Advertisement
Advertisement
Artificial Intelligence

AI-কে পাল্লা দিতে পারে মানবজাতির ‘ইউনিক’ ব্রহ্মাস্ত্র! খোঁজে কলকাতার বিজ্ঞানীরা

এ বিষয়ে গবেষণা কাজে বড় ভূমিকা কলকাতার ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের।

Human uniqueness can beat Artificial Intelligence, says Kolkata scientist
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:August 5, 2025 1:18 pm
  • Updated:August 5, 2025 1:20 pm   

ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: মানবজাতির আবেগহীন যান্ত্রিক শত্রু বলে দাগিয়ে দেওয়া হয়েছে এআইকে। মানুষের সব বিশ্বাস জিতে নিয়ে তার থেকে সব গুণ, অভ্যাস শিখে তাকে পঙ্গু করে নিজেই সেই মানুষকে নাকি চালনা করার দিকে এগোচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। বিশ্বজুড়ে তাকে নিয়ে একটা আতঙ্ক ইতিমধ্যে ঘিরে ধরেছে সবাইকে। এআই নাকি সবার চাকরি খেয়ে নিতে শুরু করেছে! সম্প্রতি দেশের একটি নামকরা সংস্থা একটা কাণ্ড ঘটিয়েছে। তাদের টপ বস আর প্রশিক্ষণরত কর্মী ছাড়া মাঝের একটা বড় স্তরের কর্মীকে আর অফিস আসতে নিষেধ করে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

“শুধু আতঙ্কের নয়, এটাই বাস্তব হতে চলেছে”, কথাটা নির্লিপ্তভাবে বললেন কলকাতার ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের লিঙ্গুইস্টিক রিসার্চ ইউনিটের প্রধান ড. নীলাদ্রিশেখর দাস। তা হলে উপায়? যে উপায়ের কথা তিনি বললেন, সেটা উপায় শুধু নয়, মানবজাতির অস্তিত্ব আর তার কীর্তি অমর করে রাখার অমোঘ অস্ত্র, বলা যায় ব্রহ্মাস্ত্র। নীলাদ্রিবাবুর কথায়, “এআই যা শিখছে বা যে তথ্য পাচ্ছে, সে তো মানুষেরই দেওয়া। তাহলে প্রথমেই খুঁজে বের করতে হবে সে কী পারে না, কী সে জানে না। তবে সেটাও কঠিন, গবেষণাধর্মী একটা কাজ।” এখানেই তাঁর সংযোজন, “সেই পথে না গিয়ে বরং দেখা উচিত মানুষ যা জানে, যা সে রপ্ত করেছে, সেখানে কোনও ফাঁকি রয়ে গিয়েছে কি না। তা হলে সেই গুণকে আরও ক্ষুরধার করে তাকে ‘ইউনিক’ হতে হবে। এটাই ব্রহ্মাস্ত্র। এটাই মানবজাতিকে এআইয়ের সঙ্গে লড়াইয়ে জিতিয়ে দেবে।”

এআই কোন পথে মানুষের বিশ্বাস অনবরত জিতে নিচ্ছে, তা নিয়ে গবেষণা চলছে বিশ্বজুড়ে। কানাডার ইউনিভার্সিটি অফ নিউ ব্রান্সউইকের জে হার্বার্ট স্মিথ সেন্টারে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ড. দেবস্মিতা মুখোপাধ্যায় সম্প্রতি কলকাতায় এসেছিলেন। এআই-এর শিল্প কোন পর্যায় পৌঁছেছে তার নমুনা দেখিয়ে গেলেন এই এআই স্পেশালিস্ট। তিনি তিনটে পয়েন্ট উল্লেখ করেছেন –

১) এআই নির্ভর একটি রোবট টানা কতক্ষণ মানুষের সঙ্গে কথা বলতে পারে!
২) কতটা বাস্তবসম্মতভাবে কথা বলে! কারণ যত নির্ভুল কথা বলবে, তত বিশ্বাস বাড়বে।
৩) এআই-নির্ভর সেই রোবটের সামাজিক দায়বদ্ধতা কতটা। এই তিনটি পয়েন্টের ভিত্তিতে এআই অ্যাপ্লিকেশনকে আপডেট করা হচ্ছে প্রতি মুহূর্তে। তার সঙ্গে মিশবে ‘হিউম্যাননেস’-এর জাদু।

বিশ্বজুড়ে এই গবেষণায় এই দেশের ক্ষেত্রে অন্যতম বড় ভূমিকা নিয়েছে আইএসআই। ড. নীলাদ্রিশেখর দাস যার দায়িত্বে। এই গবেষণায় ভাষা সংক্রান্ত সহযোগিতার কাজ করছেন তাঁরা। হিউম্যাননেস কী? সেটা বোঝাতে গিয়ে একটা মজাদার গল্প শোনালেন কানাডার ওই অধ্যাপক। পরীক্ষানিরীক্ষা চলাকালীন একবার এক রোবট একজন অসুস্থ মানুষকে ‘সোশাল কম্প্যানিয়ন’ দিচ্ছিলেন। সেটাও গবেষণার একটা অংশ ছিল। তখনই ওই অসুস্থ ব্যক্তির সঙ্গে কী একটা হালকা কথা কাটাকাটির শেষে ‘সরি’ বলেছিল রোবট! সকলে চমকে ওঠে। অধ্যাপকের কথায়, “রোবটের মধ্যে এই হিউম্যান ফিল দেওয়ার কাজটাই চলছে। কোনও আলোচনা চলার সময় মানুষ কিন্তু সরাসরি কোনও কথা বলে না। ঘুরিয়েফিরিয়ে বলে। এআইকে এটাই শেখানো হচ্ছে। কোনও সোশাল কম্প্যানিয়নে এটাই হিউম্যান ফিল। সেই হিউম্যাননেস!” ঠিক এতটাই ‘ডিপ লার্নিং’ চলছে এআইয়ের। এখানেই মানুষের সেই অমোঘ অস্ত্র ‘ইউনিক’ হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন ড. দাস।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ