দূষণের কারণে পুরুষ-মহিলা সমানভাবে আক্রান্ত হচ্ছে ফুসফুস ক্যানসারে (Lung Cancer)। কিছু জিনিস তাই সকলেরই মাথায় রাখতে হবে। ধূমপান করেন না মানেই যে আপনি নিরাপদ, এটা ভেবে বসে থাকলে বিপদ বেশি। পড়ুন মেডিক্যাল অঙ্কোলজিস্ট ডা. সঞ্চয়ন মণ্ডলের জরুরি নির্দেশ।
এদেশে যে যে ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি, তার মধ্যে অন্যতম হল ফুসফুস ক্যানসার। এখন এমনও দেখা যাচ্ছে, হয়তো রোগী কোনওদিন ধূমপানই করেননি, কিন্তু হঠাৎ করেই একদিন দেখা গেল ফুসফুসে ক্যানসার থাবা বসিয়েছে। পুরুষদের পাশাপাশি ২০-৫০ বছর বয়সি মহিলারাও বর্তমানে আক্রান্ত হচ্ছেন। শুনলে চোখ কপালে উঠবেই। খুব সাবধান।
লক্ষণগুলি কী কী?
প্রাথমিকভাবে তিন সপ্তাহেরও বেশি কাশি, ওজন কমে যাওয়া, হিমোস্টোসিস (কাশির সঙ্গে রক্তপাত), সোজা হয়ে শুতে না পারা, পিঠে-কোমরে ব্যথা বা ব্যকপেন, শ্বাসকষ্ট, বুকে প্রবল চাপবোধ।
অনেক ক্ষেত্রে আবার প্রাথমিক পর্যায়ে এই লক্ষণগুলি ধরা পড়ে না। শরীরে বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ার পর রোগীরা টের পেতে শুরু করেন। সুতরাং, এমন কোনও লক্ষণ বুঝলে অবশ্যই অঙ্কোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কারণ কি শুধুই ধূমপান?
যাঁরা খুব বেশি ধূমপান করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি। অন্যদিকে, যাঁরা ধূমপায়ী নন, তাঁরা সম্পূর্ণ সুরক্ষিত কিন্তু থাকেন না। পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ কলকারখানায় কাজ করা কিংবা একটানা বদ্ধ রান্নাঘরে রান্না করার কারণেও ফুসফুস ক্যানসার হতে পারে।
আর বর্তমান সমাজে প্যাসিভ স্মোকিং একটি বড় ফ্যাক্টর। হয়তো একজন ধূমপান করেন না, কিন্তু যাঁদের সঙ্গে সারাদিন কাটান, তাঁদের ধূমপানের দরুন ব্যক্তির ফুসফুসে ক্যানসার বাসা বাঁধতে পারে।
চিকিৎসা কী?
প্রথমে সার্জারি করলে এই ক্যানসার ঠিক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবন থাকে। ইমিউনোথেরাপি, কেমোথেরাপি, টার্গেটেড থেরাপি, রেডিয়েশন প্রভৃতি ব্যবহার করা হয়।
চতুর্থ পর্যায়ে ইমিউনোথেরাপির মাধ্যমে আক্রান্ত রোগীর আয়ু বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়াও রয়েছে টার্গেটেড থেরাণি। মুখের মাধ্যমে এই থেরাপি দেওয়া হয়।
পুরোপুরি সুস্থ হওয়া সম্ভব?
সময়ে রোগ ধরা পড়লে ফুসফুস ক্যানসার নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। তবে চতুর্থ পর্যায়ে বা যত দেরিতে অসুখ ধরা পড়বে তত জটিল হবে চিকিৎসা।
সতর্কতা
প্রচুর টাটকা ফল ও শাকসবজি খেতে হবে। এর মধ্যে ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। অবশ্যই ধূমপান, অ্যালকোহল, ফাস্ট ফুড সম্পূর্ণরূপে বর্জন, তামাক জাতীয় জিনিস এড়িয়ে চলতে হবে। সুস্থ জীবনযাপন, ব্যায়াম, মাস্কের ব্যবহার জরুরি। যাঁদের পেশাগত দিক থেকে ঝুঁকি রয়েছে তাঁদের অবশ্যই বছরে একবার করে ফুসফুস ক্যানসারের (Lung Cancer) স্ক্রিনিং করতে হবে।
যাঁরা এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের মানসিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ থাকতে হবে। এর জন্য মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শও জরুরি। নেতিবাচক পরিবেশ এড়িয়ে চলতে হবে।
পরামর্শ – 9804345392
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.