বিডিও ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বৃদ্ধ। নিজস্ব চিত্র
শান্তনু কর: এলাহি আয়োজন বাড়িতে। গ্রামের মানুষজন তো হাজিরই। নিমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে আছেন এলাকার বিডিও, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর আধিকারিকরাও। বয়সের সেঞ্চুরি আগেই পার করেছেন নৃপেন্দ্র বর্মণ। এবার ঘটা করে পালন করা হল তাঁর অন্নপ্রাশন। বৃদ্ধের নাত-নাতনি থেকে বাড়ির লোকজন এই আয়োজন করেছেন। হবে নাই বা কেন? দাদুর যে ফের দুধের দাঁত গজিয়েছে! বৃদ্ধের অন্নপ্রাশনের অনুষ্ঠান ঘিরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে কোচবিহারের হলদিবাড়ি গ্রামে।
কোচবিহারের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বড় হলদিবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা নৃপেন্দ্র বর্মণ। ওই গ্রাম তথা জেলার প্রবীণতম মানুষ হয়তো তিনিই। গ্রামের সকলের কাছেই তিনি এখন দাদু বলে পরিচিত। ভোটার কার্ডের হিসেব ধরলে তাঁর বয়স এখন ১০২ বছর। যদিও তিনি দাবি করেন, তাঁর বয়স এখন ১১৩ বছর। তিন প্রজন্ম ওই বাড়িতেই থাকে। পরিবারের তাঁর তিন ছেলে চার মেয়ে। নাতি-নাতনির সংখ্যা ৩৪। নাতি-নাতনিরা দাদুকে নিয়ে সবসময় মশগুল থাকেন। বয়সের ভারে, প্রাকৃতিক নিয়মে আগেই বৃদ্ধের অনেক দাঁত পড়ে গিয়েছেন। হাতে গোনা কিছু দাঁতও প্রায় ক্ষয়ে গিয়েছে।
সম্প্রতি নাতি-নাতনিরা লক্ষ্য করেন দাদুর ফের দাঁত গজাচ্ছে। মুখের মাড়ি ফুঁড়ে ধবধবে সাদা তিনটি ‘দুধের দাত’ দেখা গিয়েছে। আর তারপরেই নতুন করে দাদুকে নিয়ে নাতি-নাতনির মধ্যে উৎসাহ দেখা যায়। আহ্লাদে আটখানা হয় নাতি-নাতনি থেকে পরিবারের সদস্যরা। ঠিক হয় দাদুর অন্নপ্রাশন করা হবে। আর তা হবে বেশ জাঁকজমক করে। শুক্রবার সেই অন্নপ্রাশন অনুষ্ঠান ঘিরে হইহই কাণ্ড দেখা গেল গ্রামে। এলাকার মানুষজন তো উপস্থিত ছিলেনই। নিমন্ত্রণরক্ষা করতে এসেছিলেন হলদিবাড়ির বিডিও রেঞ্জি লামু ভুটিয়া, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর আধিকারিকরা। সকলেই নৃপেন্দ্র বর্মণের দীর্ঘায়ু কামনা করেছেন।
বৃদ্ধ নৃপেন্দ্র বর্মণ এখনও শরীরে যথেষ্ঠ শক্তসমর্থ। একাই হেঁটেচলে বেড়াতে পারেন। একসময় তাঁর বাড়ি ছিল অধুনা বাংলাদেশের রঙপুর জেলার মুক্তির হাটের ভোগডাবুড়ি গ্রামে। ১৯৭২ সালে তিনি ভারতে এসেছিলেন। তখন থেকেই তিনি ওই এলাকায় বসবাস করছেন তিনি। বৃদ্ধ বয়সে এমন অন্নপ্রাশন অনুষ্ঠানে তিনি যথেষ্ঠ লজ্জা পেয়েছেন। গাল ভরা হাসি দেখা গিয়েছে নৃপেনের মুখে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.