Advertisement
Advertisement
Stomach Cancer

বেশি খাসির মাংস খেলে পেটের ক্যানসার হতে পারে? উত্তর দিলেন শহরের বিশিষ্ট চিকিৎসক

অনেকক্ষণ পেট খালি রাখলেও এই ক্যানসার হতে পারে।

Know these important information about Stomach Cancer | Sangbad Pratidin
Published by: Suparna Majumder
  • Posted:June 14, 2022 7:45 pm
  • Updated:June 14, 2022 7:45 pm  

পেটের ক‌্যানসারের লক্ষণ চিনুন। দ্রুত টেস্ট করিয়ে চিকিৎসা শুরু করলে মৃত্যুভয় কমে যায়। আশ্বস্ত করলেন কলকাতা নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোস ক্যানসার হসপিটালের সার্জিকাল ডিপার্টমেন্টের প্রধান ডা. সৌমেন দাস। তাঁর কথা অনুযায়ী প্রতিবেদনটি লিখেছেন মৌমিতা চক্রবর্তী।

Advertisement

হজম নালির উপরের অংশ হল পেট। যা খাবারকে হজম করিয়ে সেখান থেকে পুষ্টি গ্রহণ করে অন্যান্য অঙ্গে সঞ্চালন করে। প্রাথমিক পর্যায়ে পেটের ক্যানসারের (Cancer) উপসর্গ অস্পষ্ট হয়। পেটের ভিতর গলব্লাডার, প্যানক্রিয়াটিস, পাকস্থলী, কোলন, রেক্টাম, ওভারি ও ইউটেরাস, পেরেটোরিয়াম বা পেটের পর্দার মতো অঙ্গ ক্যানসারে আক্রান্ত হলে তাকে অ‌্যাবডোমিনাল ক্যানসার বলা হয়।

উপসর্গ –
পেটের কোন অঙ্গ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছে তার উপর এর উপসর্গ নির্ভর করে। প্রাথমিক পর্যায়ে খিদে কমে যায়, রক্তবমি, পেট ব্যথা ও ফুলে যাওয়া, মল ত্যাগের সময় রক্তপাত, অকারণে ওজন কমে যাওয়া। এর সঙ্গে ৪০-৪৫ বছর বয়সি মানুষের হঠাৎ করে অনিয়মিত বা সারাদিনে একাধিকবার পায়খানা হওয়া কোলন বা রেক্টাম ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। প্রথম পর্যায়ে পেটে ব্যাথা, গ্যাস-অম্বল, বুকজ্বালা, বমি, খাবার গিলতে অসুবিধার উপসর্গ থাকলেও শেষ পর্যায়ে রোগীর জন্ডিস, পেট ফোলা, রক্তবমি হয়।

Pain

কেন হয় – 
অ‌্যাবডোমিনাল বা পাকস্থলীর ক্যানসারের কিছু ভাগ থাকে, যা হওয়ার কারণ অজানা। অন্য ভাগে জেনেটিক কারণ হিসাবেও ক্যানসার হয়। এ ছাড়া অত্যধিক খাসির মাংস খাওয়া, ধূমপান, মদ্যপান, অনেকক্ষণ পেট খালি রাখলেও এই ক‌্যানসার হতে পারে। তাই পাকস্থলীকে সুস্থ রাখতে খুব বেশি করে সবুজ শাকসবজি, জল খাওয়া উচিত। গ্যাস্ট্রাইটিস দীর্ঘদিন বিনা চিকিৎসায় রেখে দিলে পেটে হেলিকোবেক্টার পাইলরি নামক ব্যাকটিরিয়া বাসা বাঁধে। যা পাকস্থলীর ক্যানসারের অন্যতম কারণ।

[আরও পড়ুন: যিনি আত্মহত্যা করেন, তিনি খুনও করতে পারেন, পার্কসার্কাসের ঘটনায় সতর্কবার্তা মনোবিদদের]

রোগ নির্ণয় –
লক্ষণ অনুযায়ী আলট্রাসোনোগ্রাফি, এন্ডোস্কপি ও কোলনোস্কোপি,এই তিনটি টেস্টের মধ্যে প্রয়োজনীয় টেস্টটি করলে ধরা পড়ে ক‌্যানসার। কিছু ক্ষেত্রে অ‌্যাবডোমিনাল ক্যানসারে কোন অঙ্গটি মারণ রোগে আক্রান্ত সেটি নির্ণয়ের জন্য বায়োপসি করা জরুরি। এন্ডোস্কোপি করা হয় পাকস্থলীর ক‌্যানসার আশঙ্কা করা হলে, কোলনোস্কোপি করা হয় কোলন ও রেক্টামের ক্যানসার নির্ণায়ক টেস্ট হিসাবে। এই টেস্টগুলি করার সময় বায়োপসির নমুনা নিয়ে নেওয়া হয়।

Biopsy-test

আর পেটের ভিতরের যে সব স্থানে উপরোক্ত টেস্ট করা সম্ভব নয়, সেখানে সিটি স্ক্যান বা ইউএসজির মাধ্যমে ক্ষতস্থান চিহ্নিত করে পেটে ছোট ফুটো করে বায়োপসির নমুনা নেওয়া হয়। অনেকে ভাবেন, বায়োপসি করলে ক্যানসার ছড়িয়ে যায়। এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা।
পেটের ক‌্যানসার দ্রুত বুকে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বেশি। তাই সিটি স্ক্যান থোরাক্স নামক টেস্টের মাধ্যমে বুকের পরীক্ষা করে দেখা হয় ক‌্যানসার ছড়িয়েছে কিনা। বুকে ক‌্যানসার ছড়িয়ে পড়ার অর্থ সেটি ক্যানসারের শেষ পর্যায়।

চিকিৎসা – 
প্রথম ও মাঝামাঝি পর্যায়ে রোগ ধরা পড়লে অপারেশনে পেটের ক‌্যানসার নিরাময় সম্ভব। কিছু ক্যানসার শেষ পর্যায়ে ধরা পড়লে কেমোথেরাপি তখন একমাত্র উপায়। জরাযু ও রেক্টাম ক্যানসারের ক্ষেত্রে রেডিয়েশনের বিশেষ ভূমিকা আছে।

Stomach Cancer

মাইক্রোসার্জারিই ভাল –
বর্তমানে ল‌্যাপারোস্কোপিক বা মাইক্রোসার্জারি করে অপারেশন করা হয়। এর সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি সূক্ষ্ম ও স্বচ্ছভাবে দেখা যায়। পেটে ক্ষত কম হওয়ায় রক্তপাত কম হয়, ব্যথা কম অনুভূত হয়। তাই রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে পারে। এতে চিকিৎসার খরচ কম হয়। রোগীর কর্মক্ষেত্রে তেমন প্রভাব পড়ে না। তবে রোগীর অবস্থা অনুযায়ী প্রয়োজনে মেজর সার্জারি করতে হয়। অ‌্যাবডোমিনাল ক্যানসারে মৃত্যুভয় থাকে না। ডাক্তারি পর্যবেক্ষণের মধ্যে থাকলে সম্পূর্ণ সুস্থতা অব্যশই সম্ভব।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ