Advertisement
Advertisement

বুঝে খান ভিটামিন!

জেনে নেওয়া যাক ভিটামিন কী এবং ওষুধের চেয়ে খাবার কেন উপকারী!

Vitamins: Type and Sources
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:July 11, 2016 5:51 pm
  • Updated:February 27, 2019 4:33 pm  

মৌশাখী বোস: শরীর দুর্বল লাগছে, একটা ভিটামিন ট্যাবলেট লিখে দেবেন?
প্রায়ই ডাক্তারের কাছে বায়না করেন অনেকে৷ অনেক সময় আবার নিজেরাই ওষুধের দোকান থেকে সরাসরি কিনে দু’-একটা ট্যাবলেট খেয়ে নেন৷
পরিণতি?
ফ্যাট দ্রবীভূত ভিটামিনের আধিক্যে শরীরে নানা সমস্যা হয়৷ শুধু বড়রাই নন, সমস্যা হয় শিশুদেরও। ভিটামিন ট্যাবলেট খাওয়ালে শিশুর মোটা হওয়ার ধাত বাড়ে, হার্টের উপর চাপ সৃষ্টি হয়৷
ভিটামিন ট্যাবলেট খেলেই সুস্থ থাকা যায়, এটা আদতে একটা ভ্রান্ত ধারণা। প্রয়োজনীয় ভিটামিন দৈনন্দিন খাবারের মধ্য দিয়ে শরীরে পৌঁছলে তবেই উপকার মেলে৷
আর, ভিটামিনের সব উৎস রয়েছে বাঙালির রোজকার খাবারেই৷
সে কথায় আসার আগে একটু জেনে নেওয়া যাক ভিটামিন কী এবং ওষুধের চেয়ে খাবার কেন উপকারী!

Advertisement

ভিটামিন কী?
ভিটামিন এক রকমের অরগানিক যৌগ, যার স্বল্প পরিমাণই মানবদেহের সাধারণ মেটাবলিজম অব্যাহত রাখে৷ দৈনন্দিন খাদ্যদ্রব্য ও সূর্যরশ্মি থেকে আমরা এই যৌগ পাই৷ ভিটামিন সাধারণত দু’রকমের৷
ফ্যাটে দ্রবণীয় ভিটামিন: এই ভিটামিন মানবদেহের ফ্যাট টিস্যুর মধ্যে বা লিভারেও থাকতে পারে৷ ভিটামিন A, D, E এবং K হল ফ্যাট সলিউবল ভিটামিন৷
জলে দ্রবণীয় ভিটামিন: এই ভিটামিন মানবদেহে জমা থাকে না৷ এগুলি প্রস্রাবের মাধ্যমে দেহের বাইরে নির্গত হয়ে যায়৷ যেমন- ভিটামিন B এবং C৷

vitamin1_web

ট্যাবলেট না খাবার– কোনটা ভাল?
প্রস্রাবের সঙ্গে দেহের বাইরে নির্গত হয়ে যায় বলে ভিটামিন B এবং C-এর অতিরিক্ত মাত্রা তেমন সমস্যা সৃষ্টি করে না।
কিন্তু ভিটামিন A, D, E এবং K ফ্যাট সলিউবল হওয়ায় এর আধিক্যে বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়৷ যেমন,
• প্রচুর বমি হওয়া (ভিটামিন D-এর আধিক্য)
• অসহ্য মাথা যন্ত্রণা (ভিটামিন A-এর আধিক্য)
• ডিহাইড্রেশন অর্থাৎ শরীরে জলের পরিমাণ কমে যাওয়া (ভিটামিন D-এর আধিক্য)
• রক্ত জমাট বাঁধা (ভিটামিন K-এর আধিক্য)

শরীরে ভিটামিনের মাত্রা:
ব্যক্তিবিশেষে ভিটামিনের চাহিদা আলাদা হয়৷ সেটা মাথায় রেখে প্রাকৃতিক উৎস থেকেই ভিটামিন গ্রহণ করা উচিত৷ তবে, যাঁদের সেই সুযোগ কম থাকে, তাঁদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ভিটামিন ট্যাবলেট কিংবা টনিক ব্যবহার করা উচিত৷ যদিও কোনও কিছুরই বেশি ব্যবহার শরীরের পক্ষে ভাল নয়- সেদিকে যেন খেয়াল থাকে!

ভিটামিনের ধরন, উৎস এবং অভাবে অসুখ:

• ভিটামিন A:

vitaminA_web
ফ্যাট সলিউবল৷ কাজ দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখা৷
উৎস- লিভার, কর্ড লিভার অয়েল, গাজর, ব্রকোলি, রাঙা আলু, মাখন, চিজ, কুমড়ো, ডিম, দুধ৷
অসুখ- ভিটামিন A-র অভাবে রাত কানা রোগ, ক্যারাটো ম্যালেশিয়া এবং ড্রাই কর্নিয়া হয়৷

• ভিটামিন B:

vitaminB_web
ওয়াটার সলিউবল৷ ভিটামিন B সাধারণত B1, B2, B3, B6, B9 এবং B12- এই কটি ভাগে বিভক্ত৷ যা নার্ভ ঠিক রাখে ও রক্ত উৎপাদনে সহায়তা করে৷
উৎস- মাছ (টুনা, স্যালমন), মুরগি, গরু, কলা, ব্রকোলি, দুধ, দই, বিনস, বাদাম, হোল গ্রেইন মাশরুম, সূর্যমুখী দানা, শাকপাতা, গাজর৷
অসুখ- ভিটামিন B-র অভাবে মূলত বেরি বেরি রোগ, স্নায়ুর অসুখ, অ্যানিমিয়া এবং হার্টের সমস্যা হতে পারে৷

• ভিটামিন C:

vitaminC_web
জলে দ্রবণীয়৷ মানবদেহের দাঁত ও রক্তে কাজে লাগে৷
উৎস- লেবু, সবুজ শাক-সবজি, গোলমরিচ, ব্রকোলি, বেরি, টক জাতীয় ফল, টমেটো, শুঁটি জাতীয় সবজি৷
অসুখ- এর অভাবে অ্যানিমিয়া ও দাঁতে স্কার্ভি রোগ হয়৷

• ভিটামিন D:

vitaminD_web
ফ্যাট সলিউবল৷ মানবদেহের হাড় তৈরিতে সাহায্য করে৷
উৎস- তৈলাক্ত মাছ, ডিম, গরুর যকৃৎ, মাশরুম, দুধ, কর্ড লিভার তেল, মার্জারিন, কমলালেবু৷ এছাড়া ভিটামিন D-র মূল উৎস হল সূর্যরশ্মি৷
অসুখ- এর অভাবে বাচ্চাদের রিকেট রোগ হয়। এছাড়া প্রেগন্যান্সির সময় হবু মা অস্টিও ম্যালেশিয়া বা হাড় ভঙ্গুর হওয়ার রোগে ভোগেন৷

• ভিটামিন E:

vitaminEweb
ফ্যাটে দ্রবণীয়৷ রক্ত তৈরিতে কাজে লাগে৷
উৎস- আমন্ড, দুধ, ডিম, অ্যাভোগাডো, বাদাম, সবুজ শাকপাতা, গম, ভেজিটেবিল অয়েল৷
অসুখ- এর অভাবে সদ্যোজাত শিশুদের হিমোলাইটিক অ্যানিমিয়া হতে পারে৷

• ভিটামিন K:

vitaminK_web
ফ্যাট সলিউবল৷ রক্তে এটি বিশেষ কার্যকর ভূমিকা নেয়৷
উৎস- সবুজ শাক-সবজি, অ্যাভোগাডো, পার্সলে পাতা৷
অসুখ- এর অভাবে ব্লিডিং ডাইথেসিস হতে পারে৷

আরও জানতে কলম্বিয়া এশিয়া হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. দীপঙ্কর সরকারকে ফোন করুন এই নম্বরে- 9831179171

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ