সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সামনেই পুজো। হাতে আর তেমন সময় নেই। পুজোর কেনাকাটি শুরু হয়ে গিয়েছে। বাড়িতে খুদে সদস্য থাকলে তো কথাই নেই। প্রথমে কেনাকাটি হবে তারই। তবে আপনার সামর্থ্য রয়েছে বলে রাশি রাশি কেনাকাটি করবেন না। মনে রাখবেন পুজোর শপিং ব্যাগেই লুকিয়ে শিশুর জীবনের পাঠ।
একসময় ছিল যখন বাবাই মূলত সংসারের রুটিরোজগারী ছিলেন। তাঁর আয়েই চলত সব কিছু। তাই খরচ করতে হত বেশ মেপে মেপে। বর্তমানে বদলেছে সেই ছবি। এখন বেশিরভাগ মহিলাও কর্মরত। ফলে আর্থিক স্বাধীনতা রয়েছে তাঁদের। তাই সংসার যেমন স্বচ্ছল, তেমনই আবার সন্তানেরাও বাবা-মা দু’জনের থেকে আবদার করার সুযোগ পায়। আবার কোনও কোনও খুদের কাকা, জেঠু, পিসির মতো আত্মীয় পরিজনদের কাছেও আবদারের সুযোগ থাকে। তার ফলে সংসারের খুদে সদস্যরা বর্তমানে জিনিসপত্র পায় তুলনামূলক অনেক বেশি। তা সে পুজোর সময় জামাকাপড় হোক কিংবা খেলনা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দিনের পর দিন জিনিস পেতে পেতে খুদের চাহিদাও বাড়ছে। অনেকের মতে, ছোট ছোট জিনিসে আনন্দ পেতে ভুলে যাচ্ছে নতুন প্রজন্ম। যার ফলে তারা কোনও কিছু অর্জন করতে হয়, সে পাঠ শিখছে না। ভাবছে একবার মুখ থেকে চাই শব্দটি বেরনো মাত্র সব পাওয়া সম্ভব। কোনও জিনিস পেতে গেলে সে সময় দিতে হয়, সেই ধৈর্য ধরার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলছে। আর না পেলেই গণ্ডগোল। না পাওয়ার হতাশায় মনের কোণে খারাপ লাগা বাসা বাঁধছে খুদের। এই খারাপ লাগাই একদিন অবসাদকে ডেকে আনছে। তাই আজ থেকে রাশ টানুন। না হয় নিজের খুদে সন্তানকে জীবনের পাঠ দিতে শুরু করুন পুজোর শপিং ব্যাগ থেকেই।
পুজোর কেনাকাটির মাধ্যমে কীভাবে খুদেকে জীবনের পাঠ দেবেন? একনজরে দেখে নেওয়া যাক, প্যারেন্টিং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ:
* পুজোর কেনাকাটি শুরুর আগে শিশুকে নিয়ে বসে প্রথমেই একটি তালিকা তৈরি করুন। তাতে থাকবে তার কী নেই আর কী আছের হিসাব। কোনটা সে কিনতে চায় তাও একবার জেনে নিন।
* পুজোয় সাধারণত অনেক কেনাকাটি থাকে। তাই প্রতিটি মধ্যবিত্ত পরিবারেই কেনাকাটির জন্য প্রত্যেকের মাথাপিছু বাজেট স্থির করা হয়। শিশুকে জানিয়ে দিন তার পুজোর কেনাকাটির জন্য ঠিক কত টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
* এবার শিশুকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন কেনাকাটি করতে। প্রয়োজনীয় যে জিনিসপত্র শিশুর নেই, সেগুলি আগে কিনে নিন। তারপর প্রয়োজনমতো জিনিসপত্র কেনাকাটি করুন।
* নিজের সামর্থ্যর বাইরে বেরিয়ে অযথা অনেক বেশি দামি পোশাক, জুতো কিনবেন না। খুদে সন্তানের পছন্দ হলেও কিনবেন না।
* বাজেট মেপে কেনাকাটি করুন। শিশুকে বোঝান বাজেটের বাইরে আপনি বেরতে পারবেন না।
* অবশ্যই কেনাকাটি করে বাড়ি ফেরার পর হিসাব করে দেখান কত টাকা বাজেট ছিল, আর কত টাকা তার কেনাকাটিতে আপনি খরচ করেছেন।
* বাজেট মেপে কেনাকাটির পর কিছু টাকা বেঁচে থাকলে, সেই টাকায় শিশুকে চকোলেট বা তার পছন্দের কিছু কিনে দিতে পারেন। তাতে সে খুশি হবে।
ছোট থেকে বাজেট মেনে কেনাকাটি করলে খুদে সন্তানের অযথা খরচের প্রবণতা দূর হবে। যথোপযুক্তভাবে টাকাপয়সা ব্যয়ের শিক্ষা পাবে সে। মনে রাখবেন, আপনার আজকের শিক্ষাই আগামিকাল খুদেকে একজন প্রকৃত মানুষ করে তুলতে সাহায্য করবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.