সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একেই বলে মনের জোর। যা থাকলে অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলা যায়। আর সেটাই করে দেখালেন আন্দামানের এক যুবক। ২৮ দিন সমুদ্রে ভেসে থেকে প্রাণ বাঁচালেন তিনি। যদিও নিজের সঙ্গীর প্রাণ বাঁচাতে পারলেন না অমৃত কুজুর। মাসখানেক আগে অমৃতের সঙ্গে নৌকায় পাড়ি দিয়েছিলেন সঙ্গী দিব্যরঞ্জন। আন্দামানের শহিদ দ্বীপের বাসিন্দা অমৃত ও দিব্যরঞ্জন।
সমুদ্রে ভাসমান জাহাজে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস জোগান দিয়ে আয়ের উদ্দেশে নৌকা ভাসিয়েছিলেন দু’জনে মিলে। কিন্তু মাঝসমুদ্রে তাঁদের নৌকা ভয়ঙ্কর ঝড়ের মুখে পড়ে। পাল ছিঁড়ে যাওয়া নৌকা এদিক-ওদিক দিকশূন্যভাবে ভেসে যেতে থাকে। নৌকায় জল ঢুকে সমস্ত মাল ভেসে যায়। ৪৯ বছরের অমৃত বলেছেন, ‘‘ঈশ্বরের দয়ায় ফিরতে পেরেছি। বন্ধুকে বাঁচাতে পারলাম না।এটাই যা বড় আফসোস।’’ অমৃতকে উদ্ধারের পরই তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে ভরতি করা হয়।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রোগী সুস্থ রয়েছেন। তবে আতঙ্কের রেশ কাটতে কয়েকদিন সময় লাগবে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, দুর্যোগ কাটার পর ওড়িশার খিরিশাহি গ্রামের উপকূলে এসে ঠেকে অমৃতের নৌকা। গ্রামবাসীরা যখন তাঁকে উদ্ধার করেন তখন অমৃত কথা বলার মতো অবস্থাও ছিলেন না। কোনওরকমে বেঁচে ছিলেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ওড়িশা উপকূল থেকে ১৩০০ কিমি দূরে নৌকা ভাসিয়েছিলেন অমৃত। ২৮ সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু করেছিলেন অমৃত ও তাঁর বন্ধু দিব্যরঞ্জন। শুরুতে সব কিছু স্বাভাবিক ছিল। এর পর ঝড়ের মুখে পড়ে তাঁর নৌকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নৌকায় পাঁচ লাখ টাকার জিনিসপত্র মজুত করেছিলেন অমৃত। সবই জলের তোড়ে ভেসে যায়। ‘ওয়্যারলেস সংযোগ’ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সমস্যা আরও বেড়ে যায়। মায়ানমারের একটি নৌবাহিনীর জাহাজ তাঁদের খাবার ও জল দিয়ে সাহায্য করেছিল। কিন্তু তারপর তীরে ফেরার সময় আরও একটি ঝড়ের মুখে পড়ে তাঁদের নৌকা। এরপর উদ্দেশ্যহীনভাবে ভেসে যায় অমৃতের নৌকা। বৃষ্টির জল ঢুকতে শুরু করে নৌকায়। মনের জোরে ২৮ দিন ধরে সমুদ্রে ভাসতে থাকেন অমৃত। কিন্তু প্রতিকূল পরিস্থিতির সঙ্গে এঁটে উঠতে পারেননি তাঁর বন্ধু। অমৃত শুধুমাত্র বৃষ্টির জল খেয়েই বেঁচে ছিলেন। কিন্তু সমুদ্রে মৃত্যু হয় তাঁর বন্ধুর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.