Advertisement
Advertisement
Lakshmi Puja 2025

‘লক্ষ্মী’ মেয়ে! নারী সুরক্ষায় নিজের কন্যাকেই দেবীরূপে পুজো শিক্ষক দম্পতির

স্থানীয়রা এই কাজকে কুর্নিশ জানিয়েছেন।

'Lakshmi' girl! Teacher couple worships their daughter as a goddess to protect women

শিশুকন্যাকে লক্ষ্মীরূপে পুজো। নিজস্ব চিত্র

Published by: Suhrid Das
  • Posted:October 6, 2025 5:56 pm
  • Updated:October 6, 2025 5:56 pm   

সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: লক্ষ্মীপুজোর আরাধনায় মেতেছে বঙ্গ। বাড়িতে বাড়িতে আয়োজন করা হয়েছে পুজোর। নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের নাঘাটার বাগচী পরিবারেও ধুমধাম করে আয়োজন করা হয়েছে পুজোর। তবে এবারের এই পুজো অন্য রকমের। পরিবারের একরত্তি কন্যা সন্তানকে লক্ষ্মীরূপে পুজো করা হল ওই বাড়িতে। কিন্তু কী কারণে এমন ব্যতিক্রমী পুজোর আয়োজন? শিশু নির্যাতন ও ‘ধর্ষণ’ রুখতে সমাজকে বার্তা দিতে ওই পদক্ষেপ বলে পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে।

Advertisement

দেশের বিভিন্ন জায়গায় ধর্ষণ, নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে চলেছে। সেসব দেখে আতঙ্কিত পরিবার। শিশু নির্যাতন ও ‘ধর্ষণ’ রুখতে এবার এই পদক্ষেপ করল নদিয়ার ওই পরিবার। নদিয়ার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কৃষ্ণগঞ্জ থানার মাজদিয়ার নাঘাটায় ভাজনঘাট হাই স্কুলের শিক্ষক অর্জুন বাগচী। তাঁর ছয়বছরের শিশুকন্যা গোটা বাড়ি মাথায় তুলে রাখে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে অর্জুনবাবু মাঝেমধ্যেই উদ্বিগ্ন। শিশু নির্যাতন ও নারী ধর্ষণের মতো অসামাজিক ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সেজন্য মা লক্ষ্মীর কাছে প্রার্থনা জানালেন শিক্ষক দম্পতি।

এদিন একরত্তিকে লক্ষ্মীরূপে সাজানো হয়। এরপর ছয় বছরের কন্যাকে চেয়ারে বসানো হয়। নির্দিষ্ট সময় পুরোহিত ওই বাড়িতে উপস্থিত হন। ছোট্ট অরিত্রিকাকে পুজো করা হয়। শিশুর মা ঝুমা বাগচী বলেন, কন্যাসন্তানকে প্রতিটি পরিবারেই লক্ষ্মী হিসাবে গণ্য করা হয়। এছাড়াও নারীকে মাতৃশক্তির আধার রূপে মানা হয়। মূলত সেই কারণেই মা লক্ষ্মীর মৃন্ময়ী মূর্তির বদলে ঘরের মেয়েকেই লক্ষ্মীরূপে আরাধনা করার সিদ্ধান্ত। শিক্ষক অরুণ বাগচী বলেন, নিজেদের মেয়েকে ভগবানরূপে আরাধনা করার মধ্যে দিয়ে সমাজ থেকে শিশু নির্যাতন ও নারী নির্যাতনের মতো অমানবিক ঘটনা চিরতরের জন্য বন্ধ করার আহ্বান জানানো হচ্ছে। মেয়ের জন্মের পর থেকে পরিবারের অনেক উন্নতি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এখনও গ্রাম-বাংলার বহু জায়গায় বাস্তব জীবনে মেয়েদের পিছন সারিতে ফেলে রাখার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায় কিছু সংখ্যক মানুষজনদের মধ্যে। কন্যা সন্তানদের প্রতি এই ভ্রান্ত ধারণা ও অসামাজিক মনোভাবকে মুছে দিতেই নিজের একরত্তি কন্যাসন্তানকে মাতৃরূপে আরাধনা করার সিদ্ধান্ত। নারীদের প্রতি সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। শিক্ষক দম্পতির বাড়িতে একরত্তি লক্ষ্মীর পুজো স্বচক্ষে দেখতে ভিড় জমান প্রতিবেশীরা। সকলেই এমন কাজকে কুর্নিশ জানিয়েছেন।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ