Advertisement
Advertisement

Breaking News

Shefali Jariwala

১৫ বছর ধরে মৃগী রোগে ভুগছিলেন ‘কাঁটা লাগা গার্ল’ শেফালি, কী কারণে হয়? উপসর্গই বা কী!

কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

Shefali Jariwala suffered from epilepsy, Causes, treatment, and cure of this disease
Published by: Buddhadeb Halder
  • Posted:June 28, 2025 5:49 pm
  • Updated:June 28, 2025 8:05 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাত্র ৪২ বছর বয়সেই প্রয়াত জনপ্রিয় মডেল-অভিনেত্রী শেফালি জরিওয়ালা (Shefali Jariwala)। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে তিনি ভুগছিলেন মৃগী রোগে। চিকিৎসাধীন ছিলেন দীর্ঘকাল। অভিনেত্রীর এই দীর্ঘ লড়াই মৃগী রোগের মতো একটি জটিল স্নায়বিক রোগের ভয়াবহতাকে আরও একবার আমাদের সামনে এনে দিল।

কী এই মৃগী রোগ?
মৃগী রোগ হল একটি দীর্ঘস্থায়ী স্নায়বিক ব্যাধি, যা মস্তিষ্কের অস্বাভাবিক বৈদ্যুতিক কার্যকলাপের কারণে খিঁচুনি সৃষ্টি করে। বিশ্বজুড়ে প্রায় ৫০ মিলিয়ন মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। যেকোনও বয়সে এই রোগ হতে পারে। 

খিঁচুনি কেন হয়?
মস্তিষ্কের অস্বাভাবিক বৈদ্যুতিক কার্যকলাপ হঠাৎ করে বেড়ে গেলে রোগীর মধ্যে খিঁচুনি দেখা দেয়। এটি অল্প সময়ের জন্য একজন ব্যক্তির আচরণ ও অনুভূতিকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। মানসিক চাপ ও উদ্বেগ মৃগী রোগের খিঁচুনিকে যেকোনও অবস্থাতেই বাড়িয়ে তুলতে পারে।

Causes, treatment, and cure of epilepsy

মৃগী রোগের কারণ কী?
অনেক ক্ষেত্রে মৃগী রোগের সঠিক কোনও কারণ খুঁজে পাওয়া না গেলেও, নির্দিষ্ট কিছু কারণের ভিত্তিতে এই রোগ শনাক্ত করা যায়।

১. পরিবারের সদস্যদের মধ্যে মৃগী রোগের হিস্ট্রি থাকলে এই রোগের ঝুঁকি অন্যদের মধ্যে বাড়তে পারে।
২. দুর্ঘটনা, স্ট্রোক বা মস্তিষ্কের সংক্রমণের ফলে সৃষ্ট আঘাত মৃগী রোগের কারণ হয়ে দেখা দিতে পারে।
৩. অটিজম বা নিউরোফাইব্রোমাটোসিসের মতো কিছু ব্যাধি মৃগী রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
৪. মেনিনজাইটিস, এনসেফালাইটিস বা এইচআইভি-এর মতো সংক্রমণ মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে মৃগী রোগ সৃষ্টি করতে পারে।
৫. গর্ভাবস্থায় অক্সিজেন স্বল্পতা বা ভ্রুণের মস্তিষ্কের দুর্বল বিকাশও এই রোগের কারণ হতে পারে।
৬. মস্তিষ্কের গঠনগত ত্রুটি বা টিউমার খিঁচুনির কারণ হতে পারে।

Causes, treatment, and cure of epilepsy

মৃগী রোগের উপসর্গ কী?
খিঁচুনি বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। তার উপর নির্ভর করেই মৃগী রোগের উপসর্গ দেখা দেয়।
১. আক্রান্ত ব্যক্তি কিছু সময়ের জন্য নিজের বাস্তব পরিবেশ থেকে মানসিক ভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান।
২. শরীর অনিয়ন্ত্রিতভাবে কাঁপতে থাকে। খিঁচুনি দেখা যায়। এটিই সবচেয়ে পরিচিত লক্ষণ।
৩. রোগী কিছু সময়ের জন্য জ্ঞান হারাতে পারেন।

মৃগী রোগের চিকিৎসা কী?
মৃগী রোগের সঠিক নির্ণয় এবং সময়োপযোগী চিকিৎসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই রোগের কিছু গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে।
অ্যান্টিসিজার মেডিসিন: বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ওষুধই মৃগী রোগের প্রধান চিকিৎসা। প্রায় ৭০% ক্ষেত্রে অ্যান্টিসিজার ওষুধগুলো খিঁচুনি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শমতো নিয়মিত ও সঠিক মাত্রায় ওষুধ গ্রহণ করা জরুরি।
জীবনযাত্রার পরিবর্তন: মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ, পর্যাপ্ত ঘুম, নিয়মিত ব্যায়াম এবং সুষম খাদ্য গ্রহণ মৃগী রোগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
মানবিক ব্যবহার: পরিবার ও বন্ধুদের মেন্টাল সাপোর্ট একজন মৃগী রোগীকে সুস্থ জীবনযাপনে উদ্বুদ্ধ করে। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের কখনও মানসিক অস্থিরতায় রাখা ঠিক নয়।
সার্জিক্যাল চিকিৎসা: কিছু ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের একটি নির্দিষ্ট অংশে খিঁচুনির উৎস তৈরি হয়। সেক্ষেত্রে সার্জারি একটি কার্যকরী চিকিৎসা পদ্ধতি হয়ে উঠতে পারে।
থেরাপি: রেসপনসিভ নিউরোস্টিমুলেশন (RNS) এবং কেটোজেনিক ডায়েটের মতো খাদ্য-ভিত্তিক পদ্ধতিগুলো কিছু রোগীর জন্য ফলদায়ক। বিশেষত যখন অন্যান্য চিকিৎসা কাজে লাগে না তখন এগুলি ট্রাই করা উচিত।

মৃগী রোগ একটি দীর্ঘস্থায়ী অবস্থা হলেও সঠিক চিকিৎসা ও জীবনযাত্রার ধরন পরিবর্তনের মাধ্যমে আক্রান্তের সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ