Advertisement
Advertisement
তিন হোমিও ওষুধে COVID মোকাবিলা

COVID-19 প্রতিরোধে ভরসা তিন হোমিও ওষুধ, দেশজুড়ে ক্নিনিক্যাল ট্রায়ালে সবুজ সংকেত কেন্দ্রের

হোমিও জগতের কোন ত্রয়ী করতে পারে অসাধ্য সাধন, দেখে নিন।

These three homeo medicines can make immunity against COVID-19
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:June 4, 2020 2:43 pm
  • Updated:June 4, 2020 2:45 pm  

গৌতম ব্রহ্ম: জাপানি এনসেফেলাইটিসে কাজ করেছে তিন হোমিওপ্যাথি ওষুধের পর্যায়ক্রমিক প্রয়োগ। COVID দমনেও কি কাজ করবে?

Advertisement

আর্সেনিকাম অ্যালবাম, ফসফরাস, টিউবারকিউলিনাম। তিন হোমিওপ্যাথি ওষুধের ‘সিরিয়াল’ প্রয়োগ নিয়ে দেশজুড়ে শুরু হচ্ছে ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল’। মঙ্গলবারই এই ব্যাপারে সবুজ সংকেত দেয় ভারত সরকারের COVID সংক্রান্ত গবেষণা নির্ধারক সর্বোচ্চ টাস্ক ফোর্স এবং ‘সেন্ট্রাল কাউন্সিল ফর রিসার্চ ইন হোমিওপ্যাথি’।

আর্সেনিকাম অ্যালবাম ৩০ নিয়ে অনেক আগেই অ্যাডভাইজরি দিয়েছিল আয়ুশ মন্ত্রক। পরে দেখা যায়, নোভেল করোনা ভাইরাস এতটাই শক্তিশালী যে আসের্নিকাম একা এঁটে উঠছে না। ফলে শুরু হয় সঙ্গী খোঁজার পালা। তখনই উঠে আসে টিউবারকিউলিনাম ও ফরফরাসের নাম। চিকিৎসকদের দাবি, এই দুই ওষুধ যোগ করা গেলে আর্সেনিকামের কার্যকারিতা বাড়বে। দীর্ঘস্থায়ী হবে প্রতিরোধ ক্ষমতার ‘লাইফলাইন’।

[আরও পড়ুন: চ্যবনপ্রাশেই লুকিয়ে প্রাণশক্তি, করোনার উত্তর পেতে স্বদেশি মন্ত্রে শুরু ট্রায়াল]

কেরল এবং তামিলনাড়ুতে এই অ্যানালজি মেনেই জাপানি এনসেফেলাইটিস প্রতিরোধে অন্ধ্র সরকার বেলেডোনা, ক্যালকেরিয়া কার্ব এবং টিউবারকিউলিনাম প্রয়োগ করেছিল। দাবি, তাতে দারুণ কাজ হয়েছে। COVID-এও সেই ফর্মুলা কতটা কাজ করবে, জানতে শুরু হচ্ছে ট্রায়াল। পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, কেরল, গুজরাত, দিল্লির কনটেনমেন্ট জোনে থাকা বাসিন্দাদের উপর এই তিন ওষুধ প্রয়োগ হবে। গবেষণাপর্বের প্রধান দায়িত্বে দুই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হোমিওপ্যাথি’, কলকাতার প্রাক্তন অধ্যাপক ডা. অশোককুমার দাস এবং ভারত সরকারের প্রাক্তন উপদেষ্টা তথা তামিলনাড়ুর সারদাকৃষ্ণ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজের পরামর্শদাতা অধ্যাপক ডা. রবি এম নায়ার। কন্যাকুমারীর এই হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজের তত্ত্বাবধানেই চলবে ট্রায়াল।

অশোকবাবুর পর্যবেক্ষণ, স্প্যানিশ ফ্লু, ডেঙ্গু, কলেরা—সহ বহু মহামারীতে হোমিওপ্যাথি কার্যকর ভূমিকা নিয়েছে। এর অন্যতম কারণ, হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা প্যাথোজেনের উপর ভিত্তি করে হয় না। উপসর্গের উপর ভিত্তি করে হয়। অর্থাৎ SARS-CoV-2 ভাইরাস চরিত্র বদলালেও সমস্যা নেই। এই ওষুধ তখনও কাজ করবে।

[আরও পড়ুন: ফের অবস্থান বদল! করোনা চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহারের অনুমতি দিল WHO]

করোনাপর্বে হোমিওপ্যাথি ওষুধ নিয়ে হরেক পরীক্ষানিরীক্ষা চলেছে। ডাক্তারবাবুরা ‘রেপার্টোরাইজেশন’ করে দেখেছেন, আর্সেনিকামের সঙ্গে ফসফরাসকে যুক্ত করা গেলে তার কার্যকারিতা বাড়ে। অশোকবাবু জানান, সম্প্রতি ইতালিতে ৩৮ জন COVID রোগীর অটোপসিতে দেখা যায়, করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর কারণ ‘ডিসিমিনেটেড ইন্ট্রাভাসকুলার কোয়াগুলেশন’। অর্থাৎ ধমনি-শিরা-উপশিরায় রক্ত জমাট বেঁধেই রোগীর মৃত্যু হচ্ছে। ফলে অক্সিজেন বা ভেন্টিলেশন তেমন কাজে আসছে না। ফসফরাস এই রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা প্রতিরোধ করতে পারবে। কিন্তু টিউবারকিউলিনাম? মার্কিন গবেষকরা সম্প্রতি দাবি করেছেন, বিসিজি ভ্যাকসিন দেওয়া থাকলে COVID হলেও তা জটিল আকার নেয় না। কমে মৃত্যুর হারও।

বিসিজি ভ্যাকসিন তৈরি টিউবারকিউলোসিসের বীজাণু থেকে টিউবারকিউলিনাম ওষুধটিও তাই। তাছাড়া ঘন ঘন সর্দি-কাশির হাত থেকে মুক্তি দিতে সক্ষম টিউবারকিউলিনাম ওষুধটি ফসফরাসের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে, আর্সেনিকাম, ফসফরাস, টিউবারকিউলিনাম (এপিটি) পরপর একটি নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে প্রয়োগ করলে প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি শক্তিশালী এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়। চিকিৎসকদের দাবি, মিউটেশনের ফলে বারবার চরিত্র বদল করছে COVID-19। HIV’র মতোই একে নিয়েও বাঁচতে হবে। ফলে ‘লং টার্ম ইমিউনিটি’ খুব জরুরি। হোমিওপ্যাথিই হয়ে উঠতে পারে লড়াইয়ের পাসওয়ার্ড।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ