Advertisement
Advertisement
Prescription Plus

ডেঙ্গু থেকে জলবাহিত রোগ, বর্ষাকালে ৬ ধরনের অসুখকে দূরে রাখুন এই সহজ উপায়ে

বর্ষাকালে বৃদ্ধ ও শিশুদের মধ্যে বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বাড়ে।

Prescription Plus: Expert tips to protect yourself from Monsoon Diseases
Published by: Buddhadeb Halder
  • Posted:July 15, 2025 6:56 pm
  • Updated:July 16, 2025 5:33 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গ্রীষ্মের দাবদাহ থেকে বর্ষা আমাদের মুক্তি দিলেও রোগ সংক্রমণের আধিক্য ঘটে এই মৌসুমী ঋতুতেই। বর্ষাকালে বৃদ্ধ ও শিশুদের মধ্যে বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বাড়ে। একদিকে যেমন মশাবাহিত রোগ, অন্যদিকে তেমনি ত্বকে ছত্রাকের সংক্রমণ থেকে শুরু করে খাদ্য ও জল দূষণের মতো গুরুতর সমস্যাও দেখা দেয়। বর্ষার মরশুমে যেকোনও স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে নিজেকে নিরাপদে রাখতে বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন জরুরি।

Advertisement

গুরুগ্রামের সি কে বিড়লা হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডাঃ তুষার তায়ালের মতে, বর্ষাকাল আমাদের জন্য যতই মনোমুগ্ধকর হোক না কেন, এই ঋতুতেই সবচেয়ে বেশি অসুস্থতা (Monsoon Diseases) দেখা দেয়। তাই, এই সময় নিজেকে সুস্থ রাখতে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা প্রয়োজন।

Follow these expert tips to protect yourself from monsoon illnesses

ঠিক কোন কোন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বর্ষাকালে?
মশাবাহিত রোগ: নালা-নর্দমা, খালি পড়ে থাকা টব ও বিভিন্ন পাত্রে জমা জলে এই সময় মশা ডিম পাড়ে। ফলে মশাবাহিত রোগের আধিক্য দেখা দেয়। ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়া এবং জাপানি এনসেফালাইটিস তীব্র আকার ধারণ করে বর্ষাকালে। তাই আগাম সতর্ক না হলে এইসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।

ছত্রাকজনিত রোগ: বর্ষাকালে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমাদের পোশাক আধশুকনো বা দীর্ঘক্ষণ ভেজা থাকে। উচ্চ আদ্রতার কারণে বাড়ির স্যাঁতস্যাঁতে দেয়াল, জামাকাপড়, জুতো এমনকী খাবারেও ছত্রাকের সংক্রমণ ঘটে। এই সমস্ত ছত্রাকের কারণে ত্বকের অ্যালার্জি থেকে শুরু করে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ বা সাইনোসাইটিস পর্যন্ত দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে বৃদ্ধ বা শিশুদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ায় তাদের আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি থাকে।

Follow these expert tips to protect yourself from monsoon illnesses

লেপ্টোস্পাইরোসিস: লেপ্টোস্পাইরোসিস একটি ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ। বর্ষাকালে এই রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। এটি প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়। বর্ষাকালে ভারী বৃষ্টিপাত বা বন্যার কারণে জল জমে গেলে লেপ্টোস্পাইরা ব্যাকটেরিয়াযুক্ত জলের সংস্পর্শে আসার ঝুঁকি বেড়ে যায়। জ্বর, ঠান্ডা লাগা, মাথাব্যথা, পেশী ব্যথা, বমি, ডায়রিয়া প্রভৃতি এই রোগের প্রধান লক্ষণ। সময়মতো চিকিৎসা না করালে মেনিনজাইটিস বা শ্বাসকষ্টের মতো গুরুতর জটিলতা তৈরি হতে পারে, এমনকী মৃত্যুও হতে পারে।

জলবাহিত রোগ: জল দূষণের ফলে টাইফয়েড, কলেরা, হেপাটাইটিস এ এবং লিভারের সংক্রমণের সম্ভাবনা দেখা দেয়। এই সময় রাস্তার খাবার বা জল ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকা প্রয়োজন।

শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ: বর্ষার ঠান্ডা স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়া ভাইরাসের বৃদ্ধিতে সহায়ক। ফলে নিউমোনিয়া বা ব্রঙ্কাইটিসের মতো রোগের প্রবণতা বেড়ে যায়। শ্বাসযন্ত্রের সমস্যায় ভুগতে থাকা রোগীদের এই সময় আরও বেশি সতর্ক থাকা প্রয়োজন।

ত্বকের সংক্রমণ: অতিরিক্ত ঘাম, ভেজা কাপড় এবং নোংরা জলের কারণে অ্যাথলিটস ফুট, দাদ, ক্যানডিডিয়াসিসের মতো চর্ম রোগ দেখা দিতে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে ভেজা কাপড় বা জুতো পরা এড়িয়ে চলুন।

সুরক্ষিত থাকার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ
১. বাড়ি ও তার চারপাশের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখুন। নালা নর্দমা বা ফাঁকা পাত্রে জল জমতে দেবেন না। রাত্রে মশারি টাঙিয়ে শোওয়ার ব্যবস্থা করুন। প্রয়োজনে মশার হাত থেকে রক্ষার জন্য ক্রিম ব্যবহার করুন।

২. ভেজা কাপড়, জুতো সবসময় পরে থাকবেন না। ভেজা পোশাক এড়িয়ে চলুন। ঘর শুকনো রাখার চেষ্টা করুন। ভেজা মাটিতে খালি পায়ে হাঁটবেন না। অ্যান্টিফাঙ্গাল পাউডার ব্যবহার করতে পারেন।

৩. জল ফুটিয়ে পান করুন। রান্না করা খাবার বেশিক্ষণ রেখে খাবেন না। বাসি খাবার এড়িয়ে চলুন।

৪. বর্ষায় জমা জলে বেশিক্ষণ থাকবেন না। পায়ের ঘা বা কাটা অংশ ঢেকে রাখবেন।

৫. সুষম খাদ্য, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল ও সঠিক বিশ্রামের মাধ্যমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলুন।

৬. সর্বত্র পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখবেন। উপযুক্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ