রতি বছর নতুন করে প্রায় ২৫ হাজার এই ক্যানসার রোগী ধরা পড়ছে।
কী করে বুঝবেন?
যেহেতু লক্ষণ থাকে না তাই রোগ ধরাটাই চ্যালেঞ্জিং। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, রোগী অন্য সমস্যা নিয়ে এলে তখন হয়তো ধরা পড়ল ওভারিয়ান ক্যানসার। পেটে ব্যথা, অল্প খেলেই পেট ভরে যাওয়া, মলত্যাগের যে অভ্যাস তার হঠাৎ পরিবর্তন নিয়ে কেউ এলে তাঁর সমস্ত টেস্ট করে অনেক ক্ষেত্রেই ধরা পড়ে ওভারিয়ান ক্যানসার। এদেশে ওভারিয়ান ক্যানসারের মৃত্যুহার এত বেশি, কারণ দেরিতে রোগ নির্ণয়।
কাদের ঝুঁকি বেশি?
(১) সাধারণত যাঁরা কোনওদিন প্রেগন্যান্ট হননি।
(২) যাঁদের খুব অল্প বয়সে মাসিক শুরু হয়েছে।
(৩) যাঁদের আগে এন্ডোমেট্রিওসিস হওয়ার ইতিহাস আছে।
(৪) এ ছাড়া জিনগত কারণেও এই ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি।
নয়া চিকিৎসা কথা বলছে, সারছে ক্যানসার
এ ক্ষেত্রে প্রথমে ক্যানসার নির্ণয় করে সেটা সার্জারি করা হয়। তার পর এই অত্যাধুনিক কেমো প্রয়োগ করা হচ্ছে যাতে বাকি ক্ষুদ্র ক্যানসার কোষগুলি ধ্বংস করা যায়। যার নাম HIPEC বা হাইপারথার্মিক ইনট্রাপেরিটোনিয়াল কেমোথেরাপি।
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: HIPEC সার্জারির পরে ক্ষুদ্র ক্যানসার কোষগুলিকে ধ্বংস করতে সহায়ক, যা ক্যানসারের ফিরে আসার সম্ভাবনা এড়ায়।
উত্তপ্ত কেমোথেরাপির প্রভাব: HIPEC-এর সময় উত্তপ্ত কেমোথেরাপি ওষুধ প্রয়োগ করা হয়, যা ক্যানসারকোষগুলির প্রোটিন এবং কোষীয় গঠন ধ্বংস করতে কার্যকর। উত্তাপ ওষুধের কার্যকারিতা বাড়ায় এবং কোষগুলির প্রতি ওষুধের সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে।
প্রতিরোধ ব্যবস্থা: সরাসরি পেরিটোনিয়াল কেভিটিতে ওষুধ প্রয়োগ করা হয়, যা রক্ত প্রবাহ পদ্ধতিকে বাইপাস করে এবং একদম টার্গেটেড ভাবে চিকিৎসা করা সম্ভব।
বাধা কমানো: HIPEC পদ্ধতিতে দুই ধাপে ক্যানসারের চিকিৎসা করা হয়। এতে শরীরের ভিতরে লুকিয়ে থাকা মাইক্রোস্কোপিক ক্যানসার কোষগুলিও ধ্বংস হয়। ফলে রোগ পুরোপুরি ভালো হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
বর্ধিত জীবিতকাল: গবেষণায় দেখা গিয়েছে, HIPEC পদ্ধতি ব্যবহার করলে ডিম্বাশয়ের ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীরা বেশি দিন বাঁচেন এবং তাঁদের জীবনযাত্রার মানও ভালো থাকে।
এই কারণেই HIPEC-কে এখন ডিম্বাশয়ের ক্যানসারের এক উন্নত ও কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি হিসাবে ধরা হয়।
পরামর্শ- 9330179441
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.