Advertisement
Advertisement
Durga Puja Travel

নিরিবিলিতে হারিয়ে যেতে চান? বাংলার এই অফবিট জায়গাগুলি হোক আপনার গন্তব্য

কয়েকদিনের ছুটির কথা ভেবে একেবারে মন উড়ুউড়ু?

Durga Puja Travel: Here are some offbeat places of Jungle Mahal
Published by: Sayani Sen
  • Posted:October 1, 2025 7:28 pm
  • Updated:October 1, 2025 7:28 pm   

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: পুজোর ট্রাভেল প্ল্যান একটু দেরিতে করেছেন? দার্জিলিং, ডুয়ার্স, সিকিম, ভুটান, ছত্তিশগড়, রাজস্থান, গোয়া, কাশ্মীর যাওয়ার টিকিট পাননি। এয়ার টিকিটও বেশ চড়া। অথচ পুজো শেষ হলেই কয়েকদিনের ছুটির কথা ভেবে একেবারে মন উড়ুউড়ু। কিন্তু যাবেন কোথায়? ঘুরে আসুন জঙ্গলমহলের নানা অফবিট ঠিকানায়। পুরুলিয়া থেকে ঝাড়গ্রাম। এমনকি দক্ষিণ বাঁকুড়াতেও লুকিয়ে রয়েছে অচেনা-অজানা নানা স্পট।

Advertisement

পুরুলিয়া
ঝাড়খণ্ড ছুঁয়ে থাকা জঙ্গলমহলের এই জেলা এখন বেড়ানোর একেবারে হটস্পট। সাম্প্রতিককালে দার্জিলিংয়ে যে পরিমাণ পর্যটক আসছে পুরুলিয়া ও তার সঙ্গে রীতিমত পাল্লা দিচ্ছে। মূলত অযোধ্যা পাহাড় গড় পঞ্চকোটকে ঘিরেই। কারণ এই পাহাড়ের পাকদন্ডী পথ আর বর্ষার সৌন্দর্য কালিম্পং-কার্শিয়াং-র মতনই। মেঘ যেন কটেজে ধাক্কা খায়। আর গড় পঞ্চকোটের জঙ্গল যেন ডুয়ার্স। তাহলে কি আরও অন্যরকম অ্যাডভেঞ্চার। পুরুলিয়া হোটেল ও লজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহিত লাটা বলেন, “অযোধ্যা পাহাড়ের বিভিন্ন সাইট সিয়িং এখন পূর্ণাঙ্গ পর্যটন কেন্দ্র হয়ে গিয়েছে। যা আগে অফবিট ছিল। যেমন মুরগুমা, খয়রাবেড়া। এছাড়া রাজ্যের পর্যটন বিভাগের আওতায় থাকা বিভিন্ন গাইডের তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন অফবিট সাইট সিয়িং উঠে এসেছে।”

পুরুলিয়ার কোটশিলার মুরগমা। ছবি: সুমিত বিশ্বাস।

তাই শুধু অযোধ্যা হিলটপে না থেকে মুরগুমায় কয়েকটা দিন কাটিয়ে আসা যেতে পারে। এখানে যেমন সরকারি পর্যটক আবাস রয়েছে তেমনই বেসরকারি বিনিয়োগে একাধিক কটেজ আছে। ছয় ঋতুতে যেন ছটা রূপ মুরগুমার। সেই সঙ্গে অজস্র পাহাড়ি ঝর্ণা। এবার পুজো এগিয়ে আসায় আর বৃষ্টি না থামায় পুজোর পরেও ছুটিতে ওই ঝরনার রূপ দেখলে চোখ জুড়িয়ে যাবে পর্যটকদের।

একইভাবে খয়রাবেড়ার সবুজ ঘন জঙ্গল। সঙ্গে জলাধারে নীল জলরাশি প্রকৃতির কোলে হারিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট। এখানেও রাজ্যের পর্যটন দপ্তরের লিজ প্রাপ্ত কটেজ আছে। এছাড়া বরাবাজারের ঝরনাকোচা, কংসাবতী জলাধার ছুঁয়ে মানবাজার দুই ব্লকের দুরগাডি। যেন ক্যানভাসে আঁকা ছবি। কটেজের জানলা থেকে নীল জলরাশি, পাখির ডাক l বা একাই জঙ্গলে হাঁটতে হাঁটতে হারিয়ে যাওয়া। আবার ওই নীল জলরাশিতে পা ডুবিয়ে কত কি ভেবে ফেলা যায়। এখানেও রয়েছে সরকারি পর্যটক আবাস। বান্দোয়ান থেকে ঝাড়খণ্ডের গালুডি যাওয়ার পথে দুয়ারসিনি। বনদপ্তরের যেমন কটেজ রয়েছে তেমন একটু এগিয়ে থরকাদহে রাজ্যের পর্যটন দপ্তরের লিজ প্রাপ্ত কটেজ একেবারেই জঙ্গল ঘেঁষে। এই কটেজে রাত কাটানোর অ্যাডভেঞ্চার-ই আলাদা। তেমনই রয়েছে বলরামপুরের কুমারীকানন। নির্জন জঙ্গলের মধ্যে যেন নিজেকে খুঁজে পাবেন নতুন করে। এখানে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের আওতায় থাকা সামগ্রিক অঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের অতিথি আবাস রয়েছে। একেবারে মাটির বাড়ি। খাওয়া-দাওয়াতেও মাটির ঘ্রাণ।

Muruguma
পুরুলিয়ার বলরামপুরের কুমারীকানন

বাঁকুড়া
পর্যটনে ক্রমশই এগিয়ে আসছে দক্ষিণ বাঁকুড়া। পুরুলিয়ার বান্দোয়ান থেকে কুইলাপাল হয়ে একেবারে ওই জেলার সীমানায় দক্ষিণ বাঁকুড়ার বারিকুল থানার রানিবাঁধ ব্লকের তালেবেড়া। একেবারেই অফবিট। জলধারকে ঘিরে সবুজ বন। সেই সঙ্গে বোটিং। একেবারে মন ভালো করার ঠিকানা। এখানেও রয়েছে হোটেল। প্রায় দেড় কিমি দূরে পুরুলিয়ায় সেই সঙ্গে সামনে বাঁকুড়ায়। রানিবাঁধ ব্লকের সুতান জঙ্গল থেকে সারেঙ্গার বড়দি পাহাড়। কাঁসাই ছুঁয়ে একেবারে অফবিট পর্যটন কেন্দ্র। সেই সঙ্গে রায়পুরের সবুজ দ্বীপ। এখানেও পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে কাঁসাই। এই অফবিটে রাত কাটানোর কোন সমস্যা নেই। একাধিক পর্যটক আবাস রয়েছে।

ঝাড়গ্রাম
আরেক বনমহল ঝাড়গ্রাম। জঙ্গলমহলের জেলা অথচ বীরভূমের মতো অনেকটা লালমাটি। পুরুলিয়া ও দক্ষিণ বাঁকুড়ার সমতলের সঙ্গে অনেকটাই মিল। এখানেও লুকিয়ে আছে অফবিট। কাঁকড়াঝোড়- বেলপাহাড়ি। হোমস্টে থেকে শুরু করে পর্যটক আবাসের অভাব নেই। আছে কলাবনি, সুবর্ণরেখা ছুঁয়ে হাতিবাড়ি। নিঝুম জঙ্গলে এক অন্যরকম পর্যটন এই বনমহলে। তবে সাবধানবাণী একটাই বেলপাহাড়ি-কাঁকড়াঝোড়ের অফবিটে গেলে একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। বনবিভাগের অনুমতি নিয়ে তবেই জঙ্গলে ঘোরা ভালো। কারণ এই এলাকা যে এখন রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের নয়া ল্যান্ডস্কেপ।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ