বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: শুরু হয়ে গিয়েছে পুজোর ছুটি! আর ছুটি মানেই একেবারে ব্যাগ গুছিয়ে দে ছুট! কিন্তু এবার বর্ষার খামখেয়ালির জন্য ভ্রমণপিপাসু বাঙালিকে ভুগতে হয়েছে কিছুটা। আগেভাগে ‘ভো-কাট্টা’র পরিকল্পনা সেরে ফেলা সম্ভব হয়। তাদেরই জন্য ছোট্ট টিপস। কোথায় যাব ভেবে সময় নষ্ট করে লাভ নেই। ব্যাগ গুছিয়ে ভুটান, চিন ও কাঞ্চনজঙ্ঘার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগের জন্য এবার চলুন অচেনা গন্তব্যে, কালিম্পংয়ের রিকিসুম। রডোডেনড্রন এবং ম্যাগনোলিয়ার মতো রঙিন ফুলে ভরা শান্ত স্নিগ্ধ এই পাহাড়ি গ্রাম দেবে স্বস্তির আশ্বাস।
এই অফবিট ডেস্টিনেশনটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ছয় হাজার ফুট উঁচুতে। রিকিসুম নেহাতই ছবির মতো সুন্দর একটি পাহাড়ি গ্রাম নয়। এটি পূর্ব হিমালয়ের এখনও অনাবিষ্কৃত গোপন রহস্যের প্রবেশদ্বার বলা যায়! এখানে আপনার পিছনে থাকবে নেওড়া ভ্যালির জঙ্গল, সামনে প্রসারিত সিকিম ও তিব্বত। এক ঝলকে দেখলে মনে হবেই এত নীল ক্যানভাসে আঁকা ছবির মতো সুন্দর! এই গ্রাম এখনও সেভাবে প্রচারের আলোতে উঠে আসেনি। ফলে পর্যটকদের যাতায়াত খুবই কম। ফলে নেই মানুষের কোলাহল। একেবারে শান্ত স্নিগ্ধ পরিবেশ আপনাকে আকর্ষণ করবেই।
কোথায় এই অফবিট গ্রাম?
কালিম্পং শহর থেকে রিকিসুমের দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার। পেডং থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটার। এখানে থেকে আপনি হিমালয়ের বিরাট এলাকা পেয়ে যাবেন। যেটা ছুঁয়ে আছে ভুটান, চিন ও সিকিমকে। কাঞ্চনজঙ্ঘা-সহ হিমালয়ের আরও অনেক শৃঙ্গ আপনাকে মুগ্ধ করবে। ১৯০২ সালে ব্রিটিশরা এখানে বাংলো তৈরি করেছিল। সেটি অবশ্য এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
রিকিসুমের ভিউ পয়েন্ট থেকে পাহাড়ের চূড়ায় সূর্যোদয়ে অপূর্ব আলোর খেলা আপনাকে মুগ্ধ করবে। ওই দৃশ্য উপভোগের সুযোগ টাইগার হিলেও পাবেন না। এই পাহাড়ি গ্রামটি পাখি এবং জীববৈচিত্রের জন্য বিখ্যাত। কালিম্পং-লাভা-রিশপ সার্কিটের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। এখানে থেকে সহজে ঘুরে নিতে পারবেন লাভা, পেডং এবং রিশপ। গ্রামের পাশেই বইছে তিস্তা নদী। সেখানে র্যাফটিংয়ের সুযোগ পাবেন। ইচ্ছে হলে পাহাড়ি নদীতে সাঁতরে স্নান করতে পারেন। নইলে মাছ ধরুন। সবটাই তৈরি আপনার জন্য।
কীভাবে পৌঁছবেন এই গ্রাম?
এবার আসা যাক অচেনা এই গ্রামে যাবেন কীভাবে? বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে রিকিসুমের দূরত্ব প্রায় ৯৬ কিলোমিটার। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার। শিলিগুড়ি থেকে ভাড়া গাড়িতে সাড়ে ৩ থেকে ৪ ঘন্টায় গন্তব্যে পৌঁছে যেতে পারবেন। যদি কালিম্পং শহরে নেমে পৌঁছাতে চান, তবে ১ ঘন্টা সময় লাগবে। রিকিসুমে কোন বড় হোটেল অথবা বিলাসবহুল রিসোর্ট নেই।
বর্তমানে এখানে কয়েকটি হোমস্টে গড়ে উঠেছে। সেখানে রুম বুকিং করতে হবে। থাকা-খাওয়া নিয়ে দৈনিক মাথাপিছু ভাড়া পড়বে দেড় হাজার টাকার মতো। ওই গ্রামে পৌঁছাতে আপনি এনবিটিটি ট্রাভেল সিলিউশন নামে সংস্থার সাহায্য নিতে পারেন। তাদেরও হোমস্টে রয়েছে। সংস্থার ফোন নম্বর – ৯৭৩৩৩০০৬৯৬।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.