Advertisement
Advertisement
AI Chatbot

প্রান্তিক মানুষের হাতে ‘বাংলায়’ এআই টুল, ‘লিগাল চ্যাটবট’ তৈরি করে স্বপ্নপূরণ বঙ্গ বিজ্ঞানীর

একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য বাংলা ভাষায় এআই-এর পাঠ্যবইও লিখছেন এই বাঙালি বিজ্ঞানী।

Bengali Scientist Prasenjit Majumder makes AI chatbot to help Rural Bengali people

অধ্যাপক প্রসেনজিৎ মজুমদার

Published by: Arpan Das
  • Posted:August 24, 2025 1:37 pm
  • Updated:August 24, 2025 1:37 pm   

স্টাফ রিপোর্টার: দিনভর অক্লান্ত পরিশ্রমের পরেও হয়তো ঠিকমতো মজুরি পাচ্ছেন না। সাহস থাকলেও কীভাবে আইনি পথে হাঁটবেন জানেন না প্রত্যন্ত গ্রামের কৃষক-শ্রমিকরা। কেউ আবার পড়শি-আত্মীয়র সঙ্গে জমি-বাড়ি নিয়ে ঝঞ্ঝাটে মামলা করার ইচ্ছা থাকলেও নানা কারণে আইনজীবীর দ্বারস্থ হতে পারছেন না।

Advertisement

এই সব প্রান্তিক মানুষ এবার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে জেনে যাবেন আইনি সমস্যার সমাধান। কোন জটিলতায় কোন মামলা করতে হবে? কোন কোন ধারায় মামলা করলে আদালতে জয় নিশ্চিত হবে? এমন হাজারো গাইডেন্স এবার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে নিজের মুঠোফোনে নিজের ভাষায় এক ক্লিকেই জেনে যাবে বাঙালি। কী করে?

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (এআই) সাহায্যে একটি যুগান্তকারী ‘লিগাল চ্যাটবট’ তৈরি করেছেন গ্রিনএআই সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড সংস্থার ডিরেক্টর তথা ধীরুভাই আম্বানি ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্সের প্রফেসর প্রসেনজিৎ মজুমদার। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিনের এই প্রাক্তনী ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউট কলকাতায় গবেষণা করার সময় থেকেই টার্গেট করেছিলেন কী করে এআই-এর সুফল সমস্ত মানুষের কাছে, বিশেষ করে প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়। যাতে ভিন ভাষার বৈচিত্রের এই দেশের যে কোনও শ্রেণির মানুষ নিজের ভাষায় চিন্তা করে, নিজের ভাষাতেই কাজ করতে পারে।

গ্রিন এআই-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুব্রত মিত্র জানালেন, “আমরা গত দেড় বছর ধরে কলকাতায় বসে গ্রিন এআই নিয়ে কাজ করে এক বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলেছি। চাইলেই বাংলায় আমরা এআই ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তুলতে পারি। আমাদের স্বপ্ন, পশ্চিমবঙ্গে জন্ম নেওয়া এই স্টার্ট আপ কোম্পানিকে গ্লোবাল করে তোলা। বাংলা ও উত্তরপূর্ব ভারতের ছেলমেয়েদের কর্মসংস্থান গড়ে তোলা।” বর্তমানে জনপ্রিয় এআই টুলগুলি বিদেশি। ব্যবহারের খরচও অনেক। মূলত ইংরেজি জানা ও অত্যাধুনিক টেকনোলজি ব্যবহার করতে পারেন, এমন মানুষই উপকৃত হন। এখানেই বদল আনছে গ্রিন এআই। এডু টেক, লিগাল টেক, ভয়েস অ্যান্ড বাইলিঙ্গুয়ালের মতো একগুচ্ছ এআই টুলে বাংলা-সহ দেশের প্রায় ২২টি আঞ্চলিক ভাষাকে দারুণভাবে ট্রেন করেছে তারা। যার ফলে নিজের মোবাইল ফোনে, হোয়াটসঅ্যাপে শুধু বাংলায় লিখে বা কথা বলেই আইন-সহ একগুচ্ছ অত্যাধুনিক চ্যাটবট আনলিমিটেড ব্যবহার করতে পারবে সবাই। খরচ নামমাত্র। এমনকী, যাঁরা গুছিয়ে লিখতে জানেন না, তাঁরাও শুধু ভয়েস মেসেজ পাঠিয়েই পেয়ে যাবেন এআই সার্ভিস।

একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য বাংলা ভাষায় এআই-এর পাঠ্যবইও লিখছেন প্রসেনজিৎবাবু। তৈরি করেছেন এআই লার্নিং কোর্সও। সেই কোর্স করানো শুরু করেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। সাম্প্রতিক নানা প্রেক্ষাপটে বাংলা ভাষা বিপন্ন হয়ে পড়ছে, বাংলাভাষী মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, এই সময় বাংলাভাষায় এআই-চর্চার পথ খুলে গেল এই কৃতী বিজ্ঞানীর হাত ধরে। মাইক্রোসফট কোপাইলট, চ্যাটজিপিটির মতো লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলের ‘রেড এআই’ পরিবেশের কতটা ক্ষতি করছে সে কথাও জানালেন অধ্যাপক। এই সব মডেল চালাতে বিপুল বিদ্যুৎ খরচ ও সার্ভার খরচ হয়। এদের জিপিইউ মেশিন উচ্চমাত্রায় তাপ নির্গমন করে। যার ফলে পরিবেশে কার্বনের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। ২০২৪ সালের মার্চে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পার্লামেন্ট ইউএআই অ্যাক্ট পাস করিয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে সতর্ক করতে ইতিমধ্যেই ছোট ছোট ডিভাইসে গ্রিন এআই মডেল চালু করেছে প্রসেনজিৎবাবুর সংস্থা। পরিবেশবান্ধব এআই-এর প্রচারে কলকাতায় সচেতনতামূলক আন্দোলনও শুরু করেছেন।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ