সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পেনসিলের মতো সুঁচালো লাল জুতোর কথা মনে এলেই চোখে ভেসে ওঠে ১৯৫০-এর দশকে মারিলিন মনরো, এলিজাবেথ টেলরের মতো হলিউডের কিংবদন্তি অভিনেত্রীদের অর্ধ-নগ্ন আবেদনময়ী ভঙ্গি। সেই সময়ে পর্দায় তাঁদের মোহময়ী উপস্থিতি এবং ফ্যাশন অঙ্গ হিসেবে স্টিলেটো জুতোর ব্যবহার গ্ল্যামার ও যৌন আবেদনকে দাঁড়িপাল্লার এক কাঁটাতে এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল রাতারাতি। চলচ্চিত্র ও ম্যাগাজিনে স্টিলেটোকে প্রায়শই নারীত্বের কামুক ভঙ্গির সঙ্গে যুক্ত করে দেখানো হত লাগল। যা পরে আজও পুরুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন নারীরা। স্টিলেটোয় যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় যৌনতা আর নারী।
স্টিলেটো বিশ শতকের আবিষ্কার। একটি ছুঁচলো ইতালীয় ছুরির নাম থেকেই স্টিলেটো নামটি আসে। ১৯৫০ সালে যখন বিমানবাহী জাহাজের বিভিন্ন উপকরণ জুতো নির্মাণেও প্রয়োগ করা শুরু হয়, ঠিক তখনই জন্ম নেয় এই হিল। পায়ের পাতা ধরে রাখার জন্য আনা হল বিশেষ শেপ। পায়ের আঙুল ও গোড়ালিকে ধরে রাখা হল ১ থেকে ৫ ইঞ্চির মধ্যে। ডিজাইনার সালভাতোর ফেরগামো, রজার ভিভিয়ের এবং আন্দ্রে পেরুগিয়া-এই তিনজন পুরুষ ছিলেন স্টিলেটো উদ্ভাবনের নেপথ্যে। ১৮ শতকের শেষ অবধি নারী-পুরুষ নির্বিশেষেই এই জুতো পরতেন। কিন্তু এই জুতোকে বাজারখ্যাত করলেন মহিলারাই। ১৯৫০-এ প্রথম মারিলিন মনরো চার ইঞ্চি ফেরাগামো স্টিলেটো পরে অনুরাগীদের মধ্যে এর আবির্ভাব ঘটালেন। তারপর থেকে এই জুতোর খ্যাতি রাখাই দায়! এই জুতো কোমরকে পিছনের দিকে বাঁকিয়ে, নিতম্বকে উঁচু করে, যৌবনের ঔদ্ধত্যকে সামনের দিকে নিয়ে এসে আকর্ষণীয় করে তুলত নারীকে। একই সঙ্গে পায়ের পেশীগুলো টানটান হয়ে পা’কে লম্বা ও সুগঠিত করে পুরুষের মন ভিজিয়ে দিত স্টিলেটো। শুধু সে যুগেই নয়, আজও স্টিলেটো পরিহিতা নারীর সেই শরীরী হিল্লোলে ঝড় ওঠে পুরুষের মনে।
১৯৭০-এর দশকে স্টিলেটোর ব্যবহার কমলেও ১৯৮০-র দশকে ‘পাওয়ার ড্রেসিং’ আবির্ভাবের সঙ্গে আবারও ব্যাপক ভাবে ফিরে আসে এই জুতো। ১৯৯০ তে ‘সেক্স এন্ড দ্য সিটি’ নামে মার্কিন শোয়ের ৮৪টি পর্ব জুড়ে স্টিলেটোর ব্যবহার আবার এই জুতোকে মূল ধারার জীবনযাত্রার সঙ্গে জুড়ে দেয়। এরপর গোটা বিশ্ব জুড়েই দৈনন্দিন হাল ফ্যাশনের অঙ্গ হয়ে ওঠে এই জুতো।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.