স্টাফ রিপোর্টার: একে তো অদ্ভুত আবহাওয়া। সকালে বৃষ্টি তো দুপুরে ভ্যাপসা গরম। তার উপর আবার শুরু হয়েছে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার দাপট। ফলে প্রায় সব ঘরে কেউ না কেউ জ্বরে ভুগছে৷ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল একজন আক্রান্ত হলে গোটা পরিবারের সকলেই একে-একে জ্বরের কবলে পড়ছেন৷
কিন্তু প্রশ্ন হল এই জ্বরটা আদতে কোন জ্বর, তার নেপথ্যে কোন নাটের গুরু জীবাণু? আম আদমির পক্ষে তা বোঝা মোটেই সহজ নয়। কারণ , শুধুমাত্র উপসর্গ দেখে ঘাতক জীবাণুকে বুঝতে গিয়ে অনেক সময়ে গলদঘর্ম হচ্ছেন চিকিৎসকরাও৷ বস্তুত রক্ত পরীক্ষা ছাড়া উপায় থাকছে না। তবু চিকিৎসকরা তাঁদের অভিজ্ঞতা সম্বল করে গোড়ার দিকেই জ্বরটা চিনে নেওয়ার চেষ্টা করছেন নানা লক্ষণ-উপসর্গ দেখে। কোনও জ্বর সাধারণ, কোনওটা আবার বেশ মেয়াদি৷ আর বিভিন্ন জ্বরের উপসর্গগুলো বদলে যাওয়ার ফলে ঘোল খাইয়ে দিচ্ছে ডাক্তারবাবুদেরও৷ তাই তাঁদের পরামর্শ, প্যারাসিটামল ছাড়া জ্বরের জন্য অন্য কোনও ওষুধ খেয়ে বিপদ না-বাড়ানোই ভাল৷ প্যারাসিটামলে জ্বর না কমলে জলপট্টি, মাথা ধোয়া, গা মুছিয়ে দেওয়ার মতো চিরকালীন টোটকায় ভরসা রাখার পাশাপাশি অবিলম্বে ডাক্তার দেখানোর কথাও বলছেন তাঁরা৷
ফ্লু-র চেহারা
সর্দি-কাশি-জ্বর অথবা জ্বর-জ্বর ভাব, পেশিতে ব্যথা, সঙ্গে মাথাব্যথা বা মাথা ভারী থাকা
গলা খুশখুশ, নাক বন্ধ, নাক দিয়ে কাঁচা জল, চোখ জ্বালা, স্বাদহীনতা
সাধারণ জ্বরের স্থায়িত্ব বাড়ছে, তাপমাত্রা নামার প্রক্রিয়াও মন্থর
১০৪ ডিগ্রি পর্যন্ত জ্বরও উঠে যাচ্ছে, প্যারাসিটামলেও ৯৯-এর নিচে নামছে না
ডেঙ্গুর লক্ষণ
অন্তত ৩-৫ দিন টানা জ্বর থাকে, সহজে কমতে চায় না
মাথা ও চোখের চারপাশ-সহ শরীরে মারাত্মক ব্যথা (মূলত গাঁটে)
দুর্ববলতার পাশাপাশি ত্বকে র্যাশ, বমি, ডায়েরিয়া হতে পারে ।
সর্দি-কাশি-হাঁচি থাকে না
হেমারেজিক ডেঙ্গিতে মাড়ি ও নাক থেকে রক্তপাত। বমি, প্রস্রাব ও মলের সঙ্গেও রক্ত বেরোতে পারে
জ্বর আসার ৫ দিন পর পর্যন্ত এনএস-১ এলাইজা টেস্ট এবং ৫ দিন পেরিয়ে গেলে ডেঙ্গির আইজিএম পরীক্ষা করালে ধরা পড়ে ডেঙ্গি
ম্যালেরিয়ার লক্ষণ
আচমকা কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে
মাথা ও গাঁটে ব্যথা, বমি, দুর্বলতার মতো উপসর্গও দেখা যায়
বাড়াবাড়ি হলে খিঁচুনিও হয়
ম্যালেরিয়ার ডুয়াল কিট (ভাইভ্যাক্স ও ফ্যালসিপেরাম) অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় জ্বরের ২-৩ দিনের মাথাতেই সংক্রমণ চিহ্নিতকরণ সম্ভব
চিকুনগুনিয়ার লক্ষণ
২-৫ দিন জ্বর, দুর্বলতা, গা-বমি ভাব, কনজাংটিভাইটিস, স্বাদহীনতা।
হাড়ে ও গাঁটে মারাত্মক যন্ত্রণা।
৪-৫ দিন পরে চিকুনগুনিয়ার আইজিএম অ্যান্টিবডি টেস্টে ধরা পড়ে রোগটা
টাইফয়েডের চিহ্ন
৫-১৪ দিন ধুম জ্বর, জ্বরটা ওঠে ১০৩-১০৬ ডিগ্রি পর্যন্ত, নামে ধীরে, এবং তাপমাত্রা পাল্লা দিয়ে বাড়ে।
পেটে ও মাথায় ব্যথা, পেটের গোলমাল, গা গুলানো ও বমি।
জ্বরের অন্তত পাঁচ দিন পরে ‘ওয়াইডাল টেস্ট’ করলে ধরা পড়ে।
কী করণীয়
প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়া ও বিশ্রাম। প্যারাসিটামল ছাড়া জ্বর বা ব্যথার অন্য কোনও ওষুধ নয়।
চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিভাইরাল (অ্যাসাইক্লোভির জাতীয়) ওষুধ নয়
কী বর্জনীয়
অ্যাসপিরিন বা আইবুপ্রোফেনের মতো ওষুধ। অসুস্থতা উপেক্ষা করে কায়িক পরিশ্রম
বিড়ি সিগারেট ও তামাক জাতীয় নেশা, মদ্যপান বন্ধ রাখতেই হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.